শ্রীকৃষ্ণের উপর কার জোর বেশি যশোদা না দেবকী? এই বিতর্ক চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। আজও সে প্রশ্ন দেখা দেয়। দেখা দেয় পশ্চিম মেদিনীপুরের পিউয়ের জীবনে। একরত্তি শিশুকন্যাকে পথের ধার থেকে তুলে এনেছিলেন ঘাটালের (Ghatal) অজব নগরের বাসিন্দা দেবু দোলই (Debu Dolui)। সালটা ২০০৮। ঘাটাল ময়রা পুকুর লাগোয়া রাজ্য সড়কের ধারে শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনে দেখেন, গাছের নীচে পড়ে রয়েছে শিশুকন্যা। সাত পাঁচ না ভেবে তাকে কোলে নিয়ে সোজা বাড়ি চলে আসেন তিনি।
বাড়ি ফিরে স্ত্রী ছবির কোলে শিশুটিকে তুলে দেন। সেই থেকেই শিশুটিকে বুকে আগলে মানুষ করেছেন তাঁরা। প্রথম কিছু দিন শিশুটির বাবা-মায়ের খোঁজ চলে। কিন্তু সন্ধান না পেয়ে মেয়েটিকে নিজের মতো করে বড় করতে থাকেন দোলই দম্পতি। নাম রাখা হয় পিউ (Piu)।
তৈরি হয় সব প্রশাসনিক নথি।স্কুলে যাওয়া শুরু করে পিউ। প্রায় ১২ বছর পর হঠাৎ একদিন ঘাটাল থানার খড়ার বাসিন্দা রকি সামন্ত (Rocy Samanta) ও তাঁর স্ত্রী ইতু সামন্ত (Etu Samanta) হাজির হন দেবুর বাড়িতে। তাঁদের দাবি, পিউ তাঁদের সন্তান। সে যখন ছোট, তখন তাঁর ‘মা’ ইতুর মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। রাস্তায় মেয়েটিকে ফেলে পালিয়ে যান তিনি। এতদিনে তাঁরা নাকি তাঁদের সন্তানের খোঁজ পেয়েছেন। এই খবরে দেবু ও ছবির মাথায় বাজ ভেঙে পড়ে। এতদিনে যাকে কন্যা স্নেহে পালন করে এসেছেন, তাকে ছেড়ে দিতে হবে?
আরও পড়ুন-অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, মাঝ সমুদ্রে দাউ দাউ করে জ্বলছে বিধ্বংসী আগুন
আইনি টানাপোড়েনে পিউয়ের ঠাঁই হয়েছে মেদিনীপুরের (Midnapur) সরকারি হোমে। দোলই পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েছে। কষ্ট পাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। সকলের দাবি, হোম থেকে দেবু-ছবির কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক পিউকে।
এদিকে ইতুর দাবি, জন্মদাত্রী হিসেবে, পিউ তাঁর কাছে থাকবে। আর দুই মা থাকার সত্ত্বেও পিউ এখন রয়েছে সরকারি হোমে!