ভোট বাংলায় এবার নিশ্চিহ্ন হায়দরাবাদের “ভাইজান” আরশাদ উদ্দিন ওয়েসির মিম। যা একুশে বাংলার হাইভোল্টেজ নির্বাচনের অন্যতম চমক। অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন বা মিম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসির সঙ্গ ত্যাগ করলেন তাঁরই ছায়াসঙ্গী সৈয়দ জামিরুল হাসান। যিনি এ রাজ্যে মিমের সভাপতি ছিলেন।
বিহার ভোটে সাফল্য পাওয়ার পর ওয়েসি আত্মবিশ্বাসের সুরে জানিয়েছিলেন, আসন্ন পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনেও প্রার্থী দিচ্ছে তাঁর দল। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন, এবার দল ছাড়লেন এই রাজ্যের মিম-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত জামিরুল হাসান।
জামিরুলের কথায়, একুশের নির্বাচনে লড়াইয়ের সমস্ত প্রস্তুতি নিলেও হঠাৎ করেই ওয়াইসি চুপ করে গিয়েছেন। কারণটা সকলের অজানা। এ রাজ্যের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ঘোষণার পর কেটে গিয়েছে এক সপ্তাহের বেশি, তবুও মিমের দলীয় নেতৃত্ব এখনও দিশাহীন। রাজ্যের নেতারা মানসিক প্রস্তুতি নিলেও শীর্ষ নেতৃত্ব কোনও উদ্যোগ নিচ্ছেন না বলেই অভিযোগ করেন তিনি। এরপরই জামিরুল বলেন, “আমরা ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লিগ গঠন করতে চলেছি বাকি দলত্যাগীদের নিয়ে। এই বিধানসভা নির্বাচনে আমরা তৃণমূলকেই বেশিরভাগ আসনে সমর্থন করব। আর যেখানে তৃণমূল ছাড়া বিজেপি বিরোধী অন্য দলের শক্তি বেশি, সেখানে তাদের পাশে থাকবেন জামিরুল ব্রিগেড। তিনি জোর গলায় বলেন, আরশাদ উদ্দিনের সঙ্গে বিজেপির গোপন আঁতাত রয়েছে। সেটা এখন তাঁরাও বুঝতে পারছেন।
কিন্তু কেন? জামিরুল বলেন, “হায়দরাবাদের প্রাক্তন মেয়র তথা মিম-এর পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক মাজিদ হোসেনকে নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। ওঁনারা হায়দরাবাদ থেকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন। বাংলার নেতৃত্বকে কিছু জানান না। আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে বৈঠকের সময়ও আমাদের কিছু জানানো হয়নি। এমন দলের সঙ্গে কাজ করতে রাজি নই। তবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই চালাব আমরা। কোনও বিকল্প নেই। তাই তৃণমূলকে এই নির্বাচনে সমর্থন করব। তৃণমূল তো দেশকে নষ্ট করছে না।”
জামিরুল ও তাঁর অনুগামীরা হাইভোল্টেজ নন্দীগ্রাম আসনে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেতানোর জন্য অলআউট ঝাঁপাতে চলেছে বলেও দাবি করেন জামিরুল হাসান। আগামিকাল থেকে পুরো শক্তি নিয়ে মমতার সমর্থনে নন্দীগ্রামে হাজির হচ্ছেন তাঁরা। জামিরুল বলেন, “আমি আমার ৪-৫ হাজার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নন্দীগ্রামে গিয়ে দিদির হয়ে কয়েকদিন কাজ করব। তৃণমূল না বললেও আমরা যাব। বিজেপিকে হারাতে যা করার আমরা করব।”
অন্যদিকে, ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির রাজনৈতিক ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন মিমের প্ৰাক্তন সভাপতি জামিরুল। তাঁর দাবি, আব্বাস যে লোক দেখাচ্ছে, সেটা ইভিএমে প্রতিফলিত হবে না। সে ধর্মগুরু বলে অনেকেই তাঁর বক্তব্য শুনতে যায়। কিন্তু রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আব্বাসের সঙ্গে এঁদের অনেককেই পাওয়া যাবে না। আব্বাসের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কম। এভাবে চললে ওর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকার বলেই মনে করেন জামিরুল।
আরও পড়ুন- সোনাচূড়ায় হামলা চালিয়েছে শুভেন্দুর বিজেপির লোকেরাই, কমিশনে নালিশ তৃণমূলের