শান্তনুর সাসপেনশনের পর সংসদে এবার ‘অলআউট অ্যাটাক’-এর পথে হাঁটছে তৃণমূল

0
3

শান্তনুর সাসপেনশনের পর সংসদীয় রণনীতি পরিবর্তন করতে চলেছে তৃণমূল(TMC)। এবার দলের ফর্মুলা- ‘অলআউট অ্যাটাক’।

অর্থাৎ, রাজনীতির ময়দানে বিজেপিকে এক ইঞ্চিও জমি না ছেড়ে পেগাসাস, পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, ভ্যাকসিন এবং করোনা(coronavirus) মোকাবিলা ইস্যুতে সংসদের ভেতরে ও বাইরে মোদি সরকারকে(Modi government) কোণঠাসা করতে আরও সক্রিয় হবেন তৃণমূল সাংসদরা। প্রয়োজনে অন্য বিরোধী দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানীতে ঝড় তুলবে তৃণমূল।

পেগাসাস নিয়ে সংসদের অন্দরে বিরোধিতা করায় বাদল অধিবেশনের বাকি দিনগুলোর জন্য রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয় তৃণমূল সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেনকে(Santanu Sen)। বৃহস্পতিবার সংসদে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব(Ashwini Vaishnav) পেগাসাস(pegasus) ইস্যুতে ‘মিথ্যা’ বিবৃতি দিচ্ছিলেন। সেই সময় নাটকীয় ভাবে তাঁর হাত থেকে বিবৃতির কপি ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে উড়িয়ে দিয়েছিলেন শান্তনু। তাঁর কথায়, “একজন মন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে মিথ্যা বলছেন তা সহ্য করা যায়না। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। তাই মন্ত্রীর হাত থেকে কাগজ ছিনিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিলাম।” আর বৃহস্পতিবারের এই ঘটনার জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল সংসদ। শুক্রবার সকালে রাজ্যসভা পরিচালন বিধি ২৫৬ অনুযায়ী সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ভি মুরালিধরণ সাসপেনশন প্রস্তাব পেশ করেছিলেন রাজ্যসভায়। তাতেই মঞ্জুরি দিয়ে শান্তনুকে বাদল অধিবেশনের বাকি সময়ের জন্য সাসপেন্ড করেছেন চেয়ারম্যান এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু।

নাইডু এদিন বলেন, “গতকাল রাজ্যসভায় যা ঘটেছে তা নিন্দনীয়, অসাংবিধানিক। এই ঘটনা কখনোই কাম্য নয়। সংসদে প্রতিনিধিরা আসেন মানুষের কথা বলতে মানুষের জন্য কাজ আদায় করতে। সেখানে সংসদীয় রীতি-নীতি মেনে চলতে হয়। শুধুমাত্র বিশৃঙ্খলা তৈরি করায় কাজ হতে পারেনা। তাই সরকার ও বিরোধী পক্ষের উচিত সংসদ কীভাবে সুষ্ঠুভাবে চলবে তার বন্দোবস্ত করা। সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছি বিরোধীদের সঙ্গে বসে এ ব্যাপারে কথা বলুক।”

এদিকে শান্তনুর সাসপেনশনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, মুখ্য সচেতক শুখেন্দু শেখর রায় রাজ্যসভায় দাঁড়িয়েই চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছেন। তৃণমূলের অভিযোগ, গতকাল শান্তনু সেনের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন। অশ্লীল গালি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী। শান্তনুর বক্তব্য, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাত থেকে কাগজ ছিনিয়ে নেওয়া বা ছিঁড়ে উড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা প্রথম নয় । কিন্তু, আমাকে অভব্য ভাষায় গালাগালি করা হয়েছে। এমনকী শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। মন্ত্রী যখন মিথ্যা ভাষণ দিচ্ছিলেন তখন তার হাত থেকে কাগজ কেড়ে নিয়েছি। গণতন্ত্রে কণ্ঠরোধ করা হলে প্রতিবাদ জানাতে হয় এই ভাবেই। কিন্তু একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যে ভাষায় আমাকে আক্রমণ করেছেন তার কি হবে?” এরপর শান্তনু বলেন, “পুরো বিষয়ে দল বিবৃতি দিয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার কিছু বলার নেই। দলগতভাবে রাজনৈতিকভাবে এই সিদ্ধান্তের মোকাবিলা করা হবে।”

আরও পড়ুন:বৈষ্ণবের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ মহুয়ার

এদিন শান্তনুর সাসপেনশনের পর হরদীপ সিংকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক শুখেন্দু শেখর রায় জানিয়েছেন, “এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে শান্তনু জাতীয় নায়ক হয়ে উঠলেন। উনি নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহর মুখোশ টেনে খুলে দিয়েছেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংসদ হলো বিরোধীদের প্রতিবাদ জানানোর জায়গা। মুখ খোলার জায়গা। সেখানেই যদি বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হয় তাহলে প্রতিবাদ জানানো হবে কীভাবে!”