প্রধানমন্ত্রীর দফতর ফিরিয়ে দিল, সুশান্তর হাত ধরলেন মন্ত্রী বীরবাহা

0
1

সুশান্ত বেজ। লালগড়ের দরিদ্র দিনমজুর পরিবারের এই ছেলেটি গত চার মাস ধরে পায়ের দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত। কিন্তু হতদরিদ্র পরিবারের ক্ষমতা নেই ভালোভাবে চিকিৎসা করিয়ে ছেলেকে সুস্থ করে তোলে। চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে কোনও সাহায্য আসেনি। অথচ চিকিৎসকরা বলছেন সুশান্তর পায়ে অবিলম্বে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। আর তার জন্য প্রয়োজন প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা। শেষ পর্যন্ত সুশান্তর কথা মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার কানে যায়। শুনেই তিনি ছুটে আসেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।

তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এই গোটা ঘটনাটি তাঁর ফেসবুক পেজে ব্যাখ্যা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতর যে কতটা অমানবিক, দেশের হতদরিদ্র জনগণ যে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাছে কতটা অপাংক্তেয়, অপ্রয়োজনীয়’ তা এই একটিমাত্র ঘটনা থেকেই পরিষ্কার। পাশাপাশি ফের একবার উজ্জ্বল হয়ে উঠল রাজ্য সরকারের মানবিকতা। জনদরদী মানসিকতা। সঙ্গে থাকার বার্তা । পাশে থাকার আশ্বাস।

স্থানীয় কাঁটাপাহাড়ি বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠ এর দশম শ্রেণীর ছাত্র সুশান্ত বেজ বেজ। সুশান্ত ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য টাকা চেয়ে মাস দুয়েক আগে ঝাড়গ্রামের সাংসদ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে আবেদন করেছিলেন। স্থানীয় বিজেপি নেতাদের মাধ্যমে খবরটি শুনে এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে একটি পয়সাও সাহায্য আসেনি। এদিকে সুশান্ত শরীর ক্রমশই খারাপ হচ্ছিল। তাই ধারদেনা করে বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে গিয়েছিল সুশান্তর পরিবার। চার মাস ধরে সেখানে থেকে ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রায় নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় সুশান্তর পরিবারের। সুশান্তর বাবা বললেন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে কোন টাকা আসেনি। এদিকে দিনদিন ছেলের পা ফুলে যাচ্ছে। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। বাবা হয়ে ছেলের এই কষ্ট সহ্য করা যায় না। চিকিৎসকরা বলেছেন যত দ্রুত সম্ভব অপারেশন করতে হবে। কিন্তু টাকা কোথায়? তখন ভাবছিলাম যদি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কোনও সাহায্য আসে।

কোনও এক শুভানুধ্যায়ীর মাধ্যমে সুশান্তর বাবার এই যন্ত্রণার কথা পৌঁছে গিয়েছিল মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার কানে। আর শোনা মাত্রই তিনি ছুটে গিয়েছেন লালগড়ের সিজুয়া গ্রামে অসুস্থ ছাত্রটির বাড়িতে। জানা গিয়েছে চিকিৎসা করাতে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। আর এই ক্যান্সার আক্রান্ত ছাত্রটির পাশে গিয়ে দাঁড়ালেন মন্ত্রী বীরবাহা। তিনি আশ্বাস দিলেন সুশান্তর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে তার চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সবরকম ব্যবস্থা করবেন। সম্প্রতি লালগড়ে গিয়ে সিজুয়া গ্রামের বাসিন্দা ওই বেজ পরিবারের বাড়িতে যান বীরবাহা। সুশান্তর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। কথা বলেন। তাদের কতটা কী প্রয়োজন, কী কী সমস্যা সবটুকুই নিজে শুনে জেনে বুঝে নিলেন। এবং মন্ত্রী কথা দিলেন, সুশান্তর চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজন সব করবেন। ছাত্রটিকে যত শীঘ্র সম্ভব সুস্থ করে বাড়ি ফিরিয়ে আনবেন।