রাতের শহরে শ্লীলতাহানির অভিযোগ, আক্রান্ত উদ্ধারকারী মহিলা

0
2

রাতের শহরে তরুণীর শ্লীলতাহানি রুখতে গিয়ে আক্রান্ত হন উদ্ধারকারী মহিলা। ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল পুলিশ। আনন্দপুরের ওই ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত যুবক গত এক বছর ধরে বিভিন্ন ভাবে তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। শনিবার রাতে ঘটনার আগে তরুণীর নম্বর এবং চ্যাট সব কিছু ডিলিট করে দেন ওই যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের গাড়ি ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা গিয়েছে।

ঘটনা শনিবার রাতের। মায়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যে আনন্দপুরে গিয়েছিলেন নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী দীপ শতপথী। ওই রাতে স্বামীর সঙ্গে কালিকাপুরে নিজেদের বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। কিন্তু রুবি মোড়ের কাছে গাড়ি পৌঁছতেই শুনতে পান, পিছনে একটি গাড়ি থেকে চিৎকার করছেন কেউ। মহিলার আওয়াজ পেয়েই গাড়ি আটকে তরুণীকে উদ্ধার করতে যান দম্পতি।

দীপ জানান, “প্রায় রাত ১২টা নাগাদ আমরা আনন্দপুর থেকে নিজের গাড়িতে বাড়ির দিকে রওনা দিই। ঠিক পিছনেই ছিল একটি হন্ডা সিটি গাড়ি। ওই গাড়ি থেকেই একজন বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছিলেন।” মহিলা কণ্ঠস্বর শুনে নীলাঞ্জনা দীপকে গাড়ি আটকাতে বলেন। দীপ জানিয়েছেন, “নিজের গাড়ি দিয়েই ওই গাড়িটা আটকাই। আমার স্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে হন্ডা সিটির দরজা খুলে ফেলে দেওয়া হয় তরুণীকে।”

ওই তরুণীকে তোলার সময় হন্ডা সিটির চালক গাড়িটা ব্যাক গিয়ারে দিয়ে পালিয়ে যান। দীপের অভিযোগ, “আমার স্ত্রীর পায়ের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে পালিয়ে যান। একটুর জন্য আমার স্ত্রী-র মাথা ওই গাড়ির চাকার তলায় পিষে যায়নি। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন আমার স্ত্রী। ” দীপের বর্ণনা অনুযায়ী, তরুণীর চোখে মুখে আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট। জামাকাপড় বিভিন্ন জায়গায় ছেঁড়া এবং মুখ চোখ ফোলা। মুখে হাতে নখের চিহ্ন দেখা গিয়েছে।

সেই সময় রুবি হাসপাতালে ফোন করেও অ্যাম্বুল্যান্স মেলেনি। ১০০ ডায়াল করার পর কসবা ট্রাফিক গার্ডের এক সার্জেন্ট ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁর উদ্যোগে ভর্তি করা হয় বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। জানা গিয়েছে ওই তরুণীর বাড়ি জলপাইগুড়িতে। কলকাতায় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে কর্মরত ওই তরুণী থাকেন নয়াবাদ এলাকায়। দিন কয়েক আগে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয়। তাঁর সঙ্গেই বেরিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, সুযোগ বুঝে ওই যুবক তাঁর শ্লীলতাহানি করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, তরুণীর বয়ানের ভিত্তিতে এফআইআর করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে আনন্দপুরের আর আর প্লটের অভ্যুদয় হাউজিং কমপ্লেক্সের সামনে। অমিতাভ বসু নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তাঁর সঙ্গেই শনিবার বেরিয়েছিলেন ওই তরুণী।

শনিবারের ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন উদ্ধারকারী মহিলা নীলাঞ্জনা। নীলাঞ্জনার স্বামী দীপ শতপথী বলেন, “নীলাঞ্জনার মাথায় আঘাত লেগেছে। ছ’টা সেলাই করতে হয়েছে। অন্যদিকে ডান পা হাঁটুর তলা থেকে পুরো ভেঙে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই কোভিড পরীক্ষা করা হয়েছে। আজ সোমবার তার অস্ত্রোপচার করা হবে।”

আরও পড়ুন- আলোর শহর চন্দননগরেই হতাশার অন্ধকার, শিল্পীর হাতে আঁশবটি-কর্ণিক