কেউ শিখে আসে না, সকলকেই একদিন শুরু করতে হয়: অকপট তারকা প্রার্থী সায়ন্তিকা

0
2

এবার বিধানসভা ভোটে (Assembly Election) রাজ্যের হিসেবে তৃণমূলের (TMC) পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা আগেই ঘোষণা করেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ফলে বাকিদের থেকে প্রচারে বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়েছে শাসক শিবির। প্রার্থী তালিকায় আবার একের পর এক চমক। তারকার মেলা। চাঁদের হাট। টলিউডের একঝাঁক জনপ্রিয় ও পরিচিত মুখ এবার সরাসরি লড়াইয়ের ময়দানে। যেমন বহুচর্চিত বাঁকুড়া (Bankura) কেন্দ্রে এবার ঘাসফুল প্রার্থী টলি অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় (Sayantika Banerjee)। নাম ঘোষণার পর থেকেই শুরু করে দিয়েছেন কাজ। অভিনেত্রী থেকে নেত্রী। যদি “নেত্রী” ঘোর আপত্তি সায়ন্তিকার। বললেন, “বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়। আমি নেত্রী নই। আর পাঁচজন সাধারণ মেয়েদের মতোই। নামে আমি প্রার্থী, কিন্তু আসল প্রার্থী তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই দিদির দিদির প্রতিনিধি হয়েই থাকতে চাই।

কেন রাজনীতির ময়দানে? সায়ন্তিকার স্পষ্ট উত্তর, “বাংলার মহিলাদের সম্মান, সুরক্ষা দিতে দিদির হাতকে মজবুত করতেই রাজনীতিতে। দিদির সঙ্গে ১০ বছরের সম্পর্ক। এমনটা নয় যে এই প্রথম। এবার ভোটে লড়ছি, এটাই একটু আলাদা।”

ভোটে লড়ার অভিজ্ঞতা তো নেই, টেনশন হচ্ছে? উত্তরে সায়ন্তিকা জানান, “একদিন তো সকলকেই শুরু করতে হয়। প্রথমেই সব কিছু তো কেউ শিখে আসে না। আমিও ধীরে ধীরে শিখব। এত বছর পশ্চিমবঙ্গে থেকে কাজ করেছি। স্টেজ শো করি যখন সামনে ৫ হাজার দর্শক থাকেন। তাঁদের সঙ্গেও কথা বলতে হয়। সুতরাং মানুষের সঙ্গে কী ভাবে মিশতে হয়, সেটা যে একেবারেই জানি না, তা কিন্তু নয়। এ ছাড়াও সিনিয়রদের দেখে শিখব। ভুল হবে, সেটা শুধরে নেব। বাঁকুড়ার মানুষ, আমার দল ঠিক-ভুল চিনিয়ে দেবে। আমি তো বাঁকুড়াতে গিয়ে প্রথমেই শম্পাদির (শম্পা দরিপা) কাছে যাবো। ওনার থেকেই শিখবো। ওনাকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করবো।”

দেব-মিমি-নুসরতের থেকে কি সাজেশন নেবে? “নিশ্চই। আমরা সকলেই তো দিদির দলের। ওঁরা আমার আগে রাজনীতিতে এসেছেন। মানুষের ভাল করতে যদি দেব-মিমি-নুসরতের সাহায্য লাগে, তা হলে কেন ওঁদের থেকে সাহায্য চাইব না! ওদের সাজেশন নেবো।”

ভোটে জেতার পর তারকা প্রার্থীদের এলাকায় খুঁজে পাওয়া যায় না বলেও অভিযোগ, কী বলবেন? সায়ন্তিকার সোজা উত্তর, “হাতের পাঁচটা আঙুল সমান হয় না। তাই এ সব কথা আমি কানে তুলি না। আমি কাজ করব কি না সেটা সময় বলে দেবে। কেউ আমাকে নিয়ে কোনও খারাপ কথা বললে আমি সেটা নিয়ে ভাবি না। শুধু আমার মা, বাবা সেটা বিশ্বাস করেছেন কি না সেটাই আমার ভাবনার বিষয় হয়। বাঁকুড়ার মানুষজন আমাকে নিয়ে কী ভাবছেন, সেটাই আমার কাছে বেশি জরুরি। আমি এ ভাবেই নিজেকে পজিটিভ রাখি, আনন্দে রাখি।”

ছবিতে কাজ পাচ্ছেন না বলেই রাজনীতিতে এসেছেন, এমন অভিযোগও শোনা যাচ্ছে। এই প্রশ্নে সায়ন্তিকা “স্ট্রেট ড্রাইভ” করে জানালেন, “১২ মাস কাজ করে যেতে হবে, এমনটা আমি মোটেই মনে করি না। নিজেকে সময় দিতে ভালবাসি। আমি নাচ নিয়ে থাকি, শরীরচর্চা করি, গিটার শিখি। অভিনয়ের বাইরে এ সব করেও আমার ভাল সময় কাটে। তা ছাড়াও আমি বেছে কাজ করি বলেই কিন্তু দর্শকরা আমাকে ভালবাসেন। তাই কে কী বলল, সেটা নিয়ে আমি বিশেষ ভাবি না। ২০১৯ সালে ‘শেষ থেকে শুরু’-তে একটা আইটেম সং করেছিলাম। তার আগে ২০১৮-তে হরনাথ চক্রবর্তীর ‘বাঘ বন্দি খেলা’। মাঝখানে ২০২০ কেমন কেটেছে সেটা নিশ্চয়ই আলাদা করে বলে দিতে হবে না। ওই সময়টাকে মন থেকে মুছে ফেলতে চাই। তবে বলতে পারি কাজ থেকে বিরতি নিইনি কখনওই। কাজের বিষয়ে আমি একটু খুঁতখুঁতে। আমার কাছে মনের মতো কোনও চরিত্র আসেনি। আর যে কাজগুলো হওয়ার কথা ছিল, করোনার জন্য সেগুলোও হয়ে ওঠেনি।”

নিজের কেন্দ্র বাঁকুড়ার জন্য আপনার কী চিন্তাভাবনা? সায়ন্তিকার উত্তর, বাঁকুড়াতে আমি প্রচুর শো করেছি। অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বাঁকুড়াকে খুব ভাল চেনে। কিছুদিন আগেই মেজিয়ার বইমেলায় গিয়েছিলাম। ওখানকার মানুষ প্রচুর ভালবাসা দিয়েছেন আমাকে। আশা করছি, এ বার জায়গাটাকে আরও ভাল ভাবে চিনব। আমি সেখানকার মানুষের পাশে থাকতে চাই না। ওঁদের মধ্যে একেবারে মিশে যেতে চাই। ওখানকার মানুষের থেকে জানতে চাইব তাঁরা কী চান। নিজের বাড়ির সমস্যা যে ভাবে সমাধান করি, বাঁকুড়ার মানুষের সমস্যাও সে ভাবেই সমাধান করব।”