বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে মামলার পর মামলা। কিন্তু রহস্যময় এক কারণে বারবার ছাড় মুকুল রায়কে। বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, এটা কিসের ইঙ্গিত?
রেলে গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সদস্যপদ পাইয়ে দেওয়ার নামে বিশাল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের মামলায় শুক্রবার চার্জশিট পেশ করা হলো আলিপুর আদালতে। আর বিস্ময়ের হলো এই তদন্তে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও এক অদৃশ্য কারণে চার্জশিট থেকে নাম বাদ গেল মুকুল রায়ের। শুক্রবার আলিপুর আদালতে আট পাতার চার্জশিট জমা পড়ে। চার্জশিটে নাম না থাকলেও সন্দেহের তালিকায় রয়েছে তাঁর নাম। বিষয়টি যত না পুলিশি তদন্ত, তার চাইতে এই চার্জশিটের ঘটনা রাজনীতির ময়দানে আলোচনার খোরাক হয়ে উঠেছে।
চার জনের নামে চার্জশিট। নাম রয়েছে, মুকুল ঘনিষ্ট বাবান ঘোষ, রাহুল সাউ, সাদ্দাম হোসেন,কমল হোসেন আনসারি (পলাতক)। কমলের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছিল। চারটি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত হয়েছে। সেখানে ভয়েস রেকর্ডিংও রয়েছে।
রেকর্ডিংগুলি টেস্টের জন্য চন্ডিগড়ে ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হবে। মুকুল রায়ের আওয়াজ আছে কিনা, সেটাই দেখার। এর আগে মামলার তদন্তে পুলিশের জেরার মুখোমুখি হয়েছিল মুকুলকে। C.S u/s 420/468/471/506/120B IPC ধারায় চার্জশিট জমা পড়েছে।
২০১৮ সালে বড়বাজারে রেলের এক আধিকারিকের কাছ থেকে ৮০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়। সাক্ষী হিসেবে ডেকে পাঠানো হয় মুকুল রায়কে। এরপর মুকুল রায় তদন্তকারী সংস্থাকে জানান আইও এটা করতে পারেন না। কারণ তিনি দিল্লির বাসিন্দা৷ ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার মুকুল রায়কে নোটিশ পাঠানো হয়। ২০১৯-এর ফ্রেব্রুয়ারি মাসে ব্যাঙ্কশাল আদালত তাঁর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে। তাকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেন মুকুল। তিনি জানান, ইতিমধ্যেই তার বয়স ৬৫ হয়ে গিয়েছে। তাই যেখানে তিনি ইচ্ছুক সেখানেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। সেই মামলায় তাঁকে ১০ দিনের রক্ষাকবচ দেয় আদালত। সেইসঙ্গে কলকাতায় মামলা করার অনুমতি দেওয়া হয়। হাইকোর্টে মামলা করেন মুকুল রায়। বিচারপতি রাজশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চ গ্রেফতারি পরোয়ানা খারিজ করে দেয়।
কিন্তু তদন্তকারীদের একাংশই গোটা ঘটনায় বিস্মিত। চার্জশিটে বাকি চারজনকে যে অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে, কার্যত প্রায় একই তথ্যপ্রমাণ রয়েছে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে। কিন্তু তাঁর নাম কেন চার্জশিটে এলো না, কেন সবুজ সঙ্কেত মিলল না? ঘটনা বিস্ময়কর। তবে মুকুল আপাতত স্বস্তি পেলেও বিপদ তাঁর কাটছে না। কারণ পরবর্তী চার্জশিটের পথ খোলা থাকছে। আবার আইনানুযায়ী ডিসচার্জ করতে গেলে আবার অভিযোগকারীর বয়ান শুনতে হবে। মুকুলের নাম এফআইআরে থাকায় আইনি জটিলতা শেষ হচ্ছে না।
আরও পড়ুন-‘গণতন্ত্রের গণধর্ষণ’, রাহুলকে সমর্থন করতে গিয়ে বিতর্কের মুখে সঞ্জয়