চাল নিয়ে ধোঁকাবাজি,ব্রি হয়ে যাচ্ছে মিনিকেট; প্রতারিত ক্রেতারা

0
2

খায়রুল আলম , ঢাকা

আপনি খাচ্ছেন ব্রি- ২৮ ও ২৯ জাতের ধানের চাল; কিন্তু বাজারে গিয়ে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে নামি দামী অন্য নামের চাল কিনছেন। সহজেই প্রতারিত হচ্ছেন আপনি এবং লাভবান হচ্ছেন এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে , দেশের উদ্ভাবিত ব্রি- ২৮ ও ২৯ ( BRRi-28/29 ) জাতের ধানের চাল অটো হাস্কিং মিলে ছাঁটাই হয়ে বস্তায় ঢোকার পরই হয়ে যাচ্ছে মিনিকেট ( Miniket Rice)। ফলে দেশে উদ্ভাবিত ধানের জাত যেমন ব্র্যান্ড ভ্যালু (Brand value )হারাচ্ছে, তেমনি প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা ( Consumer )।

তবে শিগগিরই এ অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় ( Food & Agriculture Ministry )বাংলাদেশে উদ্ভাবিত স্ব স্ব জাতের ধানের নাম চালের বস্তায় উল্লেখ করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে। চালের বস্তায় ধানের গুণাগুণসহ বিস্তারিত তথ্য থাকবে।

এতে দেশে উদ্ভাবিত ধানের জাতের ব্র্যান্ডিং (Branding) হবে। পাশাপাশি ভোক্তাও জানবেন কোন জাতের ধানের চালের ভাত খাচ্ছেন। খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে একটি জরিপ পরিচালিত হয়েছে। একাধিক সেমিনারে ( Seminar ) বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, বেশকিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।

ব্রি- ২৮ ও ২৯ সহ বিভিন্ন জাতের ধানের চাল ছাঁটাই করে মিনিকেট, নাজিরশাইলসহ Nazirsail Rice নানা নামে বাজারজাত করা হচ্ছে। কিন্তু মিনিকেট, নাজিরশাইল জাতের ধানের আবাদ আমাদের দেশে হয় না।

এছাড়া চাল ছাঁটাই করতে গিয়ে অনেক বেশি ছাঁটাই করা হয়, এতে পুষ্টির মানও কমে যায়। ভিন্ন ভিন্ন নামে এসব চাল বাজারজাত করায় নিজেদের উদ্ভাবিত ধানের জাতের নামও জানতে পারছেন না দেশের মানুষ।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের ১৫টি জেলায় এ বিষয়ে একটি জরিপ চালানো হয়।

এতে দেখা যায়, ব্রি- ২৮ ও ২৯ সহ বিভিন্ন জাতের ধানের চাল ছাঁটাই করে মিনিকেট, নাজিরশাইলসহ নানা নামে বাজারজাত করা হচ্ছে। কিন্তু মিনিকেট, নাজিরশাইল জাতের ধানের আবাদ আমাদের দেশে হয় না। এছাড়া চাল ছাঁটাই করতে গিয়ে অনেক বেশি ছাঁটাই করা হয়, এতে পুষ্টির মানও কমে যায়।

ভিন্ন ভিন্ন নামে এসব চাল বাজারজাত করায় নিজেদের উদ্ভাবিত ধানের জাতের নামও জানতে পারছেন না দেশের মানুষ। ছাঁটাই করা ব্রি- ২৮ ও ২৯ জাতের ধানের চাল স্থানীয় পর্যায়ে মিনিকেট নামে পরিচিত।

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর (Dr. Abdur Razzak) বলেন , বাজারে সম্ভবত ব্রি- ২৮ ও ২৯ জাতের ধানের চাল থেকেই মিনিকেট চাল উৎপাদন হচ্ছে। অথচ এসব জাতের ট্রেডমার্ক (Trademark) চালের বস্তার গায়ে আমরা দেখতে পাই না। এ বিষয়ে কিছু করা যায় কি না, তা বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানাই।’

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) Bangladesh Rice Research Institute মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর এ বিষয়ে বলেন, আমরাও অনেক দিন ধরে বলে আসছি, চালের বস্তায় ব্রি উদ্ভাবিত স্ব স্ব জাতের ধানের নাম উল্লেখ করা হোক।

পরীক্ষামূলক কিছু কিছু জায়গায় আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। অনেক এলাকার চালকল মালিকদের সঙ্গে আলাপ করে এটি করা হচ্ছে। তবে মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এলে দেশজুড়ে কাজটি করা সম্ভব।