অধ্যাপনার চাকরি ছাড়লেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। চাকরির মেয়াদ বাকি ছিল আরও ২২ বছর। তার মাঝেই এই সিদ্ধান্ত। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। ই-মেলে একই চিঠি পাঠান রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী এবং উচ্চশিক্ষা দফতরে।
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্যে অসন্তুষ্ট-অপমানিত বৈশাখী শোভনকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানিয়ে আসার পরেও সমস্যা মেটেনি। শেষে কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন বুধবারই।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপিকা বৈশাখী মিল্লি আল আমিন কলেজে অধ্যাপনা করতেন। কলেজ পরিচালনায় তাঁকে হেনস্তা করার অভিযোগ তুলেছেন বারবার। সে দায়িত্ব ছাড়ার পরেও সমস্যা মেটেনি। গত জুন মাসে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদে ইস্তফা দেন বৈশাখী। যদিও তা গৃহীত হওয়া নিয়েও বিস্তর জলঘোলা হয়। সম্প্রতি মিল্লি আল আমিন কলেজে নানা দাবিতে ছাত্রীরা আন্দোলন শুরু করেন। সেখানে গিয়ে পুরমন্ত্রী ‘বৈশাখীকে উখাড় কে ফেক দো’ বলার পরেই শোভন এবং বৈশাখী দুজনে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে নালিশ করেন। পরের দিনই বৈশাখীকে মিল্লি আল আমিন থেকে রামমোহন কলেজে বদলি করা হয়। করোনা সতর্কতায় রাজ্যের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন বন্ধ। তার মাঝে এমন তড়িঘড়ি বদলি মেনে নিতে পারেননি বৈশাখী। অভিযোগ করেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশেই তাঁকে অন্য কলেজে পাঠানো হয়েছে।
বৈশাখীর ইস্তফাপত্র দীর্ঘ তিন পাতার। সেখানে লিখেছেন বাম জমানায় তিনি কীভাবে লড়াই করে কলেজ চালিয়েছেন।অভিযোগ কলেজের পরিচালন সমিতির বিরুদ্ধে। অনুযোগ শাসকদলের অধ্যাপক সংগঠনের পদ কেড়ে নেওয়া নিয়েও। এছাড়া কলেজের কাজে স্থানীয় রাজনীতিকদের লাগাতর অসম্মান তাকে ব্যথিত করেছে বলেও লিখেছেন। বদলির কারণ হিসাবে উচ্চশিক্ষা দফতর জনস্বার্থের কথা উল্লেখ করেছে। বৈশাখীর অভিযোগ তার বিরুদ্ধেও। শোভন-বান্ধবীর দাবি, জনস্বার্থে নয় রাজনৈতিক কারণেই তাঁকে বদলি করা হয়েছে। চিঠিতে লিখেছেন, শিক্ষামন্ত্রী চাইলে তাঁর চাকরি জীবনের বকেয়া টাকা নাও দিতে পারেন। কটাক্ষ করে শিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, ২২ বছর আগে অবসর নিতে বাধ্য করায় আপনাকে ধন্যবাদ!
শাসক দলের তরফে বলা হয়েছে, কলেজে সমস্যা হচ্ছিল বৈশাখীকে ঘিরে। ফলে তাঁকে কলকাতার মধ্যেই আর একটি কলেজে বদলি করা হয়েছে। বদলি চাকরির অন্যতম শর্তও। তবে কেউ চাকরি করবেন, না অকালে অবসর নেবেন, সেটা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।
আরও পড়ুন- পিছিয়ে গেল শুনানি, আপাতত বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়