রাজ্যসভায় সুব্রত, বালিগঞ্জে লড়তে চলেছেন মমতা?

0
1

গোটা রাজ্যজুড়ে মমতা মাজিকে বিপুল জয় ছিনিয়ে এনেছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী (CM) হিসেবে শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালা বদলের পর থেকে ভবানীপুর (Bhawanipur) কেন্দ্র থেকে জিতে আসতেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু এবার তিনি নন্দীগ্রাম (Nandigram) থেকে লড়াই করেছেন। এই কেন্দ্রের ফলাফল নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। আইনি লড়াইয়ের পথে হাঁটছে তৃণমূল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৬ মাসের মধ্যে একটি আসন থেকে উপনির্বাচন (By Poll) করে জিতে আসতে হবে। এটাই সংসদীয় গণতন্ত্রের নিয়ম।

খুব স্বাভাবিকভাবে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। কোন আসন থেকে উপনির্বাচনে লড়বেন মুখ্যমন্ত্রী? চলছে নানা স্পেক্যুলেশন। অনেক কাটাছেঁড়া। মুখ্যমন্ত্রীর প্রার্থী হওয়া নিয়ে ‘এখন বিশ্ববাংলা সংবাদ’-এর সূত্র থেকে যে খবর উঠে এসেছে তা পাঠকের কাছে আগেই রাখা হয়েছিল। বেশ কয়েকটি সম্ভাবনার কথা আমরা জানিয়েছিলাম। তার পিছনে একাধিক যুক্তি ছিল।

এরই মাঝে আরও একটি সম্ভাবনা জোরালো ভাবে উঠে আসছে। সূত্রের খবর, বালিগঞ্জ (Ballygunj) কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেক্ষেত্রে এই কেন্দ্রের জয়ী বিধায়ক (MLA) সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে (Subrata Mukherjee) রাজ্যসভায় (Rajyasabha) পাঠাতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘ ও বর্ণময় রাজনৈতিক জীবনে একজন সফল দক্ষ প্রশাসক হিসেবে নিজেকে বহুবার প্রমাণ করেছেন বর্ষীয়ান সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এবার তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে আরও সম্মান ও স্বীকৃতি দিতে পারে তৃণমূল। এর আগেও তিনি সাংসদ হওয়ার লড়াই করেছেন। বিধায়ক-মন্ত্রী থাকাকালীন লোকসভা ভোটে লড়েছেন। কিন্তু দিল্লি যাওয়া হয়নি সুব্রতবাবুর। এবার তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠালে অবাক হওয়ার কিছু নেই। সেক্ষেত্রে বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রটি বিধায়ক শূণ্য হলে উপনির্বাচন হবে। এবং সেখান থেকে দাঁড়াতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এখনও পর্যন্ত যে সম্ভাবনাগুলি উঠে আসছে, তার মধ্যে এটাই সবচেয়ে জোরালো বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

এক নজরে আগের তিনটি সভাবনা ফের একবার–সম্ভাবনা এক : মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হতে পারেন খড়দায়। সেখানে ভোটের পরেই কোভিডে মৃত্যু হয় নেত্রীর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী কাজল সিনহার। ফল বের হলে দেখা যায়, জিতেছেন প্রয়াত কাজল সিনহা। ব্যবধানও বিশাল। ফলে অটোমেটিক চয়েজ খড়দা। মুখ্যমন্ত্রী মাঝে ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। কিন্তু একটি সূত্র বলছে, প্রয়াত সহকর্মীর স্ত্রীকে প্রার্থী করার ব্যাপারে কথা দিয়েছিলেন নেত্রী। তাই খড়দায় প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে দোদুল্যমানতা রয়েছে। কিন্তু সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

সম্ভাবনা দুই : তাঁর পুরনো কেন্দ্র ভবানীপুরে প্রার্থী হতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সম্ভাবনা প্রবল। এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। জিতেছেন বিশাল ব্যবধানে। শীর্ষস্তরে এই ভাবনা ঘোরাফেরা করছে যে শোভনদেবকে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে এই আসনে প্রার্থী হয়ে মুখ্যমন্ত্রী জিতে আসতে পারেন। কারণ, দীনেশ ত্রিবেদী দলবদল করায় এবং মানস ভুঁইয়া বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হয়ে জিতে আসায় রাজ্যসভার দুটি আসন এই মুহূর্তে শূন্য রয়েছে।

সম্ভাবনা তিন : রাসবিহারী কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কেন্দ্রে দূরন্তভাবে জিতে এসেছেন প্রাক্তন পুর পারিষদ দেবাশিস কুমার। পুর রাজনীতিতে পরিচিত মুখ। জনপ্রিয়, মেয়র প্রার্থী হওয়ার উপযুক্ত নেতা। এমনও হতে পারে দেবাশিস কুমারকে কলকাতা পুরসভা ভোটে মেয়র প্রোজেক্ট করে তৃণমূল পুরসভা ভোটের লড়াইয়ে নামল। দেবাশিস দক্ষিণের প্রার্থী। সামঞ্জস্য রাখতে উত্তর থেকে ডেপুটি মেয়র হতে পারেন স্মিতা বক্সি। পুর রাজনীতিতে পরিচিত মুখ অতীন ঘোষ ইতিমধ্যে বিধায়ক হিসাবে জিতে গিয়েছেন। মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ফলে দেবাশিসকে সামনে আনতে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

এই তিনটি সম্ভাবনাও রয়েছে প্রবলভাবে। তবে শেষ মুহূর্তে, শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। তিন সম্ভাবনার বাইরে চতুর্থ সম্ভাবনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময়ই খোলা রাখেন।