অভিষেকের সভার ভিড় বুঝিয়েছে, মমতার নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক

0
1

মিছিল বা সমাবেশের জনস্রোতকে যদি সাধারণভাবে কোনও দল বা কোনও নেতার জনপ্রিয়তার মাপকাঠি ধরা হয়, তাহলে শনিবার বোঝা গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপির (BJP) থেকে অনেক এগিয়েই আছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)৷ এবং একইসঙ্গে স্পষ্ট হয়েছে, শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary) বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেও ওই জেলার গেরুয়া শিবিরের রাজনৈতিক পাল্লা এখনও তেমন চোখে পড়ার মতো ভারী হয়নি৷

শনিবার কাঁথিতে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee)জনসভা হাতেকলমেই এর প্রমান দিয়েছে৷

এতদিন পূর্ব মেদিনীপুর বা কাঁথিতে তৃণমূলের কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণ করতো শুভেন্দু অধিকারী তথা অধিকারী পরিবার৷ কর্মসূচি সফল হলে, তার ৯০% কৃতিত্ব স্বাভাবিকভাবে চলে যেত শিশির- শুভেন্দু’র পকেটে৷ এই প্রথমবার অধিকারী-পরিবারের ছোঁয়া এড়িয়ে কাঁথিতে ‘হাইভোল্টেজ’ সভা করলো তৃণমূল৷ শনিবার সৌমেন মহাপাত্র, সুপ্রকাশ গিরি’র মতো নেতারা, যারা এতদিন শুভেন্দুদের দাপটে পিছনের সারিতে ছিলেন, তাঁরাই প্রমান করে দিলেন পূর্ব মেদিনীপুর বিশেষ কোনও নেতা বা কোনও পরিবারের ‘গড়’ নয়, বিপ্লবের এই জেলা, আজ এখনও অবিসংবাদী নেত্রী মানেন তৃণমূল-সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই৷

এবং আরও তাৎপর্যপূর্ণ, এই সভায় সামিল হওয়া সাধারণ মানুষ প্রমান করে দিয়েছেন, নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একদমই ভুল করেননি৷ অভিষেকের উপস্থিতিকেই যদি এইভাবে স্বাগত জানায় পূর্ব মেদিনীপুর, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং এই জেলার একজন জনপ্রতিনিধি হতে চাওয়ায় ইতিমধ্যেই যে উন্মাদনার সৃষ্টি হয়েছে, তাতে বিরোধী শিবিরকে জয়ের নয়, জামানত রক্ষা করার লড়াইতেই নামতে হবে৷

এদিন কাঁথি শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে দইসাই বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ময়দানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে সভার ভিড় দেখেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝে ফেলেন উপস্থিত কর্মী, সমর্থক বা সাধারণ মানুষ ঠিক কী শুনতে চাইছেন৷ একটুও সময় নেননি তিনি৷ অধিকারী-ভবনকে, বিশেষত শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করেই একের পর এক তোপ দাগেন তিনি৷ জনতাও গলা মিলিয়ে, দু’হাত তুলে সোৎসাহে অভিষেকের প্রতিটি কথাকেই সমর্থন করেন৷ এই সভাতেই যেন ধরা পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনৈতিক ‘পালস’৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গ ছেড়ে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ঘটনা স্পর্শকাতর এই জেলা যে খুবই খারাপভাবে নিয়েছে, তাও ধরা পড়েছে এদিন৷

আরও পড়ুন:কাঁথির সভায় জনবিস্ফোরণ: শুভেন্দুকে ঝাঁঝালো ভাষায় আক্রমণ অভিষেকের

শুভেন্দুর বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার প্রায় দেড় মাস পর কাঁথিতে সভা করতে এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কার্যত বুঝতেই পারলেন না, এ জেলার রাজনৈতিক সমীকরণে কোনও বদল ঘটেছে৷ সবই ছিলো স্বাভাবিক৷ যেমনটা আগে ছিলো, তেমনই আছে৷ এ জেলার ২-৩ জন বিধায়ক তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে বিন্দুমাত্রও পালাবদল ঘটাতে পারেনি৷

একুশের ভোটের আগে এদিনের এই ‘ট্রেলার’ বুঝিয়ে ছেড়েছে, নির্বাচন এগিয়ে এলে মূল ‘সিনেমা’ কতখানি মেগাহিট’ হতে চলেছে৷

Advt