বিজেপির ইস্তেহার স্রেফ ‘ধাপ্পাবাজি’: কটাক্ষ সুজনের

0
3

বিজেপির ইস্তেহার কে সম্পূর্ণ ‘ধাপ্পাবাজি’ বলে কটাক্ষ করলেন বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি এবং দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রবিবার এই রাজ্যে বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করেন । যা দেখে বাম নেতার প্রশ্ন, এটা কি ভারতবর্ষের নির্বাচনের ম্যানিফেস্টো প্রকাশ হচ্ছে ?
তার স্পষ্ট জিজ্ঞাসা, অমিত শাহ যে ইস্তেহার প্রকাশ করলেন তা কি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে, নাকি কেন্দ্রের নির্বাচনের মানসিকতায়? কারণ, ইস্তেহারে যেভাবে প্রতিশ্রুতির বন্যা তা দেখে মনে হতেই পারে এই ইস্তেহার রাজ্যের জন্য নয় সারা দেশের জন্য।
তিনি রবিবার স্পষ্ট বলেন, এর আগে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা বিজেপি ঘোষণা করেছিল। তা আজ অতীত। দু’কোটি বেকারের চাকরি দেবেন বলেছিলেন। মানুষ তার সাক্ষী। পুরোটাই প্রতারণার মোড়কে ধান্দাবাজি আর প্রতিশ্রুতির বন্যা।
ইস্তেহারে বলা হয়েছে, ‘আশা’ কর্মীদের মাইনে বাড়ানো হবে । এটা কি শুধু এই রাজ্যেই হবে না পুরো দেশে হবে? স্বাস্থ্য পরিষেবা পরিকাঠামোর উন্নয়নের কথা বলছেন, যা আরেকটি প্রতারণা । পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের আগে বাড়িয়ে বলছেন । যার অঙ্ক মিলছে না । আসলে বাস্তবের সঙ্গে এর কোনও মিল নেই । তিনি আরও বলেন, একটা এইমস গড়তে সাতবছর লেগেছে । আরও তিনটি এইমস করার কথা বলছেন । এটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয় ।
তাঁর সাফ কথা , এই জায়গায় বিজেপি ও তংণমূলের সুর মিলে যাচ্ছে ।চাকরিতে ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ! সাতবছর ধরে করেননি কেন? । অন্য রাজ্যে কি এই সংরক্ষণ হয়েছে ? এটা কি সারা দেশে হয়েছে ?
ইস্তেহারে অন্নপূর্ণা ক্যান্টিন শুরু করার কথা বিজেপি বলেছে । এই ঘোষণাতেও রাজ্য এবং কেন্দ্রের শাসকের একই সুর পাচ্ছেন সুজন চক্রবর্তী ।তিনি জানান, লকডাউনের সময় মানুষের কাছে শুকনো খাবার পৌঁছে দেওয়া, কমিউনিটি কিচেন, শ্রমজীবি ক্যান্টিন করেছে বামপন্থীরা । সারা ভারত এই বিকল্প মডেল দেখেছে । যখন করার ছিল তখন করেননি । বিজেপি বলছে অন্নপূর্ণা ক্যান্টিন, কয়েকদিন আগে তৃণমূল বলেছে মা ক্যান্টিন চালু করবে ।
আসলে বিজেপি যে তৃণমূলকে নকল করে বাংলার মানুষের মন জয় করতে চাইছে তা কিন্তু ধরা পড়ে গিয়েছে।
এমনকি, বিজেপি ক্যাবিনেট চালু হলে সিএএ চালু করার কথা বলেছে। যা নিয়েও কটাক্ষ শোনা গিয়েছে এদিন সুজন চক্রবর্তীর গলায় । তাঁর মতে, প্রধানমন্ত্রী এতদিন যা বলছিলেন তাতে ২০১৯-এ সিএএ চালু হয়ে যাওয়ার কথা ছিল । ১৯, ২০, ২১ গেল, ক্যাবিনেট মিটিং হয়নি ? ক্যাবিনেট মিটিং তো প্রতি সপ্তাহে হয় । এর জন্য সব আটকে গেল ? আসলে অসমের ভোটের প্রভাব যাতে এখানে না পড়ে সেই কারণে এই ধরণের কথা বলে বাংলার মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন ।
রাজ্যে শিল্পায়নের কোনও দিশা নেই কেন অমিত শাহদের সংকল্প পত্রে ৷ অন্তত অমিত শাহ তো এই নিয়ে একটিও শব্দ খরচ করেননি ৷ পরিকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফিরিস্তি শোনা গিয়েছে বিজেপির এই হেভিওয়েট নেতার মুখে ৷ কিন্তু তিনি একবারও শিল্পায়ন নিয়ে কোনও কথা বলেননি ৷ শুধু কর্মসংস্থান বৃদ্ধির একটি বিষয় ছুঁয়ে গিয়েছেন ৷ যেখানে বলা হয়েছে যে প্রতি বছর রাজ্যের প্রতিটি পরিবারের অন্তত একজনকে নিশ্চিত ভাবে কর্মসংস্থান দেওয়া হবে ৷
বিজেপি মহিলাদের মন পেতে মনগড়া কথা ইস্তেহারে প্রকাশ করেছে । সুজনবাবুর প্রশ্ন, এ রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী বলেই কী এতো মহিলা প্রীতি। দেশের অন্যান্য রাজ্যে, যেখানে তারা ক্ষমতায় আছে সেখানে তো এই সুর শোনা যায় নি। আসলে বাংলার মানুষকে বোকা বানানোর জন্য প্ল্যানমাফিক এই প্রতিশ্রুতি ।