এ যেন উলটপুরাণ! ভারতে (India) যেদিন কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজের (second jab) ব্যবধান বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করার সিদ্ধান্ত হল, সেদিনই আবার খোদ ব্রিটেনে (UK) ওই ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজের ব্যবধান ১২ সপ্তাহ থেকে কমে হল ৮ সপ্তাহ! বাস্তব হল, ঠিক সময়ে দ্বিতীয় ডোজের পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের (vaccine) জোগান দিতে না পেরেই কিন্তু তৃতীয়বারের জন্য দ্বিতীয় ডোজের মেয়াদ বাড়াতে বাধ্য হয়েছে মোদি সরকার। যদিও মুখে তা স্বীকার করছেন না কোনও সরকারি কর্তাই। বলা হচ্ছে, কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্যই কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার মেয়াদ ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের বদলে করা হচ্ছে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠছে, যদি টিকার কার্যকারিতা বাড়ার প্রশ্নেই ব্যবধান বৃদ্ধি হয়, তাহলে তা এতদিন হয়নি কেন? এতদিন পর্যন্ত যারা ৪ সপ্তাহ অথবা ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের ব্যবধানে কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে নিয়েছেন তাঁরা এখন কী করবেন? যদিও কার্যকারিতা বাড়ানোর যু্ক্তি সামনে এনে মোদি সরকার যে ভ্যাকসিন অরাজকতার চিত্র ঢাকতে চাইছে তা পরিস্কার। দ্বিতীয় ডোজের পর্যাপ্ত জোগান না থাকা সত্ত্বেও ১ মে থেকে ৪৫ বছরের কম বয়সীদের টিকাকরণের ঘোষণায় বুমেরাং হয়েছে। বহু রাজ্যে অপ্রতুল ভ্যাকসিনের কারণে তা শুরুই করা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে মুখ বাঁচাতেই দ্বিতীয় ডোজের মেয়াদ বাড়ানো হল কিনা সেই সন্দেহ জোরালো হচ্ছে সর্বস্তরে।
এদিকে ব্রিটিশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজের ব্যবধান ১২ সপ্তাহ থেকে কমিয়ে ৮ সপ্তাহ করা হবে। আর এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যে যুক্তি দিয়েছেন তা ভারতের অবস্থানের ঠিক উল্টো। মোদি সরকার যখন টিকার জোগান দিতে না পেরে কার্যকারিতার যুক্তিকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে দ্বিতীয় ডোজের মেয়াদ বাড়াচ্ছে, তখন সংক্রমণ কমাতে দ্রুত টিকাকরণের স্বার্থে মেয়াদ কমিয়ে ৮ সপ্তাহ করার ঘোষণা করেছে জনসন সরকার। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, করোনার অতি সংক্রামক B.1.617.2 প্রজাতি থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে দ্রুত টিকাকরণ জরুরি। তাই ৫০ বছরের বেশি বয়সী ও সংক্রমণপ্রবণ মানুষদের জরুরি ভিত্তিতে টিকার দুটি ডোজ দেওয়ার কাজ শেষ করতেই হবে। টিকাকরণের এই লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখেই দ্বিতীয় ডোজ ৮ সপ্তাহের মধ্যে সেরে ফেলতে চায় ব্রিটেন।
আরও পড়ুন: করোনা সামলাতে আগামী সপ্তাহে বাজারে আসছে ডিআরডিও তৈরি ওষুধ ২ ডিজি