বিশ্ব উষ্ণায়নের ভয়াবহতা যে কত মারাত্মক হতে পারে তার আভাস ইতিমধ্যেই আকারে-ইঙ্গিতে পেয়ে গিয়েছে মনুষ্য জাতি। যদিও হুঁশ ফেরেনি আছও। এরই মাঝে এক চরম সতর্কবার্তা দিয়ে দিলেন বিজ্ঞানীরা। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যেভাবে উষ্ণায়নের জেরে মহাসাগরের জল ক্রমাগত গরম হয়ে উঠছে তাতে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বরফের চাঙর গলতে শুরু করবে। যার ফল মারাত্মক হয়ে উঠবে পৃথিবীবাসীর জন্য। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস (পিনাস)’-এ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এই সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী যে বরফের চাঙড়টি গলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা সেটি দক্ষিণ মেরুতে ‘ইস্ট অ্যান্টার্কটিক আইস শিট’ নামে পরিচিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যার উচ্চতা ৩ হাজার মিটার। আয়তন ২ কোটি ৭০ লক্ষ ঘন কিলোমিটার। কোন কারণে এটি যদি গলে যায় তবে পৃথিবীর সবকটি মহাসাগর ও সমুদ্রের জল স্তর ১৯০ ফুটের বেশি উঠে আসবে যার অর্থ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বহু শহর ও জনপদ। মহাদেশগুলির একটি বড় অংশ চলে যাবে সমুদ্রের নিচে। শুধু তাই নয় বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা চলতি শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত এই বরফের গলনের যেরে জলস্তর উঠে আসতে পারে কম করে ৩ থেকে ৪ ফুট। কিংবা ৭ থেকে ১০ ফুট। যার ফলে জলের তলায় তলিয়ে যেতে পারে ভারত, আমেরিকা, ইউরোপের একাধিক শহর।
আরও পড়ুন: একদিনে মৃত্যু ৫২৪, শীতকালে সতর্ক না হলে বিপদ বাড়বে, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
এ প্রেক্ষিতে বিজ্ঞানীদের দাবি, আজ থেকে ২ কোটি ৮০ লক্ষ বছর আগে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড সালফার ডাই-অক্সাইডের ভাগ যেমন ছিল বর্তমানে সেই অবস্থার দিকে হাটছি আমরা। তখন এই গ্যাস গুলির আধিক্য বেশি থাকার কারণ ছিল তখন পৃথিবীর আদি অবস্থা। অর্থাৎ পৃথিবীর ভূমন্ডল ছিল অত্যন্ত তপ্ত। তবে বর্তমানে শিল্প প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে মাটির নিচে থাকা অপরিশোধিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস বিপুল পরিমাণ ব্যবহারের ফলে বায়ুমন্ডলে অতীতের সেই পরিমান কার্বন ডাই অক্সাইড ও সালফার ডাই অক্সাইড বায়ুমন্ডলে জমিয়ে ফেলেছে আমরা। যার ফল হতে চলেছে অত্যন্ত ভয়াবহ। উষ্ণায়নের প্রভাবে গলতে শুরু করেছে আন্টার্টিকায় জমে থাকা সবচেয়ে বড় বরফের চাঙড়। যার জেরে এই বিপদের আশঙ্কা।
































































































































