লালকেল্লা কাণ্ডে FIR দায়ের হতেই বেপাত্তা বিজেপি ঘনিষ্ঠ সিধু

0
1

প্রজাতন্ত্র দিবসে (republic day) লালকেল্লায় (red fort) ঢুকে তাণ্ডব চালিয়ে তিনি কৃষি আন্দোলনের (farmers protest) বদনাম করেছেন। তাঁর সঙ্গে কৃষক সংগঠনের কোনও যোগ নেই। তিনি বিজেপির চর (agent of bjp) হয়ে আন্দোলনকে দুর্বল করার চক্রান্ত করেছেন। পাঞ্জাবি অভিনেতা ও গায়ক দীপ সিধুর (deep sidhu) বিরুদ্ধে এমনই গুরুতর অভিযোগ কৃষক নেতাদের। গতকাল কৃষক সংগঠনগুলির বৈঠকের পর সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা তোপ দেগেছে বিজেপি ঘনিষ্ঠ এই দীপের উপর। লালকেল্লায় ঢুকে ধর্মীয় পতাকা টাঙানো ও নজিরবিহীন তাণ্ডব চালানোর পর দীপ সিধুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে বলে খবর। দিল্লি পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুঁজলেও এফআইআর (FIR) দায়ের পর থেকেই বেপাত্তা দীপ সিধু।

পাঞ্জাবি অভিনেতা তথা গায়ক দীপ সিধুকে শেষবার দেখা গিয়েছিল লালকেল্লায় পতাকা ওড়াতে। এনডিটিভি সূত্রে খবর, দিল্লি পুলিশ সিধুর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতেই তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। কৃষক আন্দোলনকে বিপথে চালনা করা, লালকেল্লায় নিশান সাহিবের পতাকা ওড়ানো, জাতীয় পতাকার অবমাননা-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ২৬ জানুয়ারি শেষবার তাঁকে দেখা যায় একটি মোটরবাইকে চড়ে আইটিও চত্বর ছেড়ে পালাতে। তারপর ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের কাজের সাফাই দিয়েছিলেন বিজেপি ঘনিষ্ঠ সিধু। তিনি বলেছিলেন, কোনওরকম অন্যায় করেননি তিনি। সিধুর যুক্তি, প্রজাতন্ত্র দিবসে তাঁরা কেবল নিজেদের অধিকার প্রদর্শন করেছেন। তাঁর মতে, লালকেল্লায় জাতীয় পতাকার অবমাননা হয়নি। নিশান সাহিবের পতাকা ওড়ানো ছিল প্রতীকী প্রতিবাদ।

আরও পড়ুন:২১৭ আসনে রফা করতে আজ বাম-কং জোটের তৃতীয় বৈঠক

সিধু এইসব কথা বললেও তাঁকে বিজেপির এজেন্ট হয়ে কৃষক আন্দোলনের বদনাম করার দায়ে দুষেছেন কৃষক নেতৃত্বই। মূল আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, দীপ সিধু বিজেপি ঘনিষ্ঠ। বিজেপি সাংসদ সানি দেওলের সঙ্গে সখ্য রয়েছে তাঁর। লোকসভা নির্বাচনে সানির প্রচারসঙ্গী ছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে তোলা দীপ সিধুর ছবি প্রমাণ করে তিনি বিজেপির কতটা ঘনিষ্ঠ। কৃষক নেতাদের অভিযোগ, কৃষি আইনের বিরুদ্ধে দুমাস ধরে লাগাতার যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালাচ্ছেন কৃষকরা, তাকে কালিমালিপ্ত করে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে জনমনে ক্ষোভ তৈরির উদ্দেশেই নিজেদের কিছু পেটোয়া লোককে ঢুকিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে গেরুয়া শিবির। এটা কৃষক আন্দোলনকে দুর্বল করার চক্রান্ত। কৃষক নেতাদের প্রশ্ন, লালকেল্লার মত নিরাপত্তার দিক থেকে স্পর্শকাতর স্থানে সিধুর নেতৃত্বে তাণ্ডব চলার সময় দিল্লি পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল কেন? দীপ সিধু নিজেকে কৃষক আন্দোলনের শরিক বলে দাবি করলেও আন্দোলনকারী স্বরাজ ইন্ডিয়া দলের প্রধান যোগেন্দ্র যাদব বলছেন, সিধুকে বহুদিন আগেই কৃষক আন্দোলন থেকে দূরে সরানো হয়েছিল। তাঁকে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল আগেই, আন্দোলনকে কলুষিত করাই যে তাঁর লক্ষ্য ছিল তা এই ঘটনায় প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। আন্দোলনকারীদের একাংশ এও বলছেন, দীপ সিধুকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কৃষক আন্দোলনের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় আন্দোলনের গতি রুদ্ধ করতেই। শুধু দীপ নয়, উঠে আসছে লখবীর সিং সিধানার মত এক প্রাক্তন গ্যাংস্টারের নাম। অতীতে গ্যাংস্টার হিসেবে পরিচিত ছিলেন, পরে রাজনীতিতে আসেন বছর চল্লিশের সিধানা। তিনিও ছিলেন প্রজাতন্ত্র দিবসের তাণ্ডবে।

Advt