ডেপুটি চেয়ারম্যানের চা ফেরালেন বিক্ষোভরত সাংসদরা

0
3

কৃষিবিল নিয়ে রাজ্যসভায় বিক্ষোভ দেখানোয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সাসপেন্ড হন ৮ সাংসদ৷ এর প্রতিবাদে ওই সাংসদরা সোমবার রাত কাটালেন সংসদ ভবনের লনে।

মঙ্গলবার ভোরে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান ধরনায় সামিল হওয়া সাংসদদের চা-পানের অনুরোধ জানান৷ কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই তা ফিরিয়ে দেন বিক্ষোভরত সাংসদরা। এই ‘চা-রাজনীতি’-কে কৃষক বিরোধী বলে কটাক্ষ করেন তাঁরা৷

বিতর্কিত কৃষি বিল নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে সরকার ও বিরোধীদের লড়াই। রবিবার দু’টি কৃষি বিল পাশের মুহূর্তে রাজ্যসভায় শৃঙ্খলাভঙ্গ করার অভিযোগ এনে সোমবার সাসপেন্ড করা হয় ৮ জন বিরোধী সাংসদকে৷ সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের মধ্যে আছেন তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন, দোলা সেন, কংগ্রেসের রাজীব সতভ, রিপুন ভোরা ও সৈয়দ নাসির হুসেন, সিপিএমের কে রাগেশ ও ইলামারাম করিম এবং আপ-এর সঞ্জয় সিং৷ চলতি বাদল অধিবেশনের শেষ পর্যন্ত বহাল থাকবে তাঁদের এই সাসপেনশন।

এই নির্দেশকে হাতিয়ার করেই কেন্দ্রকে নিশানা করেছে বিরোধী শিবির৷ সাসপেনশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে কক্ষ ছাড়তে অস্বীকার করেন ৮ সাংসদই৷ চেয়ারম্যানের নির্দেশ উপেক্ষা করে দীর্ঘক্ষণ তাঁরা সভাকক্ষেই বসে থাকেন৷ বিক্ষোভের জেরে অধিবেশন সারা দিনের মতো মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পর সংসদ চত্বরে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসেন ওই ৮ সাংসদ। বিক্ষোভরত সাংসদদের সমর্থন জানান বিরোধী দলের হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীরা৷ সপা সাংসদ জয়া বচ্চন, ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা, কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ, দিগ্বিজয় সিং, আহমেদ প্যাটেল ও মল্লিকার্জুন খাড়গে, আরজেডি নেতা মনোজ ঝা, এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলেরা একে একে বিক্ষোভে যোগ দেন৷ ছিলেন সিপিএমের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য অধীর চৌধুরিও৷

এদিকে, আন্দোলনরত সাংসদদের পাশে দাঁড়িয়ে সোমবার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে এক টুইটে বলেন, “কৃষকদের স্বার্থরক্ষার লড়াই করতে গিয়ে ৮ সাংসদের সাসপেন্ড হওয়ার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক এবং সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রতিফলন৷ গণতান্ত্রিক বিধি ও নীতিকে সম্মান করে না এরা৷ আমরা এই ফ্যাসিবাদী সরকারের সামনে মাথা নোয়াব না। সংসদে এবং রাস্তায় নেমে লড়াই চালিয়ে যাবো৷”

এর পরেই নবান্নে বসে কেন্দ্র বিরোধিতার সুর তীব্র করেন মমতা। তিনি বলেন, “হিটলারি কায়দায় দেশ চালাচ্ছে মোদি সরকার।” সূত্রের খবর, সোমবার বিকেলের দিকে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ডেরেক ও’ব্রায়েনকে ফোন করে সাসপেন্ডেড সাংসদের পাশে থাকার বার্তা দেন৷ প্রায় ১০ মিনিট ধরে তিনি সবাইকে উদ্বুদ্ধ করেন৷ আলাদাভাবে কথা বলেন ৩ কংগ্রেস সাংসদের সঙ্গেও৷ কৃষি বিলকে সামনে রেখে তৃণমূলনেত্রী যে ভূমিকা গ্রহণ করেছেন, তাতে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত পাচ্ছেন অনেকেই৷