প্রাক্তন বামমন্ত্রী দেবেশ দাসের পর এবার ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে দল ভাঙ্গানোর চেষ্টার অভিযোগ আনলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের তরুণ বিধায়ক আলি ইমরান রামজ ভিক্টর৷
বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু দিনকয়েক আগে একই অভিযোগ এনেছিলেন এই প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে৷ সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও অভিযোগ করেছিলেন বাম নেতা- বিধায়কদের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছেন প্রশান্ত কিশোরের লোকজন৷
এ বার প্রকাশ্যে সেই একই অভিযোগ করেছেন, ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক নেতা আলি ইমরান রামজ। এই বিধায়কের দাবি, তৃণমূলের পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর নিজেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন এবং দলবদলের প্রস্তাব দিয়েছেন। পিকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তৃণমূল ক্ষমতায় এলে তাঁকে মন্ত্রী করা হবে৷
ইমরান জানিয়েছেন, প্রশান্ত কিশোরের এই প্রস্তাব তিনি ফিরিয়ে দিয়ে বলেছেন, “আমাদের পরিবার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে দেখে ফরওয়ার্ড ব্লক করছে৷ সুভাষচন্দ্র বসুই আমার নেতা ৷ অন্য কাউকে সেই জায়গায় বসাতে সম্ভব নয়৷”
চাকুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের তিনবারের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রামজ। তিনি ভিক্টর নামেই পরিচিত। বিধানসভায় দারুণ কথা বলেন৷ এলাকায় অসম্ভব জনপ্রিয় না হলে এই পরিস্থিতিতে পরপর তিনবার বিধায়ক হতে পারতেন না৷ ভিক্টর বলেছেন, “এই ধরনের দলবদলের প্রস্তাব দেওয়া শুরু হয় জুলাই মাস থেকে৷ পিকে’র কোম্পানি I-PAC- এর তরফে একাধিক নম্বর থেকে ফোন করা শুরু হয়৷ প্রস্তাব একটাই তৃণমূলে যোগ দিন”। ইমরান বলেছেন,”আমি ওদের বলি, প্রশান্ত কিশোর নিজে কেন ফোন করছেন না?” এর পর গত ১৭ জুলাই কলকাতায় একটি অভিজাত হোটেলে সস্ত্রীক ডিনারে গিয়েছিলেন ইমরান। ভিক্টরের দাবি, তখন স্বয়ং প্রশান্ত কিশোর তাঁকে ফোন করেন। আমি ওনাকে বলি যে স্ত্রীকে নিয়ে ডিনারে এসেছি এখন কথা বলতে পারব না। আর আপনি তো তৃণমূলকে পরামর্শ দেন, আমি বিরোধীদলের বিধায়ক। আমার সঙ্গে কেন কথা বলতে চাইছেন ? এর পরেই প্রশান্ত কিশোর বলেন, মাত্র কয়েক মিনিট সময় দিলেই হবে।” ইমরান সম্মতি জানান। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই নাকি সাদা পাঞ্জাবি- পাজামা পরে সেখানে পৌঁছে যান প্রশান্ত কিশোর। ভিক্টর দাবি করেছেন, প্রশান্ত কিশোর তাঁকে বলেন, আপনি যে কোনও ৩টি দফতরের নাম বলুন। তৃণমূলের টিকিটে জিতলে আপনাকে আগামী মন্ত্রিসভায় সেই ৩টি দফতরের মধ্যে যে কোনও একটি দফতরের মন্ত্রী করা হবে “।
আলি ইমরান রামজের বক্তব্য, “তৃণমূলের শাসনকালে ১০ বারের বেশি আমার কাছে দলবদল করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তৃণমূলের মন্ত্রী, পর্যবেক্ষক ও জেলা সভাপতিরা। ২০১৪ ও ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে টিকিট দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজি হইনি।” ফরওয়ার্ড ব্লকের এই বিধায়ক বলেছেন, “আমি প্রশান্ত কিশোরকে বলেছি, আমার বাবা ছিলেন রমজান আলি। দিনাজপুর জেলার বামপন্থী নেতা। কিছু পাওয়ার জন্য রাজনীতি করতেন না। দিনাজপুরে নিজে গিয়ে খোঁজ করে দেখুন এটা ঠিক কি’না। আমার কাকা হাফিজ আলম সৈরানি। তিনিও ফরওয়ার্ড ব্লকের দীর্ঘ দিনের নেতা। আমি কেন হঠাৎ ফরওয়ার্ড ব্লক ছাড়তে যাবো?” এর পরই ভিক্টরের স্পষ্ট কথা, “ফের বিরক্ত করলে অন্য কথা ভাবতে হবে”৷


































































































































