নীতিহীন, নৈতিকতাহীন সংসদীয় আচরণ, তানাশাহি। রবিবার যেভাবে, যে ভঙ্গিতে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান ধ্বনি ভোটে কৃষি বিল পাশ করালেন, নিশ্চিতভাবেই এটি একটি ব্যতিক্রমী দিন হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। আর এই কারণেই তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস বা প্রায় সব বিরোধী দলই যদি বলে, সংসদীয় ইতিহাসের এটি একটি কালো দিন, তাহলে কী খুব একটা ভুল বলা হবে!
রাজ্যসভায় কৃষি বিল পেশ হয়েছিল আজ, রবিবার দুপুরে। তারপরেই উত্তপ্ত হয় রাজ্যসভা। বিরোধী বিক্ষোভে সভা মুলতবি হয়। ফের সভা শুরু করেই ডেপুটি চেয়ারম্যান ধ্বনি ভোটে বিল পাশ করান। যে বিল নিয়ে এত বিতর্ক, যে সভায় কেন্দ্রের সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই, সেই সভায় কোন যুক্তিতে ধ্বনি ভোটে বিল পাশ করা হল? ধ্বনি ভোট নেওয়ার প্রশ্নে সেই সময়ে চেয়ারে যিনি থাকবেন, তাঁর সিদ্ধান্তই শেষ কথা। কিন্তু রাজ্যসভায় গরিষ্ঠতা নেই জেনেও কেন ধ্বনি ভোট? যে বিজেপি সরকার নীতি-নৈতিকতার জ্ঞান আউড়ায় অহরহ, তারা পিছন দরজা দিয়ে বিল পাশ করাচ্ছে দেখতেও হাসি লাগে, অবাক লাগে। আসলে গোটা দেশকেই গুজরাত ভাবতে শুরু করেছে বিজেপি!
রাজ্যসভার সদস্য সংখ্যার চিত্রটা একবার দেখলে বিজেপিও বোধহয় লজ্জা পাবে। হিসাব বলছে, শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর রাজ্যসভায় ম্যাজিক ফিগার ছিল ১২২। রাজ্যসভায় বিজেপি সাংসদ ৮৬। অকালি দল এনডিএওতে থাকলেও ভোট দেবে না। মন্ত্রী পদত্যাগ করেছে কেন্দ্র থেকে। তাদের ৩জন সাংসদ ভোট না দিলেও শিবসেনা এনডিএ থেকে বেরিয়ে এসেও বিলে সমর্থন করবে জানায়। তাদের ৩ সাংসদ বিজেপির পক্ষে। বিলের বিরুদ্ধে টিআরএসের ৭ সাংসদ। সমর্থন দেওয়া নিয়ে কথা এগোয় এআইএডিএমকের ৯ সাংসদ, ওয়াইএসআর-এর ৬ সাংসদ ও বিজেডির ৯ সাংসদের সঙ্গে। ধরে নেওয়া গেল এই এই তিন দলের সমর্থন বিজেপি পেতো। তা সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে বিজেপি ম্যাজিক ফিগার থেকে (৮৬+৩+৯+৬+৯ =১১৩) থেকে ১২২-১১৩= ৯টি ভোটে পিছিয়ে। এই অবস্থায় কোন যুক্তি এবং সংসদের কোন ক্ষমতাবল প্রয়োগ করে ধ্বনি ভোটে পাশ হলো কৃষি বিল?
গণতন্ত্র বা সংসদীয় রীতিনীতি নিয়ে বিজেপি যাই বলুক যুক্তি সাজানো মুশকিল। সত্যিই তো গণতান্ত্রিক কাঠামোকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখানো হয়েছে রবিবার। এরপর কেউ যদি বলে মোদিজি গুজরাত বানাচ্ছেন দেশটাকে, সেটা কী খুব একটা ভুল বলা হবে?
































































































































