‘ফুটবল ঈশ্বর’-এর জীবনী নিয়ে তৈরি চারটি ছবি, দেখে নেব তালিকা

0
4

অনেকের কাছে তিনি সর্বকালের সেরা ফুটবলার। এক অনন্য চিত্র, মাঠের ভিতরে যাঁর পায়ে ফুটবল জীবন্ত হয়ে ওঠে। তিনি ফুটবলের রাজপুত্র। কিন্তু মাঠের বাইরে তিনি বিতর্কিত। বুধবার সেই দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনার মৃত্যুর খবরে এক লহমায় থমকে গেল বিশ্ব।

একজন ফুটবল খেলোয়াড়ের থেকে অনেক বেশি কিছু ছিলেন মারাদোনা। ফুটবলের সর্বোচ্চ মঞ্চে তাঁকে দেখা গিয়েছে বিজয়ীর ট্রফি হাতে। একাই দায়িত্ব নিয়ে নেপলসকে ইতালির চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে তাঁর জীবনযাত্রা ঠিক ছিল না। পার্টি, ড্রাগস, বিতর্ক… সবকিছু মিলে মিশে তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দিয়েছিল।

কিন্তু এতকিছু পরেও, তিনি ছিলেন মানুষের মনে, প্রাণে। তাঁর অনুগত ভক্তরা তাঁর উদ্দেশ্যে একটি ম্যারাডোনিস্ট চার্চ প্রতিষ্ঠা করেছেন আর্জেন্টিনায়। এহেন এক মানুষের জীবন নিয়ে তৈরি হয়েছে চার চারটি সিনেমা। যেগুলি এমন একজন ফুটবলারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে, যাঁকে আপনি কখনও ভুলতে পারবেন না।

আরও পড়ুন : আশ্চর্য সমাপতন! ফিদেল কাস্ত্রোর মৃত্যুদিনেই প্রয়াত মারাদোনা

লাভিং মারাদোনা (২০০৫)

তালিকার প্রথম এবং একমাত্র ছবি যেখানে মারাদোনা নিজে অভিনয় করেছিলেন। বুইনস অ্যারেসের রাস্তা থেকে ক্রীড়া বিশ্বের শীর্ষে পৌঁছানো সেই মানুষটার গল্প। এই ছবি, মারাদোনা ভক্ত ও তাঁর মত বহু মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা। এই ছবি দেখে কাঁদেননি, এমন মানুষ খুব কমই আছেন।

মারাদোনাপলি (২০১৭)

অ্যালেসিও মারিয়া ফেদারিসির কাজ প্রায় একচেটিয়াভাবে নেপলস, ইতালির শহর এবং ইতালিয়ান ক্লাবের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যেখানে এই আর্জেন্টাইনকে স্বাগত জানানো হয়েছিল। খেলোয়াড়ের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয় ভক্তদের প্রশংসাপত্র। তথ্যচিত্রটি ম্যারাডোনার জীবনকে স্মরণ করে, যা তাকে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নদের মিডফিল্ডার করে তুলেছিল।

আরও পড়ুন : ‘আকাশের ওপরে আমরা দু’জন একদিন ফুটবলে শট নেব’, রাজপুত্র বিয়োগে শোকাতুর রাজা

দিয়েগো মারাদোনা (২০১৯)

এই ছবির সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় নেপলসে মারাদোনার জীবন। আসিফ কাপাডিয়া পরিচালিত এই ছবির প্রযোজক জেমস গে-রিস। কী ভাবে নেপলসে মারাদোনার জীবনপঞ্জির নানা ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে তা নিয়ে তিনি ফাঁস করেছেন চাঞ্চল্যকর তথ্য। পরিচালক জানিয়েছিলেন, ‘ মারাদোনা নিজেই এই ভিডিয়োগুলো তুলিয়ে ছিলেন। তিনি কোথায় কখন যাচ্ছেন, তা ভিডিয়োবন্দি রাখতেন নেপলসের দু’জন ক্যামেরাম্যান। এই কাজ মারাদোনা করিয়ে ছিলেন ভয়ে, তাঁর কিডন্যাপ হওয়া রুখতে।’ মারাদোনার নিজের সংগ্রহেই সেই সময়ের ফুটেজগুলো ছিল। কাপাডিয়া তাঁর তথ্যচিত্রে সেই সব ফুটেজ ব্যবহার করেছেন। সুতরাং মারাদোনাকে বুঝতে গেলে এই ছবিটি দেখতেই হবে। ছবির প্রিমিয়ার শো হয়েছিল গতবছর, কান ফেস্টিভ্যালে।

এই ছবি নিয়ে ভারী মজার একটি গল্প শুনিয়েছিলেন প্রযোজক জেমস। তথ্যচিত্রে যে সাক্ষাৎকারটি আছে, তা নিয়েছিলেন পরিচালক কাপাডিয়াই। সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় টিভিতে চলছিল ফুটবল। মারাদোনা সে দিন একটা শর্টস পরে ছিলেন। বাঁ পাটা সামনে সোজা করে রাখা। আসিফ নিজেকে আর সামলাতে পারেনি। উঠে গিয়ে মারাদোনার বাঁ পায়ে হাত বুলিয়েছিল। মারাদোনা তখন চমকে উঠে বলেন, কী করছ?’ জেমস জুড়ে দিয়েছেন, ‘আসিফ বলেছিল, ওর তখন মনে হয়েছিল, এই বাঁ-পাটাই ঈশ্বরের আশীর্বাদ ধন্য।’

আরও পড়ুন : প্রয়াত ফুটবলের রাজপুত্র, তাঁর বাঁ পায়ের জাদুতে মুগ্ধ ফুটবল বিশ্ব

মারাদোনা বাই কুস্তুরিকা (২০০৮)

এই ছবিটি এই চারটির মধ্যে সবচেয়ে ব্যক্তিগত কাজ। ছবির পরিচালক সংগীতশিল্পী আমির কুস্তুরিকা, যিনি আবার “গাতো প্রেতো, গাটো ব্র্যাঙ্কো”র লেখক। দিয়েগো মারাদোনার জীবনের রাজনৈতিক দিকটিও এখানে তুলে ধরা হয়েছে। কুস্তুরিকার এই ছবিতে আমরা প্রাক্তন ফুটবলারকে দেখতে পাই, হুগো শ্যাভেজের মতো মানুষের সঙ্গে কথা বলতে। আমরা এখনও দেখি আর্জেন্টাইন তারকার উদ্দেশে একটি গান উৎসর্গ করেছিলেন মানু চাও।