রাজ্যে ঝড়ের গতিতে কমছে বিয়ে, এপ্রিল থেকেই নিম্নমুখী চার হাত এক হওয়া

0
5

কলকাতায় বিয়ে কমছে। রাজ্যের চিত্রও একই। গত এপ্রিল থেকে হু হু করে কমছে বিয়ের সংখ্যা৷ সরকারি তথ্যেই বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে৷

কারণ যাই হোক, বাস্তব এটাই, কলকাতা তথা রাজ্যে সাত পাকে বাঁধা পড়ার ঘটনা হ্রাস পেয়েছে৷ প্রশ্ন উঠেছে, এই বঙ্গের তরুণ-তরুণীরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে আর কি রাজি নন? না’কি, ‘লিভ-ইন’-এর প্রবনতা রাজ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে ?

করোনা তথা লকডাউনের জেরে ২০২০ থেকেই এ রাজ্যের বিয়ের অনুষ্ঠানে কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। ৫০ জনের বেশি নিমন্ত্রণ করা যাবে না, আত্মীয় স্বজন আমন্ত্রণের সংখ্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেই চার হাত এক করতে হবে ইত্যাদি ৷ যদিও পরে বেশ কিছু ছাড় দেওয়া হয়। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ে ফের জারি হয়েছে একই বিধিনিষেধ৷ সম্ভবত এই কারণেই কলকাতায় বিয়ের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

রাজ্যের ম্যারেজ রেজিস্ট্রার অফিসের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকেই কলকাতা এবং রাজ্যে বিবাহের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। ওই তথ্য থেকেই জানা যাচ্ছে, ২০২১-এর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় ২৮ হাজার বিয়ে হয়েছে। কিন্তু এপ্রিল থেকে এই সংখ্যা দ্রুত নেমে দাঁড়িয়েছে ৩,২৮৭-এ। গত ১ জানুয়ারি থেকে ১০ জুন পর্যন্ত বিয়ের সংখ্যা ৭,২৫৭। সরকারি এই পরিসংখ্যান প্রমান করছে রাজ্যে ঠিক কতখানি কমেছে বিয়ের সংখ্যা।

আরও পড়ুন-লোকাল ট্রেন চালাতে রাজ্যকে চিঠি রেলের, কর্মীদের টিকাকরণে জোর মেট্রোর

সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, বিয়ে করতে যাওয়া সব দম্পতিই নিজেদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিনটিতে কাছের মানুষদের পাশে পেতে চান। সেটা যতক্ষণ না সম্ভব হচ্ছে, ততক্ষণ অপেক্ষা করতে তাঁরা রাজি৷ কলকাতার একাধিক ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের বক্তব্য, ২০২০-এর নভেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত যত দম্পতি বিয়ের জন্য নাম নথিভুক্ত করেছেন, তা অন্যান্য বছরের তুলনায় মাত্র ১০ শতাংশ। অল বেঙ্গল ম্যারেজ অফিসার্স অর্গানাইজেশনের জেনারেল সেক্রেটারি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “চলতি বছরের এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে করোনা সংক্রমণ বাড়ার জেরেই রাজ্যজুড়ে বিয়ের সংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকটা কমেছে। বছরের প্রথম দিকের সঙ্গে তুলনা করলে বর্তমানে নাম নথিভুক্তকরণের সংখ্যা ১০ শতাংশেরও কম৷ রেজিস্ট্রি বিয়ের আইন বলছে, বিয়ের ১ মাস আগেই নাম নথিভুক্ত করতে হয় রেজিস্ট্রারের অফিসে। সেই সংখ্যা ইদানিং অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে৷

সমাজবিজ্ঞানীরা অবশ্য পাশাপাশি বলছেন,শুধুই সংক্রমণ নয়, বিয়ের সংখ্যা কমে যাওয়ায় আরও একাধিক কারণ থাকতে পারে৷ গুরুত্ব দিয়েই দেখা দরকার এই রাজ্যে ‘লিভ-ইন’-এর প্রবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে কি’না !