একুশের হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election) আগে যখন রাজ্যের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) ও বিজেপি (BJP) নিজেদের ঘর গুছিয়ে নিচ্ছে, প্রচারের ময়দানে ঝাঁজ বাড়াচ্ছে, ঠিক তখনই তৃতীয় শক্তি বাম-কংগ্রেসের মধ্যে “ছন্নছাড়া” ভাব। অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা না নিয়ে যখন বাম (Left Front) ও কংগ্রেসের (Congress) পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল বিধানসভা নির্বাচনে তারা তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়বে। সিপিএম (CPIM) পলিটব্যুরো এবং কংগ্রেসের হাই কমান্ডের পক্ষ থেকেও বাম-কংগ্রেস জোটে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সামপ্রতিক ঘটনাপ্রবাহ যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে ভোটের আগে জোটে “জট”!
ইতিমধ্যেই জোটের মুখ হিসেবে প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীর (Adhir Chowdhury) নাম কংগ্রেসের তরফ থেকে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারই মধ্যে আবার কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত মালদা (Malda), মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) মতো বেশ কয়েকটি জেলায় ৮০ শতাংশেরও বেশি আসন চাইছেন তারা। শুধু তাই নয়, দক্ষিণবঙ্গের পুরুলিয়ায় (Purulia) ১০০ শতাংশ আসন দাবি করে বসেছে কংগ্রেস। দুই দিনাজপুর, বীরভূম ও নদিয়াতেও সিংহভাগ আসন দাবি করেছে কংগ্রেস। আর আনুষ্ঠানিক জোট-ঘোষণার আগেই কংগ্রেসের এই চাপ বাড়ানোর কৌশলে বেশ অসন্তুষ্ট আলিমুদ্দিন।
এ প্রসঙ্গে বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তথা সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য
(Pradip Bhattacharjee) বলেন, ”মুর্শিদাবাদ ও মালদহে আমাদের শক্তি বেশি। ফলে এই দুই জেলায় বেশি আসন চাইতেই পারি। তবে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।”
অন্যদিকে কংগ্রেসের এমন দাবি প্রসঙ্গে বাম পরিষদীয় দলের নেতা তথা বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty) কিছুটা অসন্তুষ্ট হয়ে বলেন, ”এটা নিয়ে যৌথ আলোচনা চলছে। অত্যুৎসাহী হয়ে কেউ কেউ নানা ভাবনাচিন্তা করতে পারেন। তবে প্রকাশ্যে এসব বলাটা সমীচীন নয়।”
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে জোট কার্যত চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও তা ভেস্তে যায় আসন বন্টন ইস্যুতে। ওই নির্বাচনে ভরাডুবির হয় বাম-কংগ্রেস দুই পক্ষেরই। ফলে একুশের নির্বাচনের আগে ফের পাশাপাশি আসার চেষ্টা শুরু করে দু’পক্ষ। কিন্তু ভোটের দিন এগিয়ে আসতেই কংগ্রেস আসন বন্টন নিয়ে কার্যত “আবদার”শুরু করে। একইসঙ্গে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জোটের মুখ হিসেবে অধীর চৌধুরীকে তুলে ধরার প্রয়াস শুরু করেন প্রদেশ নেতারা। যা বামেদের পক্ষ থেকে একেবারেই ভালভাবে নেওয়া হচ্ছে না।
সব মিলিয়ে একুশের আগে জোটের আকাশে কালো মেঘ! জানা গিয়েছে, রফা সূত্র বের করতে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আলোচনার টেবিলে বসছে বাম ও কংগ্রেস। এখন দেখার সেই বৈঠকের পর জোটের ভবিষ্যৎ কী দাঁড়ায়!
































































































































