করোনার নতুন স্ট্রেন, স্থগিত ভারত-যুক্তরাজ্য বিমান পরিষেবা

0
2

করোনাভাইরাসের স্ট্রেনের (কোভিড -১৯) উদ্ভূত হওয়ার প্রেক্ষিতে ভারত যুক্তরাজ্য থেকে সাময়িকভাবে ফ্লাইট পরিষেবা স্থগিত করেছে। স্থগিতাদেশ ২২ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এটি কার্যকর থাকবে। যুক্তরাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে, ভারতী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে যুক্তরাজ্য থেকে ভারতে আগত সমস্ত ফ্লাইটগুলি ৩১ ডিসেম্বর রাত ১১:৫৯ অবধি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হবে। ২২ ডিসেম্বর রাত ১১:৫৯ থেকে এই স্থগিতাদেশ জারি হবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রক (Civil Aviation Ministry)।

আগেই নভেল করোনাভাইরাসের (Novel Coronavirus) নতুন স্ট্রেন মিলেছিল ব্রিটেনে। জানা গিয়েছিল নতুন স্ট্রেনটি (প্রজাতি) কোভিড-১৯ এর থেকে ৭০ গুন বেশি সংক্রমক। ব্রিটেনের চিফ মেডিক্যাল অফিসার ক্রিস উইটি জানিয়েছেন, করোনার নতুন এই স্ট্রেন সম্পর্কে WHO-কে জানানো হয়েছে। নতুন এই স্ট্রেন-এর সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে বড়দিনের আগেই কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন(Boris Jonson) দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন, এরকম এক পরিস্থিতিতে সবার উচিত বড়দিনের জমায়েত না করা।

ব্রিটেনের পর ইতালিতেও এক রোগীর দেহে মিলল করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেন। রবিবার ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, কয়েকদিন আগেই ব্রিটেন থেকে এক আক্রান্ত ও তাঁর সঙ্গী ইতালিতে ফেরেন। বিমানে প্রথমে তাঁরা রোমের ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে নামেন। আপাতত তাঁদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এই স্ট্রেন আগের তুলনায় দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নাজেহাল অবস্থা ব্রিটিশ প্রশাসনের। দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ড এবং লন্ডনে নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করেছে বরিস জনসনের সরকার। নতুন এই স্ট্রেনকে নিয়ে গোটা ইউরোপে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বিশেষজ্ঞ তথা চিকিৎসক শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক জানাচ্ছেন, “এই নতুন স্ট্রেনের ফলে রোগটা তাড়াতাড়ি ছড়াচ্ছে। এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি নতুন স্ট্রেনের ফলে মানুষ আক্রান্ত হয়ে তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বা মৃত্যু হচ্ছে। তবে রোগ খুব দ্রুত গতিতে ছড়ালে বেশি সংখ্যা রোগী আক্রান্ত হবেন, বেশি আক্রান্ত হওয়ার ফলে হাসপাতালগুলির ওপর চাপ বাড়বে। আর হাসপাতালগুলির ওপর চাপ বাড়লেই ভেন্টিলেটর-অক্সিজেন পাওয়ায় সমস্যা হতে পারে। এখন করণীয় যেভাবেই হোক এই মিউটেশনের ফলে বেশি ‘ছোঁয়াচে’ করোনাভাইরাসকে আটকে দিতে হবে।”

ইতিমধ্যেই ইউরোপের বহু দেশ ব্রিটেন থেকে আসা সমস্ত বিমানের ঢোকা নিষেধ করেছে। বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস ব্রিটেনের সমস্ত বিমান বাতিল করেছে। ব্রিটেন সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে বেলজিয়াম। নতুন করে যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে তাই আগাম সতর্কতা হিসেবে একই পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে জার্মানি। ইটালিতে করোনার নতুন স্ট্রেন ঢুকে পড়ায় তারাও ব্রিটেনের সমস্ত বিমান বাতিল করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সৌদি আরব রবিবারই সে দেশের সমস্ত আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। সৌদির পাশাপাশি কুয়েতও ব্রিটেনের যাত্রিবাহী বিমানের উপর আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

বিজ্ঞানীদের দাবি, করোনাভাইরাস যখন খুঁজে পাওয়া গেল তখনই দেখা গিয়েছে হাজারেরও বেশি বার মিউটেশনের ক্ষমতা রয়েছে এই ভাইরাসের।

আরও পড়ুন-করোনা ভ্যাকসিন জানুয়ারিতে, নিতে না চাইলে জোর করবে না সরকার