ত্রিপুরায় হোটেলে আটকে থাকা ২৩ জনকে মুক্ত করতে বুধবার সকালেই আগরতলা রওনা হচ্ছেন ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক ও ঋতব্রত
বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরের দিনই
বৃহস্পতিবার ত্রিপুরায় যাচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আইপ্যাকের কর্মীদের যেভাবে আটকে রেখেছে বিজেপির বিপ্লব দেবের সরকার, সেই ঘটনাকে সামনে রেখে ত্রিপুরায় দলকে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের পাশাপাশি অভিষেকও আগরতলা অভিযানে যাচ্ছেন। যদিও গত দু সপ্তাহ আগেই শোনা গিয়েছিল, অগস্টে ত্রিপুরায় যেতে পারেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, শহরের প্রাণ কেন্দ্রে একটি পার্টি অফিস উদ্বোধন করার কথা তার। কিন্তু রবিবার রাত থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত আইপ্যাকের প্রতিনিধিদের যেভাবে করোনার অজুহাত দেখিয়ে হোটেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে, তাতে নির্দিষ্ট দিনের আগেই ত্রিপুরায় যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছে অভিষেকের জন্য।
এই বিষয়ে তৃণমূলের ত্রিপুরা প্রদেশ সভাপতি আশিসলাল সিং বলেছেন, আগামীকাল আমাদের নেতারা আসছেন। তাঁরা এসে এখানে আটক আইপ্যাক কর্মীদের মুক্তির বিষয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলবেন।
অবশ্য কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, আইপ্যাকের মতো একটি বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের মুক্ত করতে তৃণমূল কংগ্রেস কেন সরাসরি এগিয়ে এল। এ প্রসঙ্গে আশিসবাবু বলেন, আইপ্যাকের টিমকে আমরাই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তারপর তাঁদের বিপাকে ফেলেছে বিজেপি । তাই তাঁদের উদ্ধার করার দায়িত্বও আমাদের।
এই কারণেই আইপ্যাকের কর্মীদের আটক করার প্রতিবাদে মঙ্গলবারই সিপাহীজলা, ধর্মনগর-সহ ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়াগায় মঙ্গলবার বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেয় তৃণমূল। বুধবার বাংলা থেকে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল পৌঁছানোর পর বিক্ষোভ আরও তীব্র হবে বলে জানিয়েছে ত্রিপুরা তৃণমূল।
রবিবার রাত থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত পেশাদার সংস্থা আইপ্যাকের টিমকে আগরতলার হোটেলে আটক করে রাখা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হলেও, ত্রিপুরা পুলিশের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি সারাদিন। রাতে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার পুলিশ সুপার মানিকলাল দাস বলেন, রবিবার রাতে প্রশাসনের কাছে খবর আসে আগরতলার উডল্যান্ড পার্ক হোটেলে ২০-২২ জন বহিরাগত রয়েছেন। কোভিড পরিস্থিতিতে একসঙ্গে এতজন বহিরাগত একই হোটেলে থাকায় তাঁদের কোভিড টেস্ট করানো হয়েছে। যতক্ষণ না রিপোর্ট আসছে ততক্ষণ তাঁরা ওখানেই থাকবেন।
পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ওই দলে বাংলা, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, রাজস্থান এমনকি জম্মু কাশ্মীরেরও বাসিন্দা রয়েছেন।
যদিও আইপ্যাকের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের টিম পুলিশকে স্পষ্ট জানায় যে তাঁরা সমীক্ষার কাজে ত্রিপুরায় এসেছেন। তা ছাড়া সম্প্রতি এই টিম ত্রিপুরার বহু এলাকায় ঘুরে অসংখ্য মানুষের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তখন কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
অভিষেক দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরেই জানিয়েছিলেন, দেশের কোণায় কোণায় তৃণমূলের সংগঠন বিস্তার তাঁর লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় সংগঠনের ভীত শক্ত করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে আইপ্যাক কর্মীদের আটক করার ঘটনা নিয়ে জোরদার আন্দোলনে নামতে চাইছেন অভিষেক । এরই পাশাপাশি কারও মতে, ত্রিপুরায় যেভাবে আইপ্যাক কর্মীদের হোটেলবন্দি করেছে সেখানকার বিজেপি সরকার, সেই ঘটনায় দলীয় কর্মীদের আত্মবিশ্বাস ও মনোবল বাড়াতে , স্বয়ং অভিষেক ত্রিপুরা যাচ্ছেন ।কারণ যাই হোক না কেন, অভিষেকের উপস্থিতি যে পুরো বিষয়টিকে অন্য মাত্রা দেবে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ।






































































































































