চিনের দালাল ওলির অপসারণ নিয়ে বৈঠক ফের পিছলো

0
3

চিনের দালাল ও চরম ভারতবিরোধী নেপালি প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির ইস্তফা ইস্যুতে বৈঠক ফের পিছলো। চিনের প্রত্যক্ষ মদতে সময় কেনার মরিয়া চেষ্টায় শাসক দলের বৈঠক বারবার পিছনো হচ্ছে বলে খবর। নেপালের শাসক দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক এই নিয়ে চতুর্থবার পিছলো। সর্বশেষ তা হওয়ার কথা শুক্রবার। বৈঠক বারবার স্থগিত হওয়ার কারণ নিয়ে মুখে কুলুপ প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা সূর্য থাপার। তবে সূত্রের খবর, কাঠমান্ডুর চিনা রাষ্ট্রদূতের হস্তক্ষেপেই নাকি গ্রহণযোগ্য ফর্মূলা বার করার স্বার্থে বৈঠক পিছনো হচ্ছে। নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি এখন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির কো- চেয়ারম্যান। দলের অপর কো- চেয়ারম্যান হলেন কট্টর ওলি-বিরোধী এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল ওরফে প্রচণ্ড। অন্য দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাধবকুমার নেপাল ও ঝালানাথ খানাল দলীয় রাজনীতির বিন্যাস অনুযায়ী প্রচণ্ড শিবিরে। এক দল এক পদ নীতি মেনে একটি দায়িত্ব অবিলম্বে ছাড়ুন ওলি, চাইছেন স্ট্যান্ডিং কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য। কিন্তু ক্ষমতালোভী ওলি কোনও পদই ছাড়তে নারাজ। ফলে শাসক দলে ওলিকে নিয়ে জটিলতা অব্যাহত।

এদিকে এই পরিস্থিতিতে কাঠমান্ডুর চিনা দূতাবাসই কার্যত নেপালের রাজনৈতিক ক্ষমতার নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছে। গত কয়েকদিন ধরে চিনা রাষ্ট্রদূত হোউ ইয়াংকি যেভাবে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলিকে ক্ষমতায় রাখার জন্য নজিরবিহীন তৎপরতা চালাচ্ছেন তাতে নেপালের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চিনের সরাসরি হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়ে আর কোনও সংশয়ই নেই। বেজিংয়ের শি জিনপিং প্রশাসন চরম ভারতবিরোধী নেপালি প্রধানমন্ত্রী ওলিকে নিজেদের স্বার্থে ক্ষমতায় রেখে দিতে মরিয়া। তাই চিনা রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে তারা নেপালের রাজনীতিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে। লাগাতার ভারতবিরোধী জিগির তুলে নিজের দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টিতেই একঘরে হয়েছেন ওলি। শাসক দলের তিন গুরুত্বপূর্ণ নেতা তথা তিন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল ওরফে প্রচণ্ড, মাধবকুমার নেপাল ও ঝালানাথ খানাল ওলির ইস্তফা দাবি করেছেন। একইভাবে নেপালের প্রধান দুই বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেস ও জনতা সমাজবাদী পার্টির নেতারা ভারতের নাম না করে বলেছেন, ওলি সরকারের ভুল নীতির জন্যই প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে নেপালের। আস্থা ভোট এড়াতে ওলি যেভাবে পার্লামেন্টের বাজেট অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেছেন তাতে ক্ষুব্ধ শাসক ও বিরোধী নেতারা। এই অবস্থায় চিনা দালাল ওলিকে বাঁচাতে নির্লজ্জভাবে কূটনীতির কোড অফ কন্ডাক্ট লঙ্ঘন করে চলেছেন ওলি ঘনিষ্ঠ চিনা রাষ্ট্রদূত হোউ ইয়াংকি। সূত্রের খবর, নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটির ৪৫ সদস্যের মধ্যে ৩০ জনই ওলির অপসারণ চান। অথচ চিনা রাষ্ট্রদূতের প্রত্যক্ষ তৎপরতায় স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক বারবার পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। চিনা রাষ্ট্রদূত নিজে আলাদা আলাদাভাবে বৈঠক করেছেন শাসক ও বিরোধী দলের সব গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে। ওলি ঘনিষ্ঠ রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারীর সঙ্গেও কূটনীতির নিয়ম লঙ্ঘন করে কথা বলেছেন। তাঁর এই প্রচণ্ড সক্রিয়তার লক্ষ্য একটাই। ওলিকেই নেপালের প্রধানমন্ত্রী রেখে দেওয়া। শেষ পর্যন্ত চিন ২০১৬ সালের মত এবারও ওলির ত্রাতা হয়ে উঠতে পারে কিনা সেটাই দেখার।