হাতে কাজ নেই, গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন কুমোরটুলির কারিগররা!

0
3

অন্যান্য বছর এই সময় থাকে চরম ব্যস্ততা। কুমোরটুলির সরু গলির আনাচে-কানাচে রীতিমতো জমে থাকে ভিড়। শিল্পীরা ব্যস্ত থাকেন প্রতিমা তৈরিতে। কিন্তু এবছর চিত্রটা একেবারেই অন্যরকম। সুনসান চারপাশ। ব্যস্ততাহীন কুমোরটুলি। বাড়তে থাকা সংক্রমণ আর পরপর লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন কারিগররা। রোজগার নেই, তাই কপালে চিন্তার ভাঁজ তাঁদের। অধিকাংশ কারিগরই ফিরে যাচ্ছেন তাঁদের গ্রামের বাড়িতে। দেশব্যাপী আনলক চললেও, কয়েকটি রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ বাড়ছে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে বাংলায়। তাই সংক্রমণ চেন ভাঙতে পুরসভাভিত্তিক ও সপ্তাহে দু’দিন লকডাউন বিধি লাগু করেছে নবান্ন। আগামি মাসেও সাতদিন কড়া লকডাউন। এই টানাপোড়েনে চরম ক্ষতির মুখে কুমোরটুলি ।

একে কমেছে পুজোর বাজেট সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমেছে বরাত। প্রতি বছর প্রায় ছোট-বড় মিলিয়ে তিন হাজার প্রতিমা বানান মৃৎশিল্পীরা । প্রায় দু’শো পরিবার নির্ভরশীল। চারদিন পুজোর জন্য মৃৎশিল্পী সংগঠনের মোট আয় ৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু এবছর বাজারে মন্দা। তাই মাথায় হাত মৃৎশিল্পীদের। হাতে কাজ না থাকায় গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন কারিগররা। যদিও পুজোর এখনও ৮৪ দিন বাকি। তাও অনিশ্চয়তা কুমোরপাড়ায়।


এদিকে, বড় পুজোকমিটি গুলোর দাবি, ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই। বাজেটে টান। সঙ্গে মাথায় রাখতে হবে কোভিড স্বাস্থ্যবিধি পালন করতেই হবে। তাই বড় জমায়েত এড়াতে ছোট করে পুজোর আয়োজন। জানা গিয়েছে, একচালা পুজোর দিকে ঝুঁকছে বেশিরভাগ পুজোকমিটি। তারা বলেছে, প্যান্ডেলে প্রতিবার ৫০ জন দর্শনার্থী, স্যানিটাইজিং ও থার্মাল গানের ব্যবস্থা থাকছে। যদিও সরকারি তরফে কোনও ঘোষণা হয়নি।


এদিকে, মৃৎশিল্পীরা বলেছেন, প্রতিবছর তাঁরা যে পরিমাণ প্রতিমা বানান তার অর্ধেকও এবছর বায়না নেই। এমন কী যে সমস্ত শিল্পীরা ২৫-৩০ টি করে প্রতিমা তৈরি করেন তাঁরা কেউ কেউ বানিয়েছেন মাত্র দুটি। এদিকে, অন্যান্য জেলা থেকে যে সমস্ত কারিগরেরা আসেন কুমোরটুলিতে তাঁরা অধিকাংশই ফিরে যাচ্ছেন গ্রামের বাড়িতে। অনেকেই বললেন, “কাজ নেই, তাই গ্রামের বাড়িতে ফিরে যেতে হচ্ছে। সংসার চালানোর জন্য অন্য কাজের ব্যবস্থা করতে হবে।”