মিঠুনকে ফের দীর্ঘ জেরা মানিকতলা থানার

0
3

ভোটের প্রচারে উস্কানির অভিযোগে মিঠুনকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করল কলকাতা পুলিশ। সোমবার এই ইস্যুতে অভিনেতা তথা বিজেপি নেতাকে দ্বিতীয়বার জিজ্ঞাসাবাদ করল মানিকতলা থানার পুলিশ।

এদিন সন্ধে ৬টা থেকে ১ ঘণ্টা ভার্চুয়ালি জিজ্ঞাসাবাদ করে মানিকতলা থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে , জিজ্ঞাসাবাদে এখনও সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছে পুলিশ।
বিজেপির প্রচারে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের অভিযোগে মিঠুন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে মানিকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বাংলা সিটিজেন্স ফোরামের মৃত্যুঞ্জয় পাল, আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী। মিঠুন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে মানিকতলা থানায় চারটি ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এর আগে, গত ১৬ তারিখ বিতর্কিত মন্তব্য মামলায় প্রথমবার মিঠুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ। ভার্চুয়ালি প্রায় ৪০ মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অভিনেতাকে। তাঁর উদ্দেশে ১২টি প্রশ্ন রেখেছিলেন তদন্তকারীরা। মিঠুন চক্রবর্তীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছিল ।
কাকতালীয়ভাবে, সেদিন, অর্থাৎ ১৬ জুন ছিল অভিনেতার জন্মদিন।

সোমবার সন্ধ্যায় ফের মানিকতলা থানার পুলিশ মিঠুনের কাছে শহরের একের পর এক থানা এলাকার ভোট পরবর্তী হিংসার পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানতে চায় , তার এই সংলাপ বিজেপি কর্মী সমর্থকদের প্রভাবিত করেছে বলেই শহরের বুকে ভোট পরবর্তী সময়ে একের পর এক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। এবং কর্মী সমর্থকদের মুখোমুখি সেই সংলাপ ঘুরে বেড়িয়েছে। তার মতো একজন প্রবীণ, অভিজ্ঞ অভিনেতা কেন এই ধরনের সংলাপ উচ্চারণ করার আগে দুবার ভাবলেন না , যে তার এই সংলাপগুলি শহরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করতে পারে ।
যদিও এদিন মিঠুন ফের এগুলি শুধুই সিনেমার সংলাপ বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
এর বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে অবশ্য এফআইআর খারিজের দাবিতে হাইকোর্টে যান মিঠুন চক্রবর্তী। হাইকোর্টে খারিজ হয় সেই আবেদন। ভার্চুয়াল জিজ্ঞাসাবাদে হাজির থাকতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বলিউড তারকা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্রিগেড সমাবেশে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।
ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।

ভোটের সময় রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিজেপির হয়ে প্রচার করেন তিনি। অনেক রোড শো ও সভা-সমাবেশ করেন তিনি। তারকার মেগা প্রচারে বিভিন্ন সভায় তাঁর মুখে শোনা যায় সিনেমার জনপ্রিয় সংলাপ।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের প্রচারের সময় মিঠুন হিংসায় প্ররোচনা দিয়েছেন, এই অভিযোগ তুলে তাঁর বিরুদ্ধে মানিকতলা থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল বাংলা সিটিজেন্স ফোরাম।

মানিকতলা থানায় দায়ের করা এফআইআরে অভিযোগ করা হয় যে, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি হয়ে ভোটের প্রচারে ব্রিগেড সমাবেশে ‘মারবো এখানে লাশ পড়বে শশ্মানে’, ‘এক ছোবলেই ছবি’-র মতো সংলাপ ব্যবহার করেছেন।

এফআইআরে অভিযোগ করা হয়েছে, এই সংলাপগুলি রাজ্যে ভোট-পরবর্তী হিংসার একটি কারণ। মিঠুন চক্রবর্তী শিয়ালদা আদালতে অতিরিক্ত প্রধান বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে তাঁর বিরুদ্ধে মামলায় প্রক্রিয়া খারিজের আর্জি জানান হাইকোর্টে।

মিঠুন চক্রবর্তী হাইকোর্টে তাঁর আবেদনে বলেছিলেন যে, ভোটের প্রচারের সময় তিনি যা বলেছিলেন, সেগুলি সিনেমার সংলাপমাত্র। তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তিনি এ ব্যাপারে কোনওভাবেই সম্পর্কিত নন।

কিন্তু, মিঠুনের সেই আবেদন খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্ট। অভিনেতাকে পুলিশি তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। তবে সশরীরে হাজির হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছিল হাইকোর্ট।