লকডাউনে কর্মহীন দৃষ্টিহীনদের পাশে আলোর দিশারী হয়ে দাঁড়ালেন অন্ধ শিক্ষকরা

0
1

লকডাউনে কর্মহীন, দৃষ্টিহীনদের পাশে দাঁড়ালেন তাঁরা। নিজেদের সর্বস্ব নিয়ে, সবটুকু সঞ্চয় নিয়ে দাঁড়ালেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। অথচ তাঁরা নিজেরাও দৃষ্টিহীন। সমস্ত শারীরিক প্রতিবন্ধকতার বাধাকে দূরে সরিয়ে তারা আজ রাজ্যের কোনো না কোনো স্কুল, কলেজ অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা। নিজেদের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্য কর্মক্ষেত্রে এবং ব্যবহারিক জীবনে নানা সময় নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সেই সমস্ত বাধা কাটিয়ে নিজেদের অধিকার রক্ষার্থে, এবং অবশ্যই শিক্ষা-স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গড়ে তুলেছেন অল বেঙ্গল ব্লাইন্ড টিচারস অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক -অধ্যাপক গৌতম মাজি জানালেন, বছর দুই আগে গড়ে ওঠা এটিই দৃষ্টিহীন শিক্ষকদের একমাত্র সংগঠন। তবে দায়িত্ববান নাগরিক হিসেবেও তাঁরা পাশ কাটিয়ে যেতে চান না সামাজিক কর্তব্যকে। তাই সংগঠনের পক্ষ থেকে অতিমারিরর এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে থাকা, কাজ হারানো ১৩০ জন অসহায় দৃষ্টিহীন ভাইবোনের ব্যাঙ্ক-অ্যাকাউন্টে ১০০০ টাকা করে দেওয়া হলো। ট্রেনে-বাসে ফেরি করে, গান গেয়ে কিংবা অন্যভাবে উপার্জন বন্ধ হওয়ায় এরা এবং এদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলো আজ সত্যিই বিপন্ন। নানা সংস্থা থেকে বাঁচার রসদ কিছু মিললেও প্রয়োজনীয় নগদ টাকার বড়োই অভাব। অনুকম্পা কিংবা অনুগ্রহবশত নয়। মানুষ হয়ে মানুষের পাশে থাকার সদিচ্ছাতেই এই উদ্যোগ। শুধু বিপন্ন দৃষ্টিহীনদের জন্যই নয়, বৃহত্তর সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণতহবিলেও দিতে চলেছে সংগৃহীত অর্থের একটা অংশ। তবে সংগঠনের বাইরে বিভিন্ন স্তরের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন অনেক মানুষ মহতী এই উদ্যোগে ভালোবেসে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর অর্থ সংগ্রহ ও প্রদান দুটোই সম্পন্ন হয়েছে অনলাইনে দৃষ্টিহীনদের হাতেই। আলোর দিশারী মহীয়সী নারী হেলেন কেলারের শুভ জন্মদিনে তাঁর। প্রতি সংগঠনের পক্ষ থেকে এটাই তো যথাযোগ্য শ্রদ্ধার্ঘ্য!