শতাধিক প্রাণ বাঁচিয়ে আইসোলেশনে, তৃপ্তির কাহিনী শোনাচ্ছে কেরলের গ্রাম

0
1

ঘড়িতে সন্ধে সাড়ে ৭টা। হঠাৎ বিকট শব্দে কার্যত কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। চুপ করে বসে থাকেনি স্থানীয়রা। শুক্রবার রাতে কোঝিকোড় বিমান দুর্ঘটনার পর বিমানবন্দর লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দারা নেমে পড়েছিলেন উদ্ধারকাজে। আর তারপরই উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া প্রত্যেককে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। যদিও তাতে আক্ষেপ নেই প্রসাদ, আফসানদের। বরং শতাধিক মানুষের প্রাণ বাঁচিয়ে তৃপ্তি অনুভব করছেন তাঁরা।

কেরলবাসীর এই কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বিভিন্ন মহলের মানুষ। সংক্রমণের ভয়কে উপেক্ষা করেই বৃষ্টিভেজা সন্ধেয় ছুটে যান তাঁরা। কেউ টিভিতে খবর শুনেছিলেন। কেউ আবার বিকট শব্দে ছুটে যান ওই অঞ্চলে। বিমানবন্দরের উদ্ধারকর্মী ও প্রশাসনিক কর্তাদের পাশাপাশি তাঁরাও হাত লাগান উদ্ধার কাজে। কারিপুর, কোনদোত্তি গ্রামের ঘরে ঘরে এখন হোম আইসোলেশন। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা ঘোষণা করেছেন, ওই দিন যাঁরাই উদ্ধারে হাত লাগিয়েছিলেন, সবাইকে ১৪ দিনের হোম কোয়রেন্টাইনে থাকতে হবে।

স্থানীয় উদ্ধারকারীদের মধ্যে অন্যতম কারিপুরের বাসিন্দা মহম্মদ আফসান। ঘটনার তিনদিন পরেও চোখে-মুখে বিস্ময়। তিনি বলেন, ” সেদিন প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। হঠাৎ একটা ভয়ঙ্কর শব্দ শুনতে পেলাম। তাকিয়ে দেখি সীমানার প্রাচীরের বাইরে রাস্তায় আছড়ে পড়েছে বিমানটি। সাহায্যের জন্য চিৎকার শুনতে পাচ্ছিলাম। জ্বালানির গন্ধ ভরে গিয়েছিল চারিদিকে।” স্থানীয় উদ্ধারকারীদের তালিকায় রয়েছেন কলেজ পড়ুয়া প্রসাদ। বলেন, ” কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড বৃষ্টি আর ধস নামছে। আওয়াজ শুনে প্রথমে ভেবেছিলাম ধস নেমেছে। বিমানবন্দরের রানওয়ে শেষে পাহাড়ের উপরে আমাদের বাড়ি। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে চলে যাই সেখানে। অন্যদের সঙ্গে উদ্ধার কাজে হাত মেলাই। কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তাতে আফসোস নেই। এত জনের প্রাণ বেঁচেছে এটাই আনন্দের।”