কেন শিক্ষার এই হাল, প্রশ্ন করতে হবে : অমর্ত্য

0
4

কেন দেশের শিক্ষাব্যবস্থার হাল এই রকম? এই প্রশ্ন বারবার করতে হবে। প্রতীচী ট্রাস্টের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা চক্রে এই বার্তা দেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। একইসঙ্গে স্কুল শিক্ষা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নোবেলজয়ী। বক্তব্য তুলে ধরেছেন জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে একাধিক ঘাটতির কথা। তাঁর প্রশ্ন, প্রাচীন ভারতের শিক্ষা থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া মানে কি শুধুমাত্র প্রাচীন ভারতের একটি দিক তুলে ধরা? নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রসঙ্গে এই প্রশ্ন করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “শুধুমাত্র সনাতন শিক্ষার কথা মনে রেখে ভারতের সামগ্রিক ইতিহাস উপেক্ষা করা হবে, এ প্রবণতা ভুল।”

নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি প্রসঙ্গে নোবেলজয়ী বলেছেন, “পশ্চিমী দেশগুলির ধাঁচে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেই দেশগুলির থেকে শিক্ষা নিতে গেলে বাইবেলের গসপেল আঁকড়ে বসে থাকলে হবে না। গ্যালিলিওর মতো বিজ্ঞানীদের কথা তুলে ধরতে হবে।” আবার ভারতের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, এদেশে মুসলিম প্রভাব যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আবার ভারতের সব জায়গায় প্রাচীন হিন্দু প্রভাব ছিল না।” তিনি উল্লেখ করেছেন, ” প্রাচীন ভারতের সনাতন ধর্মের পাশাপাশি লোকায়ত বা চার্বাকের পরম্পরা ছিল। সুতরাং ভারতের আদর্শের প্রতি একনিষ্ঠ হওয়া মানে সেই আদর্শের একটি ধারার প্রতি একনিষ্ঠ থাকা না।”

এদিনের আলোচনায় প্রাথমিক এবং প্রাক প্রাথমিক স্তরকে গুরুত্ব দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা। বেসরকারি স্কুলের প্রতি দেশের ঝোঁক প্রসঙ্গও তুলে ধরেছেন নোবেলজয়ী। এই ঝোঁক নিয়ে আক্ষেপ শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। তিনি বলেছেন, “পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ ছাড়া বাকি সব দেশের মধ্যে ভারতের বেসরকারি স্কুলে পড়ানোর প্রবণতা অনেক বেশি।” তাঁর মতে, সরকারের উচিত এই বিষয়ে নজর দেওয়া। তাঁর কথায়, বেসরকারি স্কুলের উপর শিক্ষা নির্ভর করলে, আসলে পণ্য হয়ে ওঠে। নাগরিকদের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়।” সরকারি স্কুলের পরিকাঠামো উন্নত করার বিষয়ে সরকারের নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

আরও পড়ুন: পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের প্রায় ৪০০ পুরোহিত করোনা পজিটিভ