একটু ভালো চিকিৎসার আশায় পেটের রোগ সারাতে গত মাসের ২৩ তারিখ চন্দননগরের (Chandannagar) একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন চুঁচুড়া তোলাফটকের বাসিন্দা শোভন সাধু (Sovan Sadhu)। চন্দননগরের নিউ ইউনাইটেড নার্সিংহোম তাঁদের নিয়ম মেনে শুরুতেই শোভনের করোনা টেস্ট করায়। ২৪ তারিখ আসা সেই রিপোর্টে দেখা যায় তিনি নেগেটিভ। এরপর ওই হাসপাতালের আইসিইউ-তে (Icu) তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। যদিও বিগত বছরখানেক ধরে ভুগতে থাকা প্রাক্তন বেসরকারি কর্মী শোভনের অর্থনৈতিক অবস্থাও প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। উল্টোদিকে নার্সিংহোমের বিলও (Nursing Home) বাড়তে থাকে। বাধ্য হয়েই চলতি মাসের দু’তারিখ রোগীকে ওই নার্সিংহোম থেকে ছুটি করিয়ে চুঁচুড়া হাসপাতাল রোডের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে এলে টেস্ট করতেই দেখা যায় শোভন করোনা পজেটিভ।
ওই নার্সিংহোম তড়িঘড়ি কাকলিকে জানিয়ে দেয় রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যেতে। কারণ সেখানে করোনা রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। এরপর কাকলি সাধু স্বামীকে নিয়ে চুঁচুড়া মল্লিক কাশেমহাটের অজন্তা সেবা সদন করোনা হাসপাতালে চলে যান। সেখানে এসেও সরকারিভাবে টেস্ট হওয়ার পর দেখা যায় শোভন করোনা পজেটিভ (Corona Positive)।
একাধারে পেটের রোগ তার উপর করোনা। দুটি রোগের চিকিৎসাই শুরু হয় অজন্তায়। এরপর হাসপাতালে পোশাক পরিবর্তনের সময়ই চোখ চড়কগাছ স্বাস্থ্য কর্মীদের। তাঁর হাতে রক্ত জমাটের পাশাপাশি একপায়ে দগদগে ঘা। শোভনকে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি জানান শুরুতে চন্দননগরের নিউ ইউনাইটেড নার্সিং হোম তাঁর হাত-পা বেঁধে চিকিৎসা শুরু করেছিল। বারংবার বললেও প্রথম কয়েকদিন তাঁকে বাঁধনমুক্ত করা হয়নি। শোভনের কথামতো তিনি পেটের যন্ত্রনায় ছটফট করছিলেন বলে নার্সিংহোমের এই বাঁধন-দাওয়া। সেই বাঁধনের ফলেই শোভনবাবুর হাতে রক্তজমাটের পাশাপাশি পায়ে দড়ি বসে গিয়ে দগদগে ঘা হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে তিনি এবিষয়ে সুবিচার চেয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন। অভিযোগ, জানানো হয়েছে চুঁচুড়া সদর মহকুমাশাসক ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে। এবিষয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, “আমি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে”। অন্যদিকে চন্দননগরের অভিযুক্ত নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে মুখ খুলতে চায়নি।
আরও পড়ুন- শুভেন্দু-সভাতে ফের বিশৃঙ্খলা, তৃণমূলের কটাক্ষ, বিজেপির ‘আদি-নব’-র বিরোধ