আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিজ্ঞান-সম্মান বাঙালি কন্যার, ৫৪ বছরের ইতিহাসে প্রথম ভারতীয়

0
3

ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ কোয়ান্টাম মলিকিউলার সায়েন্স (IAQMS)-এর দেওয়া বিজ্ঞান সম্মান পেলেন বাঙালি কন্যা। কোয়ান্টাম রসায়নবিদ্যায় শ্রীরামপুরের দেবশ্রী ঘোষের (Debashree Ghosh) উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে এই সম্মান। IAQMS-এর দেওয়া বিজ্ঞান সম্মানের পুরস্কারপ্রাপকদের তালিকায় রয়েছে বহু নোবেলজয়ীর নাম। পুরস্কারের ৫৪ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও ভারতীয় পেলেন এই সম্মান।

দেবশ্রী ঘোষের গবেষণা করেন বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজে প্রয়োজনীয় মানবদেহের বিভিন্ন প্রোটিন এবং মেলানিনের মতো জৈব অণু এবং ডিএনে নিয়ে। মানবদেহে সূর্যের আলো ঢোকার পর কীভাবে সেগুলির আকার, আকৃতি, আচরণ বদলে যায়, তারা সূর্যের আলোকে কী পরিমাণে গ্রহণ করে, আলোর সঙ্গে তাদের কী কী ধরনের বিক্রিয়া হয় তা বুঝতে কোয়ান্টাম মেকানিক্স ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মেশিন-লার্নিং পদ্ধতির ব্যবহারই দেবশ্রীর ‘অস্ত্র’।

দেবশ্রীর বলেন, ছোটবেলা থেকেই তাঁর আলো ও বিভিন্ন পদার্থের মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে আগ্রহ ছিল। আলোর সঙ্গে তাদের সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর সেগুলি মানবদেহে কতটা বদলায় তা বোঝার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। যাতে আগামিদিনে বিভিন্ন জৈবনিক ক্রিয়া ও তার ত্রুটিবিচ্যুতিগুলি বোঝা সহজ হয়। তিনি আরও জানিয়েছেন, তিনি ত্বকের মেলানিন নিয়ে কাজ করছেন। সমস্তটাই তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে। অনেক সানস্ক্রিন কাজ না করার প্রসঙ্গে নিয়ে দেবশ্রী বলেছেন, “দেখেছি, এখন যে সানস্ক্রিনগুলি বাজারে রয়েছে তার কয়েকটি তেমন কার্যকরী হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না, তা আমার গবেষণা বুঝতে সাহায্য করেছে অনেকটাই।”

আরও পড়ুন-পুলওয়ামায় সেনা অভিযানে খতম ৫ জঙ্গি, শহিদ এক জওয়ান

দেবশ্রী শ্রীরামপুরের স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর ১৯৯৯ সালে রসায়নে অনার্স নিয়ে দেবশ্রী ভর্তি হন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে। তার পর করেন বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স থেকে তিনি এমএসসি করেন। ২০০৫ সালে আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে যান। এর পর ২০০৯ থেকে ২০১২, পোস্ট ডক্টরাল করেন আমেরিকারই সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভারতে ফিরে তাঁর প্রথম চাকরি পুনের সিএসআইআর-এর ন্যাশনাল কেমিক্যাল ল্যাবরেটরিতে। এরপর ২০১৭ সালে দেবশ্রী ঘোষ কলকাতার ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স -এর স্কুল অব কেমিক্যাল সায়েন্সের অ্যাসোসিয়েট অধ্যাপক হন।