মুকুল রায়ের নাম কোথায়! দিল্লিতে চোখের চিকিৎসা ছিল, তাহলে কলকাতায়? অভিজিৎ ঘোষের কলম

0
1
অভিজিৎ ঘোষ

দিল্লির পর বিজেপির দ্বিতীয় দফার সাংগঠনিক বৈঠক কলকাতায়। মঙ্গলবার রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বাসভবনে শুরু হয়েছে এই বৈঠক। চলবে টানা সাতদিন ২৪ অগাস্ট অবধি।

প্রত্যেক দিনের বৈঠকে যে তালিকা ‘এখন বিশ্ববাংলা সংবাদ’-এর হাতে এসেছে, তা দেখে ও শুনে রাজনীতির যারা খবর রাখেন, তাঁদের ঈষৎ ভ্রূকুঞ্চিত হয়েছে। কারণ, প্রায় আড়াইটি জোনের বৈঠকে কোথাও মুকুল রায় নামে বিজেপির জাতীয় পরিষদের নেতাটির নাম নেই। মুকুল রায়ের নাম দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তালিকায় থাকলেও তাঁর কাজ মূলত পশ্চিমবঙ্গ ভিত্তিক। এবং তৃণমূলে থাকাকালীন রাজ্যের মধ্যেই মুকুল মূলত কাজ করতেন। কিন্তু বিজেপিতে আসার পরে একুশের ভোটের আগে দলের গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক বৈঠকের এক জায়গাতেও তাঁর নাম না থাকায় প্রশ্ন উঠছে এবং উঠতে বাধ্য। তার মানে অর্থ কী দাঁড়ায়? মুকুল রায়কে দলের অলঙ্কার মনে করছে বিজেপি। যা শরীরে না থাকলেও কিছু যায় আসে না!

এ নিয়ে দলের একাংশের বক্তব্য, এটা জেলা ভিত্তিক বৈঠক। এখানে জেলা প্রেসিডেন্ট, সাংসদ বা প্রার্থী হয়েছিলেন এমন ব্যক্তি, অভিজ্ঞ নেতা, জোন অবজার্ভার, জোন কনভেনর এবং জেলা কনভেনররা থাকছেন। সেখানে মুকুলদা আসেন কোথা থেকে! পাল্টা যুক্তি, ওই তালিকায় সিনিয়র লিডারের কলাম রয়েছে। তাতে সঞ্জয় সিংও আছেন। মুকুল রায় কী সিনিয়র লিডার নন? হতে পারে সবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় তাঁকে জুনিয়র হিসাবেই ‘ট্রিট’ করছে বিজেপি!

আর একটি মহল বলছে, খোদ রাজ্য সভাপতির নাম তো নেই সব জায়গায়। তাহলে? পাল্টা যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, রাজ্য সভাপতি তো বাই ডিফল্ট থাকবেন সব বৈঠকে। তিনিই তো সব বৈঠক ডেকেছেন। সুতরাং তাঁর সঙ্গে অন্যদের তুলনা টানা ঠিক নয়। যদিও তৃতীয় একটি মহল বলছে, দিল্লি থেকে চলে আসার পর বলা হয়েছিল চোখের চিকিৎসা। এবার বৈঠকের ডাইনে-বাঁয়ে না থাকায় কোন যুক্তি দেবেন মুকুল! মুকুল রায় ঘনিষ্ঠরা অবশ্য বলছেন, হুগলি, হাওড়ার বৈঠকে কিছুটা সময় ছিলেন তো মুকুল রায়। ফলে মুকুল থাকতেও পারেন, নাও পারেন। পুরোটাই তিনি ও রাজ্য সভাপতি পারস্পরিক আলোচনা করছেন প্রয়োজন মতো।

বিজেপি মহলে নতুন একটি ‘মিম’ ঘুরে বেড়াচ্ছে। ৪ সেপ্টেম্বর গণতন্ত্র বাঁচাও দিবসের ডাক দিয়েছেন রাজ্য সভাপতি। আর সেদিনই কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় মুকুল রায়কে নিয়ে সারাদিন ঘুরে বেড়ালেন কলকাতায়। কেউ কেউ দুষ্টুমি করে বলেছে, বিজেপি ব্যস্ত ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ অভিযানে, আর কৈলাশ ব্যস্ত ‘মুকুল বাঁচাও’ অভিযানে। আর কৈলাশের এই দৌত্যের ফল কী? বিজেপির অভ্যন্তরে মুকুল রায় নামে প্রাক্তন রেলমন্ত্রীকে দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হচ্ছে!