রেড রোডের মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় গ্রেফতার চালক

0
3

বিধি নিষেধ শিথিল হওয়ার পর প্রথম যেদিন বাসের চাকা গড়াল, সেদিনই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকে রেড রোড। প্রথমে একটি বাইকে ধাক্কা মারে বাসটি, তারপর পাঁচিলে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। ফোর্ট উইলিয়ামের সামনে যেখানে রেড রোড বন্ধ, সেখানে আইল্যান্ড দিয়ে পার্ক স্ট্রিটের দিকে ঘুরতে গিয়ে হটাৎ ব্রেক ফেল করে। আর তাতেই দুর্ঘটনা।ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বাইক আরোহীর। বাসের ২০-২৫ জন যাত্রীও আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে সেদিন ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র।
শেষপর্যন্ত সেই বাস দুর্ঘটনার (Bus Accident) চালককে গ্রেফতার করল পুলিশ । নাম সৈয়দ ইবরার হোসেন। কামারহাটি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে।
ধৃত চালক জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পরও বেশ কিছুক্ষণ বাসেই বসেছিলেন ওই চালক। তাঁকে দেখে মত্ত বলে মনে হয়েছিল প্রত্যক্ষদর্শীদের। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছিল। শনিবার কামারহাটি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। বাস চালক আদৌ সেদিন মত্ত ছিলেন কিনা, তা জানার চেষ্টা চলছে।
আসলে করোনার জেরে চাকা ঘোরেনি প্রায় দেড়-দু’মাস। রোদে, বৃষ্টিতে এত দিন ধরে রাস্তায় পড়ে ছিল বাসগুলি। যার ফলে অধিকাংশেরই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়াটা আশ্চর্যের কিছু নয়। সরকারি বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পরে সেই সমস্ত বাস এ বার পথে নামতে শুরু করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এত দিন পরে সব ক’টি বাস আদৌ পথে নামার মতো অবস্থায় আছে কি?
বৃহস্পতিবার রেড রোডের ভয়াবহ দুর্ঘটনার পরে এই প্রশ্নই তুলেছেন যাত্রীদের অনেকে। যদিও মেটিয়াবুরুজ-হাওড়া রুটের ওই মিনিবাস ঠিক কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিল, তা স্পষ্ট নয়। তবে বাসমালিকেরাও মানছেন যে, গত দু’মাস ধরে বসে থাকায় প্রায় সমস্ত বাসেরই মেরামতি ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করানো দরকার। অধিকাংশ বাসের ক্ষেত্রেই ব্রেক প্যাডেল শক্ত হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে ক্লাচ বা গিয়ার বক্সের সমস্যা— নানা রকম বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। সেই কারণে রাস্তায় নামার আগে ব্রেক ও ক্লাচের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে নেওয়াটা খুব জরুরি।
ওই দুর্ঘটনার জন্য চালককে গাফিলতি ছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করছে পুলিশ। দুর্ঘটনার পর থেকেই ঘাতক গাড়ি চালক পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। শনিবার রাত এগারোটা নাগাদ আউটপোস্ট থেকে পরিচালক গ্রেফতার করা হয় । তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪(২) ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করেছে ময়দান থানার পুলিশ। আজ রবিবার ধৃতকে ব্যাঙ্কশাল কোর্ট তোলা হবে ।