তৃণমূল (TMC) ছেড়ে সদ্য বিজেপিতে (BJP) যোগ দিলেও, তাঁর গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে যে দীর্ঘ সম্পর্ক তা ফের প্রকাশ্যে চলে এলো। এবার আর তৃণমূলের তরফে অভিযোগ নয়, শুভেন্দু-বিজেপি দীর্ঘ সম্পর্কের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করলেন বিজেপি সাংসদ। বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ তথা যুবমোর্চা সভাপতি সৌমিত্র খাঁ (Soumitra khan) নিজের মুখে সে কথা স্বীকার করলেন। শুভেন্দু অধিকারীর (Subhendu Adhikary) জন্যই নাকি লোকসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুর আসন থেকে বিজেপির টিকিটে জিতেছিলেন সৌমিত্র খাঁ (Soumitra Khan)। শুভেন্দুর খাসতালুক কাঁথিতে দাঁড়িয়ে সৌমিত্র ফাঁস করলেন এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা শুনে হতবাক বিজেপি কর্মী-সমর্থকরাও।
এমন কথা শুনে ঢোক গিলতে শুরু করেছেন শুভেন্দু অনুগামীদের বলে পরিচিতরাও! শুরু হয়ে গেছে ফিসফাস! প্রকাশ্যে কেউ মুখ না খুললেও, ঘনিষ্ঠ মহলে অনেকেই বলা-বলি শুরু করেছেন, “তাহলে তৃণমূলের অভিযোগই তো সত্য প্রমাণিত হচ্ছে। সত্যি-ই তো দলনেত্রী তথা দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা, বেইমানি করেছেন শুভেন্দু!”
ঠিক কী বলেছেন সৌমিত্র খাঁ?
সৌমিত্র বল(লেন, “শুভেন্দুদাকে গতবছর লোকসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুরে না যেতে বলেছিলাম। তৃণমূলের হয়ে প্রচার না করতে বলেছিলাম। দাদা যায়নি। দাদা কথা রেখেছিলেন। তাই আমি বিষ্ণুপুরে জিতেছি। বিজেপির সাংসদ হয়েছি।”
কিন্তু সৌমিত্রর এই সহজ-সরল স্বীকারোক্তি ও শুভেন্দুর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার তুলে দিল বেশ কিছু প্রশ্ন। যদি সৌমিত্র কথা ঠিক হিসাবে ধরে নেওয়া যায়, তাহলে প্রথমেই যে প্রশ্নটা উঠবে তা হলো, তৃণমূলের থাকাকালীন একজন বিজেপি প্রার্থীর কথায় তিনি কেন বিষ্ণুপুরে প্রচারে গেলেন না? সৌমিত্র খাঁ কিভাবে শুভেন্দু অধিকারীকে ফোন করে এমন কথা বলার সাহস পেয়েছিলেন? তাহলে কী শুভেন্দু ভিতরে ভিতরে চাইছিলেন বিজেপি ভালো ফলাফল করুক?
বিজেপি নেতাদের আবদার তৃণমূলে থাকতেই কি তিনি মেটাতেন? যদিও শুভেন্দু সৌমিত্রের বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি নিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া বা মন্তব্য দেননি!
আরও পড়ুন : অধিকারী পরিবারই সব! বক্তব্যে কী ইঙ্গিত দিলেন শুভেন্দু?
উল্লেখ্য, গত শনিবার মেদিনীপুর কলেজমাঠে দলবদলের মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন যে ২০১৪ সাল থেকেই তিনি অমিত শাহর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। এবার সৌমিত্র স্বীকারোক্তিতে স্পষ্ট, তৃণমূলের একজন সদস্য, জনপ্রতিনিধি হয়েও তিনি বিজেপির নেতাদের কথা শুনতেন, যোগাযোগ রাখতেন! এতে দলে থেকে দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা তত্ত্বকেই প্রমাণ করে।
আবার অন্যদিকে, সৌমিত্রর এই বক্তব্য যদি বেঠিক বা অসত্য হিসেবে ধরে নেওয়া হয়, তাহলে কেন এবং কী উদ্দেশ্যে সৌমিত্র এমন মন্তব্য করলেন, সেই বিষয়টি নিয়েও কিন্তু একাধিক প্রশ্ন উঠবে! শুভেন্দুকে বেকায়দায় ফেলতে এবং তৃণমূলের অভিযোগ সত্য প্রমাণ করতে পরিকল্পিতভাবে এমন মন্তব্য করেননি তো বিষ্ণুপুরের সাংসদ? শুভেন্দু প্রতিক্রিয়া না দেওয়া পর্যন্ত এমন অনেক প্রশ্ন কিন্তু ঘুরপাক খাবে রাজনৈতিক মহলে!