“আমার করোনা হলে মমতাকে জড়িয়ে ধরবো!” বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার বিতর্কিত মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় বইছে। একটা সময় অনুপম তৃণমূলের টিকিটে বোলপুর কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়ে প্রথমবারের জন্য সংসদে গিয়েছিলেন। পরে দলের মধ্যে আভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্য ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি দিদির চোখে দেখতেন, শ্রদ্ধা সম্মান করতেন, যাঁর আশীর্বাদেই অনুপমের রাজনীতিতে হাতেখড়ি ও প্রথমবার সাংসদ নির্বাচিত হওয়া, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে এমন মন্তব্যে হতবাক রাজনৈতিক মহল।
শুধু তাই নয়, অনুপম পেশায় একজন অধ্যাপক। উচ্চশিক্ষিত ছেলে। তাঁর মুখে এমন কথা শুনে মানুষ অবাক হচ্ছেন। প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে, তাহলে অনুপমের কি বিজেপিতে যোগ দিয়ে অধঃপতন হলো? নাকি কেন্দ্রীয় নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর মাটিতে পা পড়ছে না তাঁর? অনেকে আবার বলছেন, যে বিজেপি মহিলাদের সম্মানের কথা বলে, যে বিজেপি কৃষ্টি-সংস্কৃতির কথা বলে, সেই দলের জাতীয় সম্পাদক কিভাবে এমন কুরুচিকর মন্তব্য করতে পারেন একজন মহিলা সম্পর্কে? সর্বোপরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে, যিনি অনুপম হাজরারও মুখ্যমন্ত্রী!
উল্লেখ্য, আজ, রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে এক কর্মিসভায় যোগ দেন সদ্য নিযুক্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। সর্বভারতীয় পদে বড় দায়িত্ব পাওয়ার ঠিক পরের দিন রবিবার বারুইপুরের ওই কর্মিসভায় যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের অনুপম বলেন, তাঁর করোনা ধরা পড়লে আগেই তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জড়িয়ে ধরবেন।
এদিনের ওই কর্মিসভায় বিরাট সংখ্যায় বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা হাজির ছিলেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূর, বেশিরভাগের মুখে এদিন মাস্কই পর্যন্ত ছিল না। কেন তাঁর বা সভায় উপস্থিত লোকজন মাস্ক পরেননি? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন অনুপম। তিনি বলেন, “আমাদের কর্মীরা করোনার থেকেও বড় শত্রুর সঙ্গে লড়াই করছেন। তাঁরা লড়াই করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তাই আমরা আর করোনা ভয় পাই না। তবে আমার যদি কখনও করোনা হয়, আমি সবার আগে মমতা বন্দোপাধ্যায়কে জড়িয়ে ধরব।”
এর পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন অনুপম। তিনি বলেন, “অমানবিকভাবে করোনা রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের দেহ কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা বাড়ির মৃত বিড়াল বা কুকুরের সঙ্গেও এমনটা করি না।”
আরও পড়ুন- প্রশাসনিক সফরে সোমবার উত্তরবঙ্গ যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী



































































































































