তামিলনাড়ু পারলে আমরা কেন নয়? আমার শহরেও রয়েছে ‘বন্ধু’

0
2

ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতনের ঘটনায় প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। একের পর এক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকার। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার বার্তা দিয়ে রাজ্যগুলিকে পাঠানো হয়েছে নির্দেশিকা। নিজ নিজ পন্থা অবলম্বন করে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে রাজ্যগুলি। সেই লক্ষ্যেই এবার নারী সুরক্ষায় অভিনবত্ব দেখাল তামিলনাড়ু। সম্প্রতি মহিলাদের সুরক্ষায় তামিলনাড়ু পুলিশের তরফে প্রকাশ করা একটি অ্যাপের বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে। এখানে দেখানো হয়েছে প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে নির্জন রাস্তায় একাকী এক মহিলার সাহায্যার্থে কিভাবে এগিয়ে এসেছে পুলিশ।

তামিলনাড়ু পুলিশের তরফে প্রকাশ করা সাম্প্রতিক এই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, নির্জন রাস্তায় মাঝপথে খারাপ হয়ে যাওয়া একটি স্কুটি ঠেলতে ঠেলতে বাড়ির পথে চলেছেন এক যুবতী। ঠিক সেই সময় মোটরসাইকেলে করে আসা বেশ কয়েকজন যুবক পিছু নেয় তার। চলতে থাকে কুমন্তব্য। ঠিক তখন নিজের স্মার্টফোনে পুলিশের অ্যাপ থেকে একটি ‘বটন প্রেস’ করেন যুবতী। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ওই যুবতী লোকেশনে পৌঁছে যায় এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীরা। যুবতীকে নিজেদের গাড়িতে তুলে পৌঁছে দেওয়া হয় বাড়িতে। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত যুবকদের। দেশজুড়ে ধর্ষণ নারী নির্যাতনের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির মাঝে নিশ্চিত ভাবেই প্রশংসনীয় তামিলনাড়ু পুলিশের এই উদ্যোগ। প্রকাশ্যে আসা এই ভিডিও রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তামিলনাড়ু পুলিশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠেছেন নেটিজেনরা। দেশের প্রায় সমস্ত রাজ্যকে তামিলনাড়ু পুলিশের অভিনব পন্থা অনুসরণ করার বার্তা দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ডিওয়াইএফআইয়ের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার হাওড়ায়

তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য অভিনব এই পদক্ষেপ শুধু তামিলনাড়ুর নয়, অনেক আগে থেকেই এটি রয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। যদিও প্রচারের অভাবে রাজ্যের বেশিরভাগ মানুষেরই অগোচরে থেকে গিয়েছে কলকাতা পুলিশের ‘বন্ধু অ্যাপ’টি। আজ থেকে তিন বছর আগে ২০১৭ সালে কলকাতা পুলিশের তরফে প্রথম লঞ্চ করা হয়েছিল ‘বন্ধু অ্যাপ’। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় কার্যকরী ভূমিকা নিতে সক্ষম এই অ্যাপটি। ২০১৯ সালে অর্থাৎ গত বছর এই অ্যাপটিতে বেশকিছু অত্যাধুনিক ফিচার যোগ করে ফের প্রকাশ্যে আনে কলকাতা পুলিশ। অ্যাপটিতে যেকোনও রকম অভিযোগ দায়ের, এফআইআর করা সহ একাধিক ফিচার রয়েছে। তবে এই সমস্ত কিছুর মধ্যে অভিনব ফিচারটি হল ‘প্যানিক’ নামের একটি ‘বটন’। কোনও ব্যক্তি এখানে টাচ করলে অটোমেটিক ভাবে কল চলে যাবে ১০০ নম্বরে। সন্দেহজনক কিছু ঘটলেই ওই ব্যক্তির লোকেশন ধরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবে নিরাপত্তারক্ষীরা। ফলে বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিচার করে কলকাতা পুলিশের ‘বন্ধু অ্যাপ’ নিশ্চিতভাবেই কার্যকরী শহরবাসীর জন্য। এর পাশাপাশি এই অ্যাপটিতে রয়েছে শহরের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সাহায্যার্থে কলকাতা পুলিশের ‘প্রণাম’ নামের একটি অপশনও। যেখানে যেকোনও রকম সমস্যায় পড়লে বয়স্ক ব্যক্তিদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসবে শহরের পুলিশ বাহিনী।