আমফানের তান্ডবের জেরে সুন্দরবন লাগোয়া প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জীবন জীবিকার স্বার্থে ভারত সেবাশ্রম সংঘ পদক্ষেপ নিয়েছে। লায়ন্স ক্লাবের তরফে ২৬ টি সংগঠন এই মহতী প্রয়াসে যুক্ত হয়েছে। আগামী তিন বছরের পরিকল্পনা অনুযায়ী, নারকেল গাছের চারা বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। মূলতঃ ফলের গাছ বসানো হবে। যাতে আয়ের ক্ষেত্রে নতুন করে বিকল্প পথ খুঁজে পায় দ্বীপ অঞ্চলের বাসিন্দারা। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এই অঞ্চলের ৪০ % ক্ষতি হয়েছে। আজকের অনুষ্ঠানে ১৫ হাজার গাছ লাগানোর কথা ঘোষণা করলেন উদ্যোক্তারা। উল্লেখ্য, প্রতিবছরই বর্ষায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বাঁধ ভেঙে নোনাজল গ্রামে ঢুকে যায়। প্রশাসনকে বারবার সেই বাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে চরম সংকটের মুখে পড়তে হয়েছে । এবার বাঁধ নির্মানে স্থায়ী সমাধানের পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য সরকার । রবিবার ভারত সেবাশ্রম সংঘ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও নগর উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় একথা জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এবার ওইসব এলাকার বাঁধগুলিকে কংক্রিটের করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই বাঁধের ওপরের রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে। আবার দীর্ঘদিন মজবুত থাকবে ওই বাঁধ। বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের সাথে ও এই নিয়ে আলোচনা চলছে। এলাকার বাসিন্দাদের ফি – বছর দুর্ভোগের শিকার হতে হবে না। ভারত সেবাশ্রম সংঘের উদ্যোগে লায়ন্স ক্লাব অব নর্থ কলকাতা ও রবীন্দ্র সরোবর ফ্রেন্ডস ফোরামের সহযোগিতায় উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলায় এক লক্ষ ফলের গাছ লাগানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির উদ্বোধন হয়েছে ।
আম, জাম, নিম, জামরুল, নারকেল প্রভৃতি গাছের চারা বসানো হবে। ইতিমধ্যেই সেখানে ঐ কাজ চলছে। আজ কলকাতার বালিগঞ্জে ভারত সেবাশ্রম সংঘের সভাগৃহে এই অনুষ্ঠানে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, পুরমাতা সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়, লায়ন্স ক্লাব অফ নর্থ কলকাতার সভাপতি এস এস রাজপুত, রবীন্দ্র সরোবর ফ্রেন্ডস ফোরাম এর প্রেসিডেন্ট পি এল শাহ, প্রকল্পের চেয়ারম্যান প্রদীপ মুরারকা ছাড়াও ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রধান সম্পাদক স্বামী বিশ্বাত্মানন্দ মহারাজ, কার্যকরী সভাপতি স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রধান সম্পাদক স্বামী বিশ্বাত্মানন্দ মহারাজ বলেন, আম্ফানের তান্ডবে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগণা জেলা সহ অন্যান্য জেলায়। প্রবল ঝড়ের দাপটে উপড়ে পড়েছে লক্ষাধিক গাছ।তাই দ্রুত পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে
ঝড়খালি, নামখানা, মৌসুনি দ্বীপ, ছোট মোল্লাখালি, বাসন্তী, কুমীরমারি সহ বিভিন্ন এলাকায় বৃক্ষরোপণের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। রবিবার সংঘের প্রধান কার্যালয় থেকে এই কর্মসূচির উদ্বোধন হয়। শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট এলাকায় বৃক্ষরোপণের কাজ শেষ হবে। গাছগুলি যাতে অকালে না নষ্ট হয়ে যায় সংঘের স্বেচ্ছাসেবকরা সে কারণেই গুরুদায়িত্ব পালন করবেন । এদিকে, সংঘের তরফে করোনা মহামারীতে সেবার কাজে যুক্তদের সম্মান জানানো হয়েছে। সংঘের সন্ন্যাসীদের সঙ্গে অকুতোভয় যে সমস্ত স্বেচ্ছাসেবক নিজের জীবন বিপন্ন করেও সেবা কার্যে যোগদান করেছিলেন তাদের মধ্যে ১০ জনকে ভারত সেবাশ্রম সংঘের তরফে শংসাপত্র প্রদান করা হয়েছে । এই অনুষ্ঠানের শুরুতে করোনা যোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও আমপানের তান্ডবে প্রয়াতদের স্মৃতিতে শোকজ্ঞাপন করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই সমগ্র অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়।কয়েক দিনের মধ্যেই ওই সব এলাকায় বৃক্ষরোপণ এর কাজ শেষ হবে। গাছগুলি যাতে নষ্ট হয়ে না যায় তাই সংঘের স্বেচ্ছাসেবকরা সেগুলি নজরদারির দায়িত্বে থাকবেন।
এবছর সংঘের পক্ষ থেকে যে বিরাট করোনা সেবাকার্য করা হয়েছিল তাতে সংঘের সন্ন্যাসীদের সঙ্গে যেসব স্বেচ্ছাসেবকরা অকুতোভয় হয়ে নিজের জীবন বিপন্ন করেও সেবাকার্যে যোগদান করেছিলেন তাদের দশজনকে সংশাপত্র প্রদান করা হয় সংঘের পক্ষ থেকে।
Sign in
Welcome! Log into your account
Forgot your password? Get help
Password recovery
Recover your password
A password will be e-mailed to you.