ঢাকা মহানগর মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কর্মরত ৬৮ জন সদস্য ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়েছেন। মাদকাসক্ত এই ৬৮ পুলিশ সদস্যের মধ্যে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন ১৮ জন, বরখাস্তের চূড়ান্ত আদেশ জারি হয়েছে ১০ জনের বিরুদ্ধে। ডোপ টেস্টে পজিটিভের ঘটনায় ৪৩ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ২৫ জনের বিরুদ্ধে।
এর বাইরে মাদক বিক্রি, মাদক সেবন, মাদক দিয়ে ফাঁসানো এবং উদ্ধারকৃত মাদক তুলনায় কম দেখানোর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন ডিএমপির আরও ২৯ সদস্য। এদের মধ্যে ইতোমধ্যে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন ৬ জন, যাদের মধ্যে একজন চাকরিচ্যুত হয়েছেন। ডিএমপি সদর দফতর জানায়, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে মাদক সেবন ও এর কারবারে জড়িত পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ধারাবাহিক ডোপ টেস্টে সবশেষ ৬৮ জনের ফল পজিটিভ এসেছে।
চূড়ান্ত প্রক্রিয়ায় তাদের সবার বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।অভিযুক্ত ৬৮ জন পুলিশ সদস্যের মধ্যে এসআই ৭ জন, সার্জেন্ট ১ জন, এএসআই ৫ জন, নায়েক ৫ জন ও কনস্টেবল ৫০ জন।
সূত্র জানায়, ডিএমপির সদস্যদের মধ্যে মাদকাসক্ত হিসেবে সন্দেহভাজনদের তালিকা করে সিআইডির ল্যাবে তাদের রক্ত ও প্রশ্রাবের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। ধারাবাহিক এই পরীক্ষায় এখন পর্যন্ত ৬৮ জন পজিটিভ এসেছে।
ডিএমপি কমিশনারের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা (ইন্টেলিজেন্স এনালাইসিস ডিভিশন-এনআইডি) পুলিশের মাদক সেবন ও মাদক কারবারে সম্পৃক্ততার বিষয়ে তদন্ত করছে। ডিএমপির বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্বরতদের অনেকে মাদকাসক্ত হওয়ার পাশাপাশি মাদক কারকারিদের সঙ্গে সখ্য গড়ে আর্থিক সুবিধা নিয়ে থাকেন বলেও তদন্তে উঠে এসেছে। পর্যায়ক্রমে তাদেরও তালিকা করা হচ্ছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ওয়ালিদ হোসেন বলেন, ডোপ টেস্টে এখন পর্যন্ত মোট অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের সংখ্যা ৬৮ জন। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে ৪৩টি। বিভাগীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন ২৫ জনের বিরুদ্ধে। সাময়িক বরখাস্তের আদেশ জারি হয়েছে ১৮ জনের বিরুদ্ধে এবং বরখাস্তের চূড়ান্ত আদেশ জারি হয়েছে ১০ জনের বিরুদ্ধে।
তিনি আরো বলেন, মাদক সংক্রান্ত অন্যান্য অভিযোগ যেমন মাদক বিক্রিতে অভিযুক্ত ১০ জন, মাদক সেবনে অভিযুক্ত ৫ জন, মাদক দিয়ে ফাঁসানোর ঘটনায় অভিযুক্ত ১০ জন এবং উদ্ধারকৃত মাদক উদ্ধারের তুলনায় কম দেখিয়ে অর্থ নেওয়ায় অভিযুক্ত চারজন। মোট এই ২৯ জন অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের মধ্যে মোট ৬ জনকে সাজা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- বাংলাদেশের ট্রেনে লাগছে বায়ো-টয়লেট, বাঁচবে অর্থ-পরিবেশ