স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ বৈঠকে কার্যত পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে এলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। একদিকে তিনি যেমন আমফান ত্রাণ দুর্নীতি, আইন-শৃঙ্খলা, পুলিশের একপেশে ভূমিকা নিয়ে নিজের বক্তব্য স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, তেমনি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার রাজনীতিকরণের অভিযোগ তুলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, উপাচার্যরা এই রাজনীতির অংশ হয়ে পড়ছেন, যা খুবই দুঃখজনক। রাজ্যপালের এহেন মন্তব্যে ইতিমধ্যে গুঞ্জন শাসক মহলে।
কী বললেন অমিত শাহকে ধনকড়?
১. বিগত এক বছর ধরে আমি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল রয়েছি। এই সময়ে রাজ্যে যে শাসন ব্যবস্থা চলছে তা রীতিমত ভয় এবং আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং প্রতিটা ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে রাজ্য সরকার যথাযথ পদক্ষেপ করছে না।
২. সরকারের সঙ্গে দূরত্ব কমানোর আপ্রাণ চেষ্টা করা করা হয়েছে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েও মোটেই তা বাস্তবায়িত করা যায়নি
৩. রাজ্যে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি রীতিমতো আশঙ্কাজনক। কিন্তু চিকিৎসা ব্যবস্থা অপ্রতুল ও যথাযথ নয়। যার জন্য সাধারণ মানুষ এক দারুণ ভয়ের পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন
৪. আমফান ত্রাণে দুর্নীতি আর স্বজনপোষণে মানুষ বিরক্ত। ত্রাণের টাকা ও জিনিসপত্র হতভাগ্যদের হাতে যাওয়ার বদলে তা চলে গিয়েছে শাসকদলের কর্মীদের কাছে। রাজ্যজুড়ে একটা অরাজক এবং নতুন করে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এলাকায় এলাকায় বিক্ষোভ, ভাঙচুর হচ্ছে। রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করেনি। যে ব্যবস্থা নিয়েছে আসলে তা লোক দেখানো।
৫. রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রীতিমত সঙ্কটজনক। শাসক দল টার্গেট করছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে। পুলিশের ভূমিকাও নিন্দাজনক। তারা সরকারি দলের পাশে দাঁড়াচ্ছে। এখনই পুলিশের পদস্থ কর্তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা উচিত, যা আগামী দিনে উদাহরণ হয়ে থাকবে
৬. রাজ্যের উচ্চশিক্ষা নিয়েও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন রাজ্যপাল। তাঁর বক্তব্য উচ্চশিক্ষার রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। উপাচার্যদেরও এই রাজনীতির অংশ করা হচ্ছে।
পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরের বক্তব্য, রাজ্যপাল যে বিজেপির হয়ে কাজ করছেন এটা অনেক আগেই বলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এ দিনের ঘটনা সেই অভিযোগকেই প্রতিষ্ঠিত করল।