দেশের প্রধান বিচারপতি একাধিক আইনি প্রশ্ন তোলায় CBI- এর পরবর্তী প্রধানের দৌড় থেকে ছিটকে গেলেন মোদি-শাহের দুই ‘ঘনিষ্ঠ’ প্রার্থী ৷ প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা পুরোপুরি আইনি পথ মেনে CBI-এর প্রধান নির্বাচনের পক্ষে মতপ্রকাশ করাতেই প্রধান হওয়ার দৌড়ে আর থাকতে পারলেন না মোদি সরকারের ‘পছন্দের’ বলে পরিচিত দুই প্রার্থী রাকেশ আস্থানা এবং যোগেশচন্দ্র মোদি। ফলে পরবর্তী CBI প্রধান পদে CISF -এর ডিজি সুবোধকুমার জয়সওয়ালের নিযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল ৷
রাকেশ আস্থানা এবং যোগেশচন্দ্র মোদি, CBI-প্রধান পদের দৌড়ে থাকা এই দুই প্রার্থীকে নিয়ে অতীতে একাধিক বিতর্ক তৈরি হয়েছিলো। একাধিক আইনি প্রতিবন্ধকতার কারণেই এই দুই প্রার্থী এখনই CBI প্রধান হতে পারবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রামানা।
সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরিকে নিয়ে গঠিত বিশেষ নির্বাচন কমিটি টানা দেড় ঘন্টা বৈঠক করেন৷ আর ওই বৈঠকেই আস্থানা এবং যোগেশকে CBI-প্রধান করার বিষয়ে আপত্তি জানান প্রধান বিচারপতি। এ ব্যাপারে শীর্ষ আদালতের একটি রায়েরও উল্লেখ করে তিনি৷ বলেন, চাকরির মেয়াদ ৬ মাস বাকি থাকতে কোনও সরকারি আমলাকে পুলিশ প্রধানের দায়িত্বে বসানো বেআইনি৷
আস্থানা এখন BSF প্রধান হিসেবে কর্মরত । আগামী ৩১ আগস্ট ওই পদ থেকে অবসর নেওয়ার কথা তাঁর। পাশাপাশি, NIA- এর প্রধান যোগেশচন্দ্র মোদির অবসর আগামী ৩১ মে। তাঁদের নিয়োগের বিরুদ্ধে মত দেন অধীর চৌধুরিও। ৩ সদস্যের নিয়োগ কমিটির ২ জন আস্থানা এবং যোগেশের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করায় মোদি-শাহ ঘনিষ্ঠ দু’জনই ছিটকে গিয়েছেন৷
সরকারি আমলা হিসেবে রাকেশ আস্থানা এবং যোগেশচন্দ্র মোদি দু’জনেই একাধিক বিতর্কে জড়িয়েছেন। CBI-এর বিশেষ অধিকর্তা থাকাকালীন তৎকালীন CBI প্রধান অলোক বর্মার সঙ্গে বিরোধ হয় আস্থানার। আস্থানার বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তোলেন বর্মা। পাল্টা বর্মার বিরুদ্ধেও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ আনেন আস্থানা। এর পর বর্মাকে অপসারণ করে কেন্দ্র। পরবর্তী কালে আস্থানাকে BSF প্রধান করা হয়।
বিতর্কিত আমলা হিসেবে পরিচিত ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গার তদন্তের দায়িত্বে থাকা যোগেশচন্দ্র মোদিও। গুজরাত দাঙ্গায় নরেন্দ্র মোদিকে ক্লিনচিট দিয়েছিলেন তিনি। গুজরাতের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নেতা হরেন পাণ্ড্যর খুনের মামলার দায়িত্বেও ছিলেন যোগেশ। গুজরাত দাঙ্গার তদন্তে মোদির বিরুদ্ধে বয়ান দিয়েছিলেন পান্ড্য। ২০০৩ সালে খুন হয়েছিলেন হরেন। রাজনৈতিক কারণেই তাঁকে খুন হতে হয়েছে বলে সেইসময় অভিযোগ করে হরেনের পরিবার। যোগেশের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়াকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগও তুলেছিলেন তাঁরা।