কার অনুদানে বাড়ি? অমিতের দাবিতে ঘোর বিপদের মুখে সনাতন সিংহ

0
3

শনিবার বঙ্গে আসার পর থেকে একের পর এক মনগড়া দাবি করে চলেছেন অমিত শাহ (Amit Shah)। এই যেমন বলে বসেছেন, গতকাল যাঁর বাড়িতে গতকাল মধ্যাহ্নভোজ (Lunch) সেরেছিলেন সেই সনাতন সিংহের বাড়ি নাকি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (Pradhanmantri Abas Yojna) তৈরি ! অমিতের এহেন ঘোষণা শুনে চক্ষু চড়কগাছ নবান্নের (Nabanna)। “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা”য় কোথায়? এই বাড়ি তো তৈরি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (West bengal Govt) “বাংলা আবাস যোজনা”র (Bangla Abas Yojna) টাকায়।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এহেন দাবি শুনে নড়েচড়ে বসে রাজ্য সরকার। দ্রুত খবর যায় জেলা প্রশাসনের কাছে। কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, এক লক্ষ তিরিশ হাজার টাকা বাজেটে বাংলা আবাস যোজনায় স্থানীয় কর্ণগড় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে একটি বাড়ি পেয়েছে সনাতন সিংহের পরিবার। সঙ্গে কেঁচো খুড়তে বেড়িয়ে পরে কেউটেও।

আরও পড়ুন : বালিজুড়িতে কৃষক পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ সারলেন অমিত শাহ

রাজ্য সফরে এসে শনিবার তাঁর বাড়িতেই মধ্যাহ্নভোজ সারেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Home Minister) অমিত শাহ। স্বভাবতই সাজো সাজো রব পড়ে গিয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর ব্লকের কর্ণগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের বালুজুড়ি গ্রামের বাড়িটিতে। বাড়িটিকে সুন্দর দেখানোর জন্য কোন কসুর করেনি বিজেপি (BJP)। ২-৩ দিনের মধ্যেই, সেই অর্ধসমাপ্ত বাড়িতে চুন বুলিয়ে দেওয়াল থেকে “বাংলা আবাস যোজনা”র নাম মুছে সেখানে “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা” লিখে দেওয়া হয়। অবশ্য তাদের এই কুকর্ম কেউ জানতেই পারত না, যদি না অমিত শাহ নিজের ভাষণে বলতেন, যে ওই বাড়ি “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা”য় তৈরি।

শুধু বাড়ি নয়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল (TMC) সভাপতি অজিত মাইতি জানিয়েছেন, সনাতনের বাড়িতে যে চালের ভাত অমিত শাহ খেয়ে এসেছেন, সেই চালও মুখ্যমন্ত্রী দেওয়া। যদিও তার কথা মানতে নারাজ বিজেপির জেলা সভাপতি সমিত দাস। তাঁর পাল্টা দাবি, “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা”কে জোর করে এ রাজ্যে “বাংলা আবাস যোজনা” বলে চালানো হচ্ছে। সনাতনের আবেদনের ভিত্তিতেই অঞ্চল অফিস থেকে বাড়ি মঞ্জুর হয়েছিল। যদিও, এক্ষেত্রে বিজেপি যাই দাবি করুক না কেন, আদালতে নথিই গ্রহণযোগ্য, মুখের দাবি নয়।

আরও পড়ুন : শেষ মুহূর্তে শাহি-মেনুতে রদবদল, দেখে নিন কী কী আছে মেনুতে

সূত্রের খবর, প্রশাসনিক স্তরে এই ঘটনা নিয়ে মামলা দায়ের করতে পারে তৃণমূল। তার কারণ, নিয়ম অনুযায়ী একই ব্যক্তি বা পরিবার একই কারণে দুটি সরকারি অনুদান পেতে পারেন না। এক্ষেত্রে যদি তা হয়ে থাকে, তাহলে তা কেন হয়েছে তার জবাব দিতে হবে সনাতনকে। আর তা যদি না হয়, তবে তাঁকে জানাতে হবে, তিনি বাড়ি তৈরীর জন্য তিনি কোন প্রকল্প থেকে টাকা পেয়েছেন। তাঁকে প্রশ্ন করা হবে, কেন অমিত শাহ এই ধরনের দাবি করলেন? এই কথা কি সনাতন নিজে তাঁকে জানিয়েছিলেন? যদি তাই হয়, তবে তিনি রাজ্য সরকারের নামে ভুল তথ্য কেনই বা দিলেন, তাও প্রশ্ন করা হবে সনাতনকে। অমিত শাহের এহেন ঘোষণার পর, তাই ঘোর বিপদের সম্মুখীন গরীব কৃষক সনাতন সিংহ। এখন যদি মামলা তিনি হেরে যান, তবে বিজেপি তাঁর পাশে দাঁড়াবে তো? উঠছে প্রশ্ন।