‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah) আপনার কর্তব্যটা আপনি পালন করছেন তো? আজকেও ছত্তিশগড়ে মাওবাদীদের সঙ্গে লড়াইয়ের ২৩ জন জওয়ান শহিদ হয়েছেন। আর অপদার্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গে ভোট চাওয়ার রাজনীতি করছে। ওকে ঘাড় ধরে বাংলা থেকে বের করে দেওয়ার সময় এসে গেছে।’ রবিবার বালিতে তৃণমূলের জনসভায় উপস্থিত হয় ঠিক এভাবেই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে তীব্র আক্রমণ শানালেন প্রাক্তন সংসদ ও তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)। পাশাপাশি তিনি এটাও স্মরণ করিয়ে দেন ‘বাংলায় তৃণমূলের শাসনে মাওবাদী সমস্যার সমাধান হয়েছে। জঙ্গলমহলকে শান্ত করে দেখিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একদা মাওবাদী(Nakshal) অধ্যুষিত সেই জঙ্গলমহলে আজ পর্যটকদের ভিড়।’
রবিবার হাওড়া বালিতে তৃণমূল প্রার্থী(TMC candidate) রানা চট্টোপাধ্যায়ের(Rana Chatterjee) সমর্থনে জনসভায় উপস্থিত হয়েছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সেখান থেকেই কড়া ভাষায় বিজেপিকে আক্রমণ শানান তিনি। বলেন, ‘বঙ্গ রাজনীতিতে বিজেপির স্লোগান হয়েছে ‘জয় শ্রীরাম’। কিন্তু জয় শ্রীরাম তো কোনো রাজনৈতিক স্লোগান নয়। আমার হিন্দুত্ব, আমার ঠাকুর ঘর তার এজেন্সি আমি ভারতীয় জনতা পার্টিকে দেইনি। রাজনৈতিক স্লোগান হওয়া উচিত রুটি-কাপড়া-মকানের উপর ভিত্তি করে। এখানে কেন ঠাকুরকে নিয়ে স্লোগান দেওয়া হবে?’
একই সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেন, ‘তবু যারা জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে চান তাদের বলব, হ্যাঁ আমি জয় শ্রীরাম বলবো যদি পেট্রোল পাম্পে এই স্লোগান দিলে পেট্রোলের দাম ৪০ টাকা ডিজেলের দাম ৩০ টাকা নেয়। ২০০ টাকায় যদি রান্নার গ্যাস দেয়। তবে অবশ্যই এই শ্লোগান দেবো আমি।’
আরও পড়ুন:সাতগাছিয়ায় বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে শ্যামাপোকা বলে কটাক্ষ অভিষেকের
পাশাপাশি বৈশাখী ডালমিয়া সহ তৃণমূলের বিধায়কদের বিশাল অর্থব্যয়ে চার্টার্ড বিমানে করে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার ঘটনা স্মরণ করিয়ে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন কুণাল ঘোষ। বলেন, কোথায় ছিল আপনাদের চাটার্ড প্লেন যখন পরিযায়ী শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরতে শতশত কিলোমিটার পায়ে হাঁটছিল। দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে রাস্তাতে মৃত্যু হয়েছিল এক হতভাগ্য মায়ের। হতভাগ্য এক অবোধ শিশু সেই মৃত মায়ের চারপাশে খেলা করছিল। তখন কোথায় ছিল আপনাদের এই চাটার্ড প্লেন। ভিন রাজ্যে কর্মরত বাংলার শ্রমিকদের সেই সময় ট্রেন ভাড়া করে ঘরে ফিরিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’
পাশাপাশি বৈশালী ডালমিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জগমোহন ডালমিয়ার মৃত্যুর পর এই মেয়েটিকে বাড়ি থেকে বের করে এনে পরিচিতি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ ‘বিশ্বাসঘাতক’ আজ নিজের সুবিধার জন্য সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিঠে ছুরি মেরেছে।’
বিজেপিকে আক্রমণের পাশাপাশি রবিবারের জনসভা থেকে সংযুক্ত মোর্চাকে একটি ভোটও না দেওয়ার আহ্বান জানান কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘এদেরকে ভোট দেওয়ার অর্থ বিজেপির সুবিধা করে দেওয়া। যে বাচ্চা মেয়েটা এখান থেকে দাঁড়িয়েছে দোষ তার নয়, দোষ ওই দলটার। ডাইনোসর যুগের ওই দলটা রাজ্যের যে সর্বনাশ করে গিয়েছে সেটাকে কখনোই ভুলে যাওয়া যায় না। এদের আমলেই একের পর এক গণহত্যা হয়েছিল রাজ্যে। বহু কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কম্পিউটারের বিরোধিতা করে ব্যাংক ভাঙচুর করেছিল। ইংরেজি শিক্ষা তুলে দিয়ে যুবসমাজের কোমর ভেঙে দিয়েছিল এরা। সেটা কখনোই ভুলে যাবেন না।’