তৃণমূল (TMC) ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ থেকে গুরুত্বপূর্ণ সেচ দফতর সামলান রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়(Rajib Banerjee) । তাল কাটে ২০১৬ নির্বাচনে ফার্স্ট বয় হয়ে। বিপুল সংখ্যক জয় পান তিনি। আর ভাবতে শুরু করেন এই জয় তা, নিজের ক্যারিশমায়। এরপর হাওড়া জেলায় রীতিমতো লবি আমদানি করেন রাজীব। নিজের আখের গোছাতে তৃণমূলের(TMC) ক্ষতি করতে থাকেন তিনি, যা তৃণমূল নেত্রীর বিশ্বাসী চোখে ধরা পড়েনি।
২০২০ থেকেই সুযোগ বুঝে ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মফুলে(BJP) যাওয়ার রাস্তা তৈরি করতে থাকেন রাজীব। অবশেষে ২০২১- দল বদলে পদ্মে গিয়ে ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার গড়ার ডাক দেন রাজীব।
অথচ গত ১০ এপ্রিল ডোমজুড়ের নির্বাচনে প্রধান প্রতিপক্ষ তৃণমূলের দাপুটে নেতা কল্যাণ ঘোষের(Kalyan Ghosh) বিরুদ্ধে পদ্ম ফোটাতে গিয়ে ল্যাজেগোবরে অবস্থা হয় রাজীবের। প্রায় ৪২ হাজারের বেশি ভোটে কল্যাণ ঘোষের কাছে হারেন রাজীব। এরপরই প্রশ্ন আসে, এখন কী করবেন রাজীব? এবার তাঁর গন্তব্য কী? এই প্রশ্নটাই এখন ঘুরছে রাজ্য রাজনীতিতে।
জানা গিয়েছে, পদ্ম ছেড়ে চটজলদি ফের তৃণমূলে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। তাই সস্ত্রীক তৃণমূলের হেভিওয়েট শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইছেন রাজীব।
ভোট পরবর্তীতে রাজীবকে নিয়ে তৃণমূলের একাধিক নেতাদের নানা মন্তব্যে জল্পনা বাড়ছেই। তবে হাওড়ার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখে দল একপ্রকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হয়ত রাজীবকে আর ফেরানো নাও হতে পারে। ফেরালেও হাওড়ায় রাজনীতি করার জায়গা হয়ত আর দেবে না তৃণমূল নেতৃত্ব । কারণ, রাজীবের বিপরীত গোষ্ঠীর অরূপ রায় এখন হাওড়ার রাজনীতিতে প্রধান মুখ। তাই রাজীবের ফেরা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
ডোমজুড়ের বর্তমান বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে আমরা অনুরোধ জানিয়েছি ‘গদ্দারদের’ আর দলে ফেরানোর প্রয়োজন নেই। তারা যেখানে আছে থাক। তবে দলনেত্রী ফেরালে আলাদা ব্যাপার, সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে।’
বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন বিজেপিতে থেকে কাজ করা সম্ভব নয়। তাই নিজের প্রাক্তন দলেই ফিরতে চান। কিন্তু হাওড়ায় নির্বাচনের ফলাফলে তৃণমূলের অভাবনীয় ফল ও রাজীব বিরোধী একাধিক নেতাদের আপত্তি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর প্রত্যাবর্তনে প্রধান প্রতিবন্ধক।