ভারতের মাটিতে প্রথমবার ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন(আইভিএফ) পদ্ধতিতে চিকিৎসায় সাফল্য দেখলেন চিকিৎসকরা। এক বছরের শিশুকন্যা ‘কাব্য’র অস্থি মজ্জায় প্রাণ বাঁচাল দাদার। আর এই যুগান্তকারী পদক্ষেপ ভারতীয় চিকিৎসায় খুলে দিল এক নতুন দ্বার। আক্ষরিক অর্থে দাদাকে বাঁচাতেই জন্ম হয়েছিল শিশুকন্যা কাব্যর। বর্তমানে দাদা ও বোন দুজনেই সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, অল্পা ও সহদেব সিং সোলাঙ্কির সন্তান অভিজিৎ জন্ম থেকেই থ্যালাসিমিয়া মেজর-এ আক্রান্ত। প্রতিমাসেই রক্ত দিতে হত শিশুটিকে। ৬ বছরের ওই শিশুর প্রাণ বাঁচাতে এখনও পর্যন্ত ৮০ বার রক্ত দিতে হয়েছে। তার রক্তের চাহিদা দিন দিন আরও বাড়ছিল। পরিস্থিতি বুঝে শিশুটির অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু পরিবারের কোনও সদস্যের অস্থিমজ্জার সঙ্গে শিশুটির অস্থিমজ্জায় মিল পাওয়া যায়নি। এরপর নানান জায়গায় ঘুরে আহমেদাবাদের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সন্ধান পায় ওই পরিবার। চিকিৎসক মনিশ বাঙ্কার দম্পতিকে পরামর্শ দেন অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের জন্য আইভিএফ পদ্ধতিতে একটি শিশুর জন্ম দিতে হবে তাদের। সহজ ভাষায় যা টেস্টটিউব বেবি।
এরপর আইভিএফ পদ্ধতিতে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় ওই দম্পতি। সন্তান ধারণের সময় চিকিৎসকরা খেয়াল রাখেন অভিজিতের এলএইচএ(হিউম্যান লিউকোসাই অ্যান্টিজেন)-র সঙ্গে যেন সামঞ্জস্য বজায় থাকে শিশুটির। গত বছর ১৭ মার্চ জন্ম হয় কাব্য নামের ওই শিশুর। কাব্যের জন্মের পর ১০ কিলোগ্রাম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলেন ডাক্তাররা। এরপর চলতি বছরের মার্চ মাসেই অভিজিতের দেহে কাব্যের অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা হয়। যদিও অভিজিতের সুস্থতা নিয়ে সন্ধিগ্ধ ছিলেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: ক্ষুধার্ত ভারত! বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে পাকিস্তান, বাংলাদেশেরও নীচে
এরপর সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিকিৎসক মনিশ বাঙ্কার জানান, ‘সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে অভিজিৎ ও কাব্য।’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, অস্থিমজ্জায় মিল রেখে এই প্রথম ভারতে আইভিএফ পদ্ধতিতে জন্ম গ্রহণ করল কোনও শিশু এবং নিজের থ্যালাসেমিয়া মেজর আক্রান্ত দাদাকে জীবন দান করল।’ পাশাপাশি চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ওই সন্তানদের পিতা সহদেব বলেন, ‘আমার দুই সন্তানই এখন সুস্থ রয়েছে এটা দেখে আমি অত্যন্ত খুশি।’



































































































































