ভয়ঙ্কর বিকৃতমনস্ক। হিংস্র পশুর মতো আচারণ।
কামারুজ্জামান। ধারাবাহিক ধর্ষক এবং খুনি।
পরের পর মহিলার সঙ্গে নির্মম আচরণ। ধর্ষণ এবং খুন। কখনও আগে খুন, তারপর সঙ্গম।
এলাকা টার্গেট করে ঘুরত সে। রেইকি করত। কে একা থাকে, কখন ফাঁকা থাকে।
তারপর আক্রমণ।
পরণে শার্ট প্যান্ট। হেলমেট। বাহন টুহুইলার। ব্যাগে সাইকেলের চেন, রড।
দরজা খুললেই আক্রমণ।
কখনও সামনে থেকে, কখনও পিছন থেকে।
খুন, ধর্ষণের পর টাকা, গয়না নিয়ে উধাও।
সাত আটটি ঘটনা ঘটে গেলেও একে ধরা যাচ্ছিল না।
শেষ পর্যন্ত এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের বুদ্ধিতে ধরা পড়ে এই ভয়ানক অপরাধী।
এরপর প্রশাসনের বড় কাজ ছিল তাকে আইনের পথে শাস্তি দেওয়ানো।
কালনা আদালতে এই মামলায় সরকারের বিশেষ আইনজীবী নিযুক্ত হন সৌম্যজিৎ রাহা।
তিনি বিধাননগরের বাসিন্দা। কোমর বেঁধে নামেন।
মামলার কাগজ দেখেন। এমনকি সর্বশেষ খুনের ঘটনার ঘটনাস্থল ঘুরেও দেখেন।
শুরু হয় মামলা।
শুনানিপর্ব শেষ হয় লকডাউনের ঠিক মুখে।
সৌম্যজিতের টার্গেট ছিল অপরাধীকে ফাঁসিতে ঝোলানো।
একেবারে শেষদিন সওয়াল শেষ করে এই সংক্রান্ত বহু মামলার রায় বিচারকের হাতে তুলে দেন সৌম্যজিৎ।
শেষমেষ চারদিন আগে কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ হয়েছে।
এতে সরকারি আইনজীবী সন্তুষ্ট হলেও তাঁর কাজ থেমে নেই।
ধরে নেওয়া যেতে পারে আসামীর তরফে ফাঁসির রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে।
তার মোকাবিলার সব ব্যবস্থা রাখছেন সৌম্য। সেই সঙ্গে এর অন্য অপকীর্তিগুলিকে যোগ করে আলাদা আলাদা মামলায় আরও ফাঁসি বা যাবজ্জীবনের রায়ের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন। এদের মধ্যে এক মহিলা প্রাণে বেঁচে আছেন। ফলে তিনি সরাসরি আসামীকে সনাক্ত করতে পারবেন। সৌম্যজিতের এখন টার্গেট এই কামারুজ্জামানকে বাকি মামলাগুলিতেও আলাদাভাবে ফাঁসি বা যাবজ্জীবনে নিয়ে যাওয়া, যাতে হয় ফাঁসিতেই ঝুলতে হয় অথবা সারা জীবন আর জেল থেকে বেরোতে পা পারে। সৌম্যজিৎ বলেন,” এই ধরণের নরপশুর সমাজে থাকার অধিকার নেই। এর মৃত্যুদণ্ডই কাম্য। ফাঁসির নির্দেশ করিয়েছি। তার পরেও কী করা যায়, দেখছি।”