ভয়াবহ এবং মর্মান্তিক। মুক্তিপণের জন্য পাশের বাড়ির ১২ বছরের স্কুল ছাত্রকে অপহরণ করে খুন করল এক কলেজ পড়ুয়া। প্রায় ৪০ঘন্টা পুলিশের সঙ্গে চোর-পুলিশ খেলার পর জেরায় জেরবার হত্যাকারী ভেঙে পড়ল। আজ তাকে কোর্টে তোলা হবে।
জয়নগরের উত্তরপাড়া বিশালাক্ষীতলা এলাকা। এখানেই ব্যবসায়ী মলয় চক্রবর্তীর পাশের বাড়িতে থাকত আকবর শেখ। আকবরের বিরুদ্ধে বহু অপরাধের অভিযোগ রয়েছে এলাকায়। মলয়বাবুর ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া তুষারের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক আকবরের পুত্র মণিরুলের। বছর ২১-এর মণিরুল স্থানীয় বারাসত কলেজের ছাত্র। ভাল ছেলে বলেই পরিচিত। মণিরুল আর তুষার (ডাকনাম তাতাই) একসঙ্গে ঘোরাঘুরিও করত। ফলে কারওর কোনও সন্দেহ হয়নি। শুক্রবার লকডাউনের দিন বিকেলে খেলতে গিয়ে তাতাই নিখোঁজ হয়ে যায়। মলয়বাবু খোঁজাখুঁজি করেও ছেলেকে না পেয়ে সেদিন রাতেই জয়নগর থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ তল্লাশি শুরু করে।
শুরু হয় নাকা চেকিং। এর মধ্যে শনিবার ব্যবসায়ী মলয়বাবুর কাছে ফোন আসে ছেলের মুক্তিপণ চেয়ে। এরমধ্যে পাড়ায় কিংবা পুলিশের তল্লাশিতে মণিরুলকেও দেখা গিয়েছে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে স্বাভাবিক ব্যবহারের ‘ভান’ করতে থাকে। এবার মলয়বাবুর কাছে আসা মুক্তিপণের ফোন নম্বর ট্যাপ করতে শুরু করে পুলিশ। লোকেশন খুঁজে পায়। নজর রাখা হয় মণিরুলের উপর। সন্দেহ বাড়ে মণিরুলের বাবা-মা আর বোন বাড়ি ছেড়ে পালানোয়। শনিবার রাতে মণিরুলকে থানায় ডেকে জেরা করা হতেই সে ভেঙে পড়ে। জানায় খুনের কথা। আজই তাকে আদালতে তুলে হেফাজতে নেওয়া হবে।

পাঁচ লাখ টাকার মুক্তিপণের জন্যই কি মণিরুল এই কাজ করল? নাকি এর পিছনে পারিবারিক কোনও প্রতিহিংসা ছিল? নাকি গোটা পরিকল্পনার পিছনে মণিরুলের বাবা আকবর শেখের হাত রয়েছে? সেই কারণও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। জয়নগর-মজিলপুরের চেয়ারম্যান সুজিত সরখেল বলেন, ভাবতেই পারছি না এই ঘটনা। পড়ুয়াদের এ কোন ধরণের মানসিক বিকৃতি? পুলিশকে ধন্যবাদ ওরা দ্রুত অপরাধীকে খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু তুষারের প্রাণ তো বাঁচানো গেল না। মলয়বাবুর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি রইল আমার সমবেদনা। আগামিদিনে পাশে থাকব।
আরও পড়ুন-গোঘাটে বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ, উত্তপ্ত ত্রিবেণীতে অবরোধ

































































































































