প্রবল চাপের মুখে পড়ে অবশেষে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন ঘোষণা মোদির

0
3

মোদি সরকারের ভ্যাকসিন নীতি নিয়ে বারবার প্রশ্ন তোলা হয়েছিল বিরোধীদের তরফে। কেন একটা শ্রেণীর মানুষকে টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন কিনতে হবে কেন্দ্রের কাছে এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলে দেশের শীর্ষ আদালতও। প্রবল চাপের মুখে পড়ে অবশেষে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একই সঙ্গে করোনা পরিস্থিতিতে যাতে দেশের গরীব মানুষের অন্নের অভাব না হয় তার জন্য প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনায় দেশের ৮০ কোটি মানুষকে আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হলো প্রধানমন্ত্রীর তরফে।

সোমবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ ভার্চুয়ালি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই দেশের ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন তিনি। পাশাপাশি ঢালাও প্রশংসা করেন দেশের বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত কর্মীদের। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব ভেবেছিল ভারত কী ভাবে সামলাবে করোনা পরিস্থিতি? এত জনসংখ্যা। কিন্তু আমাদের বিজ্ঞানীরা দেখিয়ে দিয়েছেন, বিশ্বের বড় বড় দেশের মতোই ভারতও পারে টিকা তৈরি করতে। কোভিড ভ্যাকসিন হল রক্ষা কবচ। আমাদের বিজ্ঞানীরা কম সময়ে টিকা তৈরি করতে পারবেন, আমাদের বিশ্বাস ছিল।’ এরপরই টিকাকরণ নীতি নিয়ে ভারত সরকারের নয়া গাইডলাইনের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিকাকরণের যে ২৫ শতাংশ দায়িত্ব রাজ্যের কাছে ছিল তাও কেন্দ্রই দেখবে এবার। এই ব্যবস্থা দুই সপ্তাহের মধ্যে চালু হবে। দেশের কোনও রাজ্যকে ভ্যাকসিনের জন্য কোনও খরচ করতে হবে না৷ কেউ যদি ফ্রি ভ্যাকসিন না চান, তিনি প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন নিতে পারেন। বেসরকারি হাসপাতালগুলি ভ্যাকসিনের দামের উপর দেড়শ টাকা সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে।’ একইসঙ্গে তিনি জানান, ‘আগামী ২১ জুন থেকে দেশের সব নাগরিককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেবে কেন্দ্র।’

আরও পড়ুন:মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেত্রী, তৃণমূলে সেকেন্ডম্যান নেই: অভিষেক 

এছাড়াও এদিন প্রধানমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ‘আগের বছরে যখন করোনার জন্য লকডাউন শুরু করা হয়েছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনায় ৮০ কোটি মানুষের ফ্রি রেশন ব্যবস্থা শুরু করা হয়েছিল। এবছরও দ্বিতীয় ঢেউয়ে সেই যোজনাকে আরও বাড়িয়ে নভেম্বর মাস পর্যন্ত করা হলো। এই সময়কাল পর্যন্ত দেশের ৮০ কোটি গরিব মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হবে। যাতে দেশবাসী অভুক্ত না থাকেন।’

তবে প্রধানমন্ত্রী বিনামূল্যে ভ্যাকসিন ঘোষণাকে পুরোপুরি চাপের মুখে নত হওয়া হিসেবেই দেখছে রাজনৈতিক মহল। তার কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের ভ্যাকসিন নীতি মেনে যেভাবে ভ্যাকসিনেশনের কাজ শুরু হয়েছে তা দীর্ঘমেয়াদী। এভাবে ভ্যাক্সিনেশন চললে তৃতীয় ঢেউ দেশে আছড়ে পড়বে এ আশঙ্কা করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। একদিকে গুজব অন্যদিকে টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন নিতেও নারাজ ছিলেন দেশের বহু মানুষ। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত প্রশ্ন তুলেছিল দেশের একটা শ্রেণীর মানুষের জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিন আর একটা শ্রেণীর জন্য কেন টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন কিনতে হবে? টাকা দিয়ে ভ্যাকসিনের তীব্র বিরোধিতা করে দেশের একাধিক রাজ্য সরকারও। প্রবল চাপের মুখে পড়ে অবশেষে সরকারের এই সিদ্ধান্ত বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

Advt