
ভয় পেয়েছে বিজেপি। ভয় পেয়েছে গেরুয়া পোশাকের ভেকধারী সন্ন্যাসী মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ যোগীর প্রশাসন। কাকে লুকোতে চাইছেন? কী লুকোতে চাইছেন? হাথরাস এখন গোটা দেশের প্রতিবাদের প্রতীক।
এক দলিত কিশোরীকে টানা তিনদিন ধরে গণধর্ষণ। তারপর হাত-পা ভেঙে দিয়ে ছুড়ে ফেলে দেওয়া। শেষে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে মৃত্যু। ময়না তদন্তের নামে প্রহসন করে বলা হল ধর্ষণই হয়নি। তারপর পরিবারকে অন্ধকারে রেখে রাতের অন্ধকারে কিশোরীর মৃতদেহ দাহ। শুরু প্রতিবাদ। দেশ জুড়ে।
শুধু হাথরাস নয়, বৃহস্পতিবার আর একটি নৃশংস ঘটনা ঘটেছে যোগীর রাজ্যে। রাতে শৌচকর্ম করতে গেলে তরুণীকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয়। এরপর তার মুণ্ডচ্ছেদ করে খুন করা হয়।
কেন হাথরাসের গণধর্ষণে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না রাজনৈতিক দলগুলিকে? গতকাল রাহুল-প্রিয়াঙ্কা দেখা করতে গেলে রাহুলকে মেরে মাটিতে ফেলে দেয় পুলিশ। আর আজ, গান্ধীজির জন্মদিনে দলিত নির্যাতিতার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে গেলে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রতিমা মণ্ডল, মমতাবালা ঠাকুরকে পুলিশ বাধা দেয়। গ্রামে ঢোকার আগেই পুলিশ মেরে মাটিতে ফেলে দেয় ডেরেককে। পুরুষ পুলিশকে মারতে দেখা যায় তৃণমূলের তিন মহিলা সাংসদকে। ধরণায় বসেন সকলে।
আরও পড়ুন-হাথরাসে ডেরেককে রাস্তায় ঠেলে ফেলল যোগী পুলিশ, ধাক্কা মহিলাদেরও
প্রশ্ন হলো কেন এই বাধা? কেন হাথরাসের গ্রাম জুড়ে ১৪৪ ধারা? কী লুকোতে চাইছে যোগী সরকার? মৃতের বাবাকে জেলাশাসক হুমকি দিচ্ছেন, সে ভিডিও এখন ভাইরাল। সন্ন্যাসীর পোশাকে ভেকধারী মুখ্যমন্ত্রী যোগী যে আসলে একজন মাফিয়ার মতো আচরণ করছেন, তা তাঁর জেলাশাসকই প্রমাণ দিচ্ছেন, বলছেন বিরোধীরা। যদি ডাল মে কুছ কালা নাই থাকে তাহলে রাজনৈতিক দলগুলিকে সেখানে যেতে বাধা কেন? আর এক নির্ভয়ার মৃত্যু স্বাভাবিক হলে এতো লুকোছাপার কী আছে? আলিগড় হাসপাতালের রিপোর্ট তো পরিষ্কার বলছে, ধর্ষিত হয়েছিল কিশোরী। তাহলে হাথরাসের এসপি কেন বলছেন ধর্ষণ হয়নি? মুসলিম মৌলবাদ যতখানি বিপদ, ঠিক ততখানি বিপদ হিন্দু মৌলবাদ। যার উদাহরণ যোগীর রাজ্য। গো-মাংস খাওয়ার অভিযোগে খুনের ঘটনা থেকে শুরু করে আজকে একের পর এক গণধর্ষণে মৃত্যু। এবং নির্বিকার যোগী প্রশাসন।
কেন তৃণমূল সাংসদদের বাধা? ওরা তো ৪ জন সাংসদ ছিলেন? ১৪৪ ধারা তো ভাঙেননি। তাহলে কোন ধারায় বাধা? কেন হাথরাসে এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা? ওই গ্রামে কী পরমাণু বোমা লুকোনো আছে? কেন ওই পরিবারের মুখোমুখি হতে দেওয়া হচ্ছে না? আসল কথা ফাঁস হয়ে যাবে বলে? পর্দে কে পিছে যা আছে তা বেরিয়ে পড়বে বলে? যোগী রাজ্যের আসল চিত্র সারা দেশ দেখে ফেলবে বলে? একের পর এক ঘটনা ঘটছে, তবুও একবিন্দু লজ্জার রেশ নেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশ প্রশাসনের। একই ঘটনা যদি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির মানুষগুলোর সঙ্গে ঘটতো তাহলে তো চোর মাচায়ে শোর হতো!
দ্বিধাহীনভাবে হাথরাসের ঘটনা বলতে বাধ্য করছে, স্বামীজির গেরুয়া পোশাকের মান-ইজ্জত ভূলুন্ঠিত করেছেন আদিত্যনাথ যোগী। খুলে নেওয়া হোক যোগীর গেরুয়া পোশাক। স্বামীজিকে অপমান করার অধিকার তাঁকে কে দিল??
আরও পড়ুন-নিজের মান রাখতে মুকুলকে সহ-পর্যবেক্ষক চাইছেন কৈলাশ, অভিজিৎ ঘোষের কলম



































































































































