তৃণমূল নেত্রী মমতা বলছেন, মুর্শিদাবাদ মানে একটা ইতিহাস। দীর্ঘ একটা সংগ্রাম। মুর্শিদাবাদ সম্প্রীতির জায়গা। এখানে বাউল, ফকির একসাথে গান গায়। আপনারা এই ঐতিহ্যকে রক্ষা করেছেন।
তিনি বলেন, এই এলাকায় নিকাশী ব্যবস্থা হয়েছে। পানীয় জলের জন্যে ৫১ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। বিড়ি শ্রমিকদের জন্যে আমরা সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প করেছি। ৬০ বছর বয়সীরা আড়াই লক্ষ টাকা করে পাবেন। কেউ পঙ্গু হয়ে গেলেও টাকা পাবেন। দেড় কোটি লোক এই প্রকল্পের সুবিধা পান। সরকার ৫৫ টাকা করে সবার নামে মাসে রাখে। আপনাদের এক টাকাও দিতে হবে ন। আমাদের অঙ্গীকার আমরা সবার ঘরে ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দেব। আপনাদের মহিলা কলেজ, কৃষি বিদ্যালয়, ব্রিজের চাহিদা আছে আমি দেখে দেব। ভগবান জেলায় দুটি কর্ম ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। আইসিডিএস সেন্টার তৈরি হয়েছে। রেশন কার্ড বিলি হয়েছে। লালবাগে বৈদ্যুতিক চুল্লী, ফায়ার ব্রিগেড করে দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূল সুপ্রিমো আরও বলেন,”আমরা কন্যাশ্রী, রুপশী, ঐক্যশ্রী করে দিয়েছি। শিক্ষাশ্রী রয়েছে এসসিএসটিদের জন্যে। জেনারেল কাস্টের জন্যে স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ আছে। বিনা পয়সায় রেশন চাইলে আপনারা আমাকে ভোট দিন। বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস ভাই ভাই। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে গেলে সব ভোট তৃণমূলকে দিন। সিপিএম, কংগ্রেস বিজেপির দালালি করে। আমাদের রিপোর্ট কার্ড দেখে ভোট দিন। বিনা পয়সায় পড়াশোনা, প্রেগন্যান্ট মাদারকেও আমরা টাকা দিই। বিনা পয়সায় চিকিৎসা। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ৫ লক্ষ টাকার চিকিৎসা পাবেন। আপনাদের এক টাকাও দিতে হবে না।”
আরও পড়ুন-ঈদের দিনে মুর্শিদাবাদের ভোটে আপত্তি জানিয়ে কমিশনে বামেরা
এদিন মমতা বলেন,”আগামীতে আমরা দুয়ারে দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেব। মা বোনেদের হাতে ৫০০- ১০০০ টাকা করে তুলে দেব। চাষী বন্ধুরা এরপর থেকে ১০০০০ টাকা করে পাবেন। প্রান্তিক চাষীরা পাবেন ৫০০০ টাকা করে। ছেলে মেয়েদের জন্যে বাবা মাকে আর চিন্তা করতে হবে না। সরকার ১০ লক্ষ টাকা করে স্টুডেন্টদের জন্যে ক্রেডিট কার্ড করে দেবে। যাতে তারা নিজের টাকায় পড়তে পারে। বিশ্বজয় করে তারা বাংলায় ফিরে আসবে। আমরা ৫ লক্ষ চাকরি দেব বছরে। এমএসএমই ইন্ডাস্ট্রিতে দেড় কোটি চাকরি দেব। ইন্দো বাংলাদেশ চুক্তির সময় ফারাক্কার ড্রেজিং করার কথা ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের। করেনি। তাই মুর্শিদাবাদ, মালদায় জল ঢুকে যায়। তাই কেন্দ্র সরকারকে আমরা বলব যাতে এটা করে দেয়।”
মমতা বলেছেন, “বাংলাকে গুজরাট হতে দেবেন না। বাংলাকে দখল করতে দেবেন না। এমন কিছু করবেন না যাতে হিন্দু মসলমানদের মধ্যে অশান্তি হয়। বিজেপির পরিকল্পনা দাঙ্গা লাগানোর। সবাই ভোট দিতে যাবেন। নাহলে বিজেপি এনপিআর, এনআরসি করে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেবে। আমি বাংলায় এনআরসি করতে দেব না। সবাইকে নিঃশর্ত দলিল দিয়ে দেব জমির। কেউ আপনাদের ওঠাতে পারবে না। এই নির্বাচন বাংলা বাঁচানোর নির্বাচন। দুজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় ১৩ তারিখে ভোটের দিন ফেলেছে। সেদিন ইদ আছে। জানিনা কেন ইদের দিনে ওরা ভোট রাখলো, নির্বাচন কমিশনের ক্যালেন্ডারে কি ইদের ছুটি নেই? ঈদ বা দুর্গা পুজো এভাবে ভোটারদের আটকানো যাবে না, ভোট তা তৃণমূলকেই দেবেন এটাই আমার আর্জি।”
তিনি বলেন,”করোনার যা ওষুধ ছিল তার ৬৪% পাঠিয়ে দিয়েছে বিদেশে। দেশের মানুষ ওষুধ পাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী ঘর জ্বালানো, পর ভোলানো। কাল প্রধানমন্ত্রী বলছেন এখন থেকে খোলা বাজারে ভ্যাক্সিন পাওয়া যাবে। কিন্তু খোলা বাজারে কোন ওষুধ নেই। আমরা কালকেও কলকাতায় ৪০ হাজার ভ্যাক্সিন দিয়েছি। কেন্দ্রীয় সরকার অপদার্থ সরকার। একটু সাবধানে থাকবেন। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ঝড় আসলে ঝড় সামলাতে হবে। বিজেপি এক লক্ষ বহিরাগত গুন্ডা নিয়ে এসে কোভিড ছড়াচ্ছে। ভোট মিটে গেলে পালিয়ে যাবে। তখন আমাকে সামলাতে হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গত ছমাস কোভিড ছিল না। তখন যদি ইঞ্জেকশন দিয়ে দিত তাহলে এই অবস্থা হত না। দেশের মানুষ মরে যাচ্ছে। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী বাংলায় বসে আছেন, ভোটার প্রচার করছেন, বাংলা দখলের কথা বলছেন। বাংলা বাইরের লোকের খবরদারি মেনে নেয় না। আমরা দাঙ্গাবাজদের চাই না। কোন সাম্প্রদায়িক প্ররোচনায় কান দেবেন না। ভোট একদিন এসে চলে যাবে। আপনাদের পাশাপাশি সারাজীবন থাকতে হবে। সিপিএম, কংগ্রেসের চালে হিন্দু মুসলিম কেউ কান দেবেন না। আমরা আমাদের কাজ করছি, আপনারাও আপনাদের কাজ করুন।”






































































































































