দিল্লি-রাজ্যে দূরত্ব বাড়ছে! বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতাদের জন্য আলাদা অফিস

0
4

‘ফাটল’ আরও চওড়া হচ্ছে৷ বিজেপি-র পার্টি অফিসেও এবার কেন্দ্র- রাজ্য ভাগাভাগি !

ভোট শেষ হলেও হেস্টিংসে চালু করা নির্বাচনী দফতর বন্ধ করছে না বিজেপি (BJP)৷ গেরুয়া সূত্রের খবর, দিল্লির নেতাদের পৃথক পার্টি অফিসের বন্দোবস্ত হবে সেখানে। আর বাংলার নেতারা যথারীতি বসবেন ৬ মুরলীধর সেন লেনের পুরোনো রাজ্য দপ্তরেই৷

বিজেপির অন্দরের খবর, হেস্টিংসে নির্বাচনী দফতরের পার্টি অফিসের ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে ৫ লক্ষের কাছাকাছি টাকা খরচ হয়। ভোট মিটলেও সেই টাকা ‘অপচয়’ বন্ধ করছে না দল৷ হেস্টিংসের দফতর চালু রেখে সেখানে দিল্লির নেতাদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা হচ্ছে৷ এর কারন ব্যাখ্যা করে রাজ্য বিজেপির একাধিক নেতার বক্তব্য, “আমরা কেন্দ্রীয় শাসন থেকে মুক্ত হতে চাই। ভোটে ভিন রাজ্যের নেতাদের খবরদারিতে লাগামা টানা উচিত ছিলো। তা হয়নি৷ এবার সময় এসেছে সতর্কতামূলক দূরত্ব বজায় রাখার৷ তাই আমরা পুরোনো রাজ্য দপ্তরেই বসব। ভিন রাজ্যের নেতাদের জন্য তো থাকছে হেস্টিংসের নির্বাচনী দফতর৷”

এর পরেই রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে, “তাহলে কি বিজেপির কেন্দ্র ও রাজ্য নেতাদের মধ্যে দূরত্ব কমছেই না?”

আরও পড়ুন-নন্দীগ্রামে গিয়ে ফের প্রশাসনকে তোপ ধনকড়ের, অতৃপ্ত আত্মা: পাল্টা কুণাল

ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে রাজ্য বিজেপির বেশিরভাগ নেতাই চটে আছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেনন, অমিত মালব্য, শিবপ্রকাশদের উপর। তাঁদের অকারন, অপ্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপেই দল ভোটে ভুল পথে চলেছে দল৷ তারই ফলশ্রুতি, এই ফলাফল৷ বাংলা দখল করতে এবার ঝাঁপিয়েছিলেন টিম- অমিত শাহ। গ্রাম বাংলায় ভোটের কৌশল সাজাতে ভিন রাজ্যের হিন্দিভাষী নেতাদের জোয়ার তৈরি করে দিল্লি৷ যারা বাংলার রাজনীতি কিছুই জানেন না, বাংলা ভাষা জানেন না, তাঁদের উপরই ভরসা করে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব৷ এবং ভরাডুবি হয়৷

ওদিকে, ভোটের আগেই মুরলীধর সেন লেনের রাজ্য দপ্তরে ভিনরাজ্যের এত নেতার বসার জায়গা না হওয়ায় হেস্টিংসে একটি বহুতলের চারটি তলা ভাড়া নিয়েছিল পদ্ম শিবির। সেই অফিস এবার ব্যবহার করবে কলকাতায় আসা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা৷ দলের কাঠামো অনুযায়ী কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা আগামীদিনেও কলকাতায় আসবেন। তাঁদের জন্যই হেস্টিংসের নির্বাচনী দপ্তর খোলা রাখার সিদ্ধান্ত বলে দলীয় সূত্রে খবর। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) বলেছেন, “মুরলীধর সেন লেনের পার্টি অফিসটি ছোট৷ তাই হেস্টিংসের অফিসে কিছু দফতর পাঠানো হতে পারে।”

রাজ্য নেতাদের অনেকেরই অভিমত, কৈলাস, অরবিন্দ মেনন, অমিত মালব্য এবং শিবপ্রকাশরাই বাংলার নেতাদের থেকে নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন। মোদি- শাহরা বাংলাকে দেখতে শুরু করেছিলেন কৈলাসদের চোখ দিয়ে। ভোটের ফল ঘোষণার পরেও স্বপদে বহাল আছেন এই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা। যদিও এখন তাঁদের বাংলায় কম দেখা যাচ্ছে৷ তবে তাঁরা ফের আসবেন, এমন জেনেই রাজ্য বিজেপি এখন থেকেই দিল্লির নেতাদের থেকে দূরত্ব বাড়ানোর প্রস্তুতি সেরে রাখছেন৷ আর সেই কারণেই হেস্টিংসে দিল্লির নেতাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করে দিচ্ছে রাজ্য বিজেপি।

Advt